দিল্লির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
-
গণশক্তির প্রতিবেদন
- May 14, 2022 13:18 [IST]
- Last Update: May 14, 2022 13:18 [IST]
পশ্চিম দিল্লিতে মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি বাণিজ্যিক ভবনে শুক্রবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার ঘটনায় এখনো ২৪ জন মহিলা ও ৫ জন পুরুষ নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার সকালে পুড়ে যাওয়া বহুতলের দোতলা থেকে কয়েকটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আগুন লাগার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লি ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অতুল গর্গ। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ২৭ মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সমীর শর্মা বলেন, "উদ্ধার অভিযান চলছে। উদ্ধার করা অধিকাংশ মৃতদেহ এতটাই পুড়ে গিয়েছে যে কারণে দেহগুলি এখন প্রর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। ফরেন্সিক দল ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করবে। গুরুতর আহতদের সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অনেকে নিখোঁজ সেই খবর পাওয়া গেছে।
পশ্চিম দিল্লিতে মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি বাণিজ্যিক ভবনে শুক্রবার বিকাল ৪টা ৪০ মিনিট নাগাদ আগুন লাগে। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারতলা বাড়িটিতে। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে পর থেকে ঝাঁপ দেন। তাঁরাও আহত হয়েছেন। আগুন ও ধোঁয়ার জেরে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত একটি তলায় পৌঁছাতে পারেননি দমকল কর্মীরা। গোটা বাড়িটি নিমেষে চলে যায় ভয়াল আগুনের গ্রাসে। ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ঢেকে যায় আশপাশ। খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ২০টি ইঞ্জিন সহ দমকলের বিশাল বাহিনী। পুলিশের বিশাল বাহিনীও গোটা অঞ্চলটিকে ঘিরে ফেলে। চলে আসে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স। হতাহতদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়। আগুন আয়ত্তে আনতে দমকল কর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা চালায়।
দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সমীর শর্মা জানিয়েছেন, ‘এখনও আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দোতলায় একটি সিসিটিভি এবং ওয়াইফাই’র রাউটার তৈরির কারকাখান ছিল। সেখান থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে অন্যত্র। কারখানার মালিক হরিশ গোয়েল এবং বরুণ গোয়েলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বহুতলের মালিক মণীশ লাকরা পলাতক, তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে। এই ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বাড়িটির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।’
ভস্মীভূত বহুতলটির দমকল বিভাগের ছাড়পত্র ছিল না বলে জানিয়েছে দমকল বিভাগ। বাড়িটিতে এতগুলি অফিস থাকলেও কোনও দাহ্য পদার্থ মজুত করা হয়েছিল কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়াও বহুতল ভবনটিতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না কেন তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পুলিশ জানিয়েছে, আহত ১২ জনের মধ্যে ১১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বহুতল থেকে অন্তত ৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো প্রায় ২৯ জন নিখোঁজ বলে জানা গেছে। উদ্ধার অভিযান আগামী ৩ থেকে ৪ ঘন্টার মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান অগ্নিকাণ্ডের সময় দোতলায় একটি অনুষ্ঠান চলছিল। সেই কারণে সেখানে বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তাই বেশিরভাগ মৃত্যু দোতলায় ঘটেছে। দমকলের আধিকারিকদের মতে, বিকেল ৪ টে ৪০ মিনিট নাগাদ আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। তারপর সেখানে ২৪ টি ফায়ার ইঞ্জিন পৌঁছায়। বহুতলে একটি মাত্র সিঁড়ি থাকায় লোকজন বহুতল থেকে পালাতে পারেনি।
আগুন লাগার ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। অগ্নিকাণ্ডে নিহত পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানিয়ে নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন দিল্লি সরকার এই ঘটনার উচ্চপর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। অপরাধীরা পার পাবে না। তিনি নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।