তাজমহল নিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ধাক্কা খেল হাইকোর্টে, খারিজ পিটিশন
-
-
- May 13, 2022 00:19 [IST]
- Last Update: May 13, 2022 03:00 [IST]
এলাহাবাদ হাইকোর্টে ধাক্কা খেল ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে তাজমহল সংক্রান্ত পিটিশন। ওই সৌধের ‘প্রকৃত’ ইতিহাস খুঁজে বের করার ছকে তথ্যানুসন্ধানী কমিটি গঠনের আরজি জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতা রাজনীশ সিং। একই সঙ্গে ওই স্মৃতি সৌধের ২২টি বন্ধ ঘর খুলে দেওয়ার আরজিও জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায় এবং সুভাষ বিদ্যার্থীকে নিয়ে গঠিত ডিভিসন বেঞ্চ ওই আরজিকে অযৌক্তিক অ্যাখ্যা দিয়ে শুধু খারিজই করে দেয়নি উলটে বিষয়টি ইতিহাসবিদ্দের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে কড়া মন্তব্যও করেছেন।
ভিন্ন ধর্মের সৌধকে নানা ছকে ভেঙে ফেলার লক্ষ্যে একের পর এক জিগির তুলে যাচ্ছে সঙ্ঘ পরিবার। কাশী, মথুরা, ভোজশালার পাশাপাশি এখন আবার তাজমহলের ‘প্রকৃত’ ইতিহাস অন্বেষণের চক্রান্ত করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যেই পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্টে। একটি তথ্যানুসন্ধানী দল গঠন করে তাজমহলের ‘আসল’ ইতিহাস কী, জানার আরজি জানিয়ে পিটিশন দাখিল করা হয়। কিন্তু আদালতে তাঁদের যুক্তি ধোপে টিকলো না। ডিভিসন বেঞ্চ পরিষ্কার এদিন বলে দিয়েছে, সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বিষয়। এই ধরনের আরজি মোটেই আদালতের বিচার্য বিষয় হতে পারে না। তাছাড়া তথ্যানুসন্ধানী দল গঠনও পিটিশনকারীর অধিকারের মধ্যে পড়ে না। এটা মোটেই তথ্য জানার অধিকার আইনেরও অন্তর্ভুক্ত নয়। এরই সঙ্গে তাজমহলের ২২টি বন্ধ ঘরের তালা খুলে দেওয়ার আরজিও নস্যাৎ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
পিটিশনকারী রজনীশ সিং হলেন বিজেপি’র অযোধ্যা শাখার মিডিয়া ইনচার্জ। তিনি কয়েকজন হিন্দুত্ববাদী ইতিহাসবিদ এবং কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের দাবি তুলে ধরেছিলেন তাঁর পিটিশনে যেখানে বলা হয়, ওখানে নাকি একটি শিবের মন্দির ছিল। তা ভেঙেই গড়া হয়েছিল তাজমহল। পিটিশনকারী ওই পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ দপ্তরের তথ্যানুসন্ধানী কমিটি গঠন করে ওই বন্ধ ২২টি ঘর সহ তাজমহল সংক্রান্ত ‘প্রকৃত’ তথ্য বের করে প্রকাশের দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁদের সেই উদ্যোগে হাইকোর্ট আপাতত জল ঢেলে দিল।
উল্লেখ্য, তাজমহল ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ’র আওতাধীন সৌধ। এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ওই সংস্থারই। ১৬৩২ সালে মোঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজের স্মৃতিতে ওই সৌধ নির্মাণ শুরু করেন। সেই নির্মাণ শেষ হয় ১৬৫৩ সালে। ১৯৮২ সালে ওই সৌধকে হেরিটেজ অ্যাখ্যা দেয় ইউনেস্কো।
এদিকে জানা গিয়েছে, হাইকোর্টের রায়ে হতোদ্যম হচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। এদিন হাইকোর্টের রায় শোনার পর পিটিশনকারীর আইনজীবী রুদ্র বিক্রম সিং জানিয়েছেন, তাঁরা প্রথমে ইতিহাস বিভাগ এবং পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে আবেদনে জানাবেন ওই ‘আসল’ ইতিহাস খুঁজে বের করার জন্য। তারপর তাঁরা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করবেন সুপ্রিম কোর্টে।