‘মরনফাঁদ’ ইকো পার্ক?
-
গণশক্তির প্রতিবেদন
- Nov 17, 2019 19:22 [IST]
- Last Update: Nov 17, 2019 19:22 [IST]
প্রশাসনিক
গাফিলতি। তারই মাশুল গুনতে হলো ৪ বছরের ছোট্ট আবেজকে। ঘটনাস্থল নিউটাউনের ইকো
পার্ক। কচুরিপানায় ঢাকা পুকুরে পড়ে মৃত্যু হলো তার।
শনিবার
দুপুর বেলা পরিবারের সঙ্গে ইকো পার্কে ঘুরতে যায় নারকেলডাঙ্গার মহম্মদ আকবর। সঙ্গে
ছিল তাঁর ৪ বছরের সন্তান শেখ আবেজ। নিজের মনে ঘুরতে ঘুরতে একসময় মা বাবার থেকে
ক্ষণিক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আবেজ। চলে যায় চিলড্রেন্স পার্ক বা শিশু উদ্যানের সামনে।
শিশু উদ্যানের সামনের গভীর পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের অভাবে কচুরিপানায়
ঢাকা। দূর থেকে দেখলে মখমলের মত ঘাসে মোড়া মাঠ বলে ভ্রম হবে যে কারোরই। পুকুরটির
চারপাশে কোনও বেড়া দেওয়া না থাকায় মাঠ মনে করে সেখানে নেমে পড়ে শিশুটি। কর্দমাক্ত
নোংরা জলে ডুবে মৃত্যু হয় তার।
দুপুর ৩টে
নাগাদ আবেজের খোঁজ করতে শুরু করে তার মা বাবা। হন্যে হয়ে খুঁজেও কোথাও তার কোনও
সন্ধান পাননা তাঁরা। আবেজ কে খুঁজতে এগিয়ে আসেন পার্কের কর্তব্যরত কর্মীরা।
প্রাথমিক ভাবে খবর যায় নিউ টাউন থানায়ও। কিন্তু তবুও কোনও খোঁজ মেলেনা তার। এরপরে আসরে নামেন ইকো পার্কে উপস্থিত বিপর্যয়
মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। ৪৮০ একর বিস্তৃত পার্কের প্রতিটি কোণায় তন্ন তন্ন করে
আবেজের খোঁজ চালায় তাঁরা।
ক্রমেই
সন্দেহ জোরালো হয় যে কোনও জলাশয়েই হয়ত ডুবে গিয়েছে শিশুটি। আবেজের মা বাবার বিবরণ
থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে শিশু উদ্যানের পাশের পুকুরটিতে জাল ফেলেন
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। সন্ধে ৭টার সময় ভেসে ওঠে আবেজের নিথর দেহ।
এই ঘটনার
পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কিভাবে কোনও সুরক্ষা বার্তা ছাড়া এই রকম একটি জলাশয়কে
উন্মুক্ত করে ফেলে রাখা হলো। কেন পুকুরের ধারে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা
হয়নি এতদিন।
শোকে বিহ্বল
আবেজের পরিবারের তরফ থেকে গাফিলতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে হিডকো
কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। দুর্ঘটনার পরে পুকুরটির পাড় বরাবর বাঁশের বেড়ার বন্দোবস্ত
করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। বুকফাটা আর্তনাদ নিয়ে আবেজের মা সুলতানার দাবি, একদিন
আগে এই আয়োজনগুলি করলে তাঁকে সন্তান হারা হতে হতো না।
সন্তান হারা মায়ের
আর্তনাদ বিচার পাবে কিনা সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে নারকেলডাঙার তস্য গলিতে।