মাঠ ‘অসন্তোষের’ দিনে প্রাপ্তি জয় ও জুয়ান
-
নিজস্ব প্রতিনিধি
- Sep 06, 2019 13:07 [IST]
- Last Update: Sep 06, 2019 03:00 [IST]
কলকাতা, ৫ সেপ্টেম্বর —
‘আ টিচার অ্যাফেক্টস ইটারনিটি
হি ক্যান নেভার টেল হোয়ার হিজ ইনফ্লুয়েন্স স্টপস’
বিশালাকার এই টিফোটি ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে মেলে ধরেছিলেন লালহলুদ সমর্থকরা। দুরন্ত গ্রাফিক্সে ফুটিয়ে তোলা আলেজান্দ্রো, কোকো, কার্লোস, বাস্তব, অভ্রদের ছবি। ‘শিক্ষক দিবস’-র উপহার হিসাবে। টিফোয় লেখা ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘একজন শিক্ষক অনন্তকালকে প্রভাবিত করে। তিনি কখনই বলতে পারেন না, তাঁর প্রভাব কোথায় শেষ হবে।’ ময়দানের গ্যালারি বদলাচ্ছে। টিফো সংস্কৃতির মাধ্যমে কোচ, ফুটবলারদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন সমর্থকরা। শুধু বদলাচ্ছে না বর্ষায় ময়দানের মাঠের অবস্থা। যে মাঠে ইচ্ছা থাকলেও সমর্থকদের ‘রিটার্ন গিফট’ দিতে পারবেন না কোনও ফুটবল প্রশিক্ষক। কর্দমাক্ত মাঠ। ভালো ফুটবল খেলাই চ্যালেঞ্জ। তবু শেষ পর্যন্ত হাসি মুখে মাঠ ছাড়লেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। প্রিয় দল জিতলো ২-১ গোলে। লালহলুদের হয়ে গোল বিদ্যাসাগর সিং এবং কোলাডোর। সাদার্নের হয়ে গোল করলেন অর্জুন টুডু। এই জয়ের ফলে ৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শীর্ষে থাকা পিয়ারলেসকে পয়েন্টের বিচারে ছুয়ে ফেললো ইস্টবেঙ্গল।
ইস্টবেঙ্গল মাঠ নিয়ে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্প্যানিশ কোচ আলেজান্দ্রো। বৃহস্পতিবার আরও একবার কাঠগড়ায় মাঠ। ইস্টবেঙ্গল-সাদার্ন ম্যাচ শুরুর আগে হঠাৎই বৃষ্টি নামে ময়দানে। আরও খারাপ হয় মাঠের অবস্থা। প্রায় ৩০ মিনিট দেরিতে শুরু হয় ম্যাচ। শুরুর দিকে অবশ্য তুলনামূলকভাবে ভালো খেলছিল সাদার্ন। গোটা ম্যাচেই দুরন্ত খেলেন আল আমনা। নজর কাড়েন সাদার্নের ফয়জল আলিও। তবে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলই। ৩৩ মিনিটে ডিকার কর্নারে ফ্লিক হেড করেন কোলাডো। সেই বল আবার হেডে জালে পাঠান বিদ্যাসাগর সিং। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতা ফেরাতে পারতো সাদার্ন। তাদের একটি গোলের প্রয়াস গোললাইন থেকে বাঁচান আশির আখতার। ৬২ মিনিটে জয়ের গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। আবার ডিকার কর্নার। কোলাডোর জোরালো হেড জড়িয়ে যায় জালে।
৭০ মিনিট নাগাদ কোলাডোর জায়গায় মাঠে নামেন জুয়ান মেরা গঞ্জালেজ। বর্ষার কাদা মাঠ, প্রথম ম্যাচ। তবু জুয়ান বুঝিয়ে দিলেন তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেই পারেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। বাঁ পায়ের এই ফুটবলার কাদা মাঠেই ঝড় তোলার চেষ্টা করলেন বামপ্রান্ত দিয়ে। তাঁর জোরালো শট কোনোভাবে বাঁচান সাদার্ন গোলরক্ষক। সব মিলিয়ে প্রথম দিনেই জুয়ানকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনবেন সমর্থকরা। তবে এতকিছুর পরেও রক্ষণ চিন্তায় রাখছে। ৮১ মিনিটে দৃষ্টিনন্দন গোলে সাদার্নের হয়ে ব্যবধান কমান পরিবর্ত হিসাবে নামা অর্জুন টুডু। এরপরে আরও চাপ বাড়ে লালহলুদ রক্ষণে। তবে শেষ অবধি জিতে মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল।
জয়ের পরেও মাঠ নিয়ে ক্ষোভ ঝড়ে পড়ছিল ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রোর গলায়। ‘মাঠের অবস্থা সবাই দেখতেই পেয়েছে। এই মাঠে ফুটবলারদের অনেকটা বেশি পরিশ্রম করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ফুটবলাররা সেটা করেছে, তাতে আমি ভীষণ খুশি। এই মাঠে দাঁড়িয়ে থাকাই কঠিন। খেলা তো আরও কঠিন। ফুটবলারদের সবসময় চোট পাওয়ার সম্ভবনা থাকে’ বলছিলেন স্প্যানিশ কোচ। সোমবার ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ, পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচ বেশ কঠিন হতে চলেছে লালহলুদের। ইস্টবেঙ্গল টিম ম্যানেজমেন্টের এক কর্তার বক্তব্য, ‘পিয়ারলেস ম্যাচটি এই মাঠে খেলা খুব কঠিন। ম্যাচটি অন্য মাঠে করা যায় কিনা, কর্তাদের আমরা অনুরোধ করবো।’
ইস্টবেঙ্গল : রালতে, সামাদ, আশির, বোরহা, মনোজ, পিন্টু, নাওরেম (কাশিম), ডিকা, হাইমে (জুয়ান), বিদ্যাসাগর, বোইথাঙ (রোনাল্ডো)।