আদানির সম্পদ বৃদ্ধি ধান্দার ধনতন্ত্রের প্রতীক
-
-
- Apr 02, 2022 23:49 [IST]
- Last Update: Apr 03, 2022 03:00 [IST]
মোদী ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানি চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকেই (জানুয়ারি থেকে মার্চ) মুনাফা কামিয়েছেন ২হাজার ১০০ কোটি ডলার। আদানি তাঁর প্রতিযোগী মুকেশ আম্বানিকেও অল্প সময়ে বিপুল মুনাফা তোলায় অনায়াসে হারিয়ে দিয়েছেন। এশিয়ার সবচেয়ে ধনী শিল্পপতি হিসাবে নাম উঠে এসেছে আদানির।
এত অল্প সময়ে বিপুল মুনাফা তোলায় বিশ্বের মধ্যেও নয়জন ধনী শিল্পপতির তালিকায় নাম উঠে এসেছে আদানির। বছর শুরু হতে মাত্র তিন মাসেই দেশে ধনী শিল্পপতির প্রথম সারিতে থাকা রিলায়েন্সের মুকেশ আম্বানি যেখানে মুনাফা তুলছেন ৮২৪ কোটি ডলার, সেখানে আদানি সেই একই সময়ে ২হাজার ১০০ কোটি মুনাফা তুলে তাঁর মুনাফা আম্বানির থেকে বাড়িয়েছেন আড়াই গুনের বেশি। আদানির চলতি তিন মাসেই সম্পদ বেড়েছে ২২শতাংশের বেশি।
মোদী ঘনিষ্ঠ গুজরাটের কারবারী আদানির কর্পোরেট জগতে রকেটের গতিতে উত্থান। মোদীর পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর মিলেছে সরকারের বিমান বন্দর, খনি, গ্রিন এনার্জি সহ সরকারি নানা পরিকাঠামো। আদানির কারবার শুরু হয় কয়লা খনি থেকে। মোদীর হাত মাথায় থাকায় কখনো পিছনে তাকাতে হয়নি। একে একে বিভিন্ন পরিকাঠামো ক্ষেত্রে তাঁর কারবারের বিস্তার ঘটে। জলের দামে মিলে যায় নানা সরকারি পরিকাঠামো। মাত্র দুই বছরে বিপুল সম্পদ বাড়িয়ে বিশ্বের নয় জন ধনীর তালিকায় এখন নাম উঠে এসেছে আদানির। বর্তমানে আদানির সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাড়িয়েছে ১০হাজার কোটি ডলার। মুনাফা কামানোর এবং সম্পদের নিরিখে মুকেশ আম্বানিকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন আদানি।
এই অতি মুনাফার কারবার ঘটছে মোদী সরকারের অর্থনৈতিক নীতির হাত ধরেই। মোদী দেশের সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পরিকাঠামো বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে যে ভারত গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তার বড় ফায়দা তুলেছে আদানি শিল্প গোষ্ঠী। বিমান বন্দর থেকে জাহাজ বন্দর, কয়লা খনি, বিদ্যুৎ প্রকল্প সবেতেই দখল আছে আদানি গোষ্ঠীর। শুধু দেশে নয় বিদেশেও তার সাম্রাজ্য বাড়াচ্ছে। শোনা গেছে সৌদি আরবে সর্ববৃহৎ তেল রপ্তানিকারক সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যেগে তেলের কারবারে নামতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। স্টেট ব্যাঙ্কের বিনিয়োগ নিয়ে অষ্ট্রেলিয়াতেও কয়লারা কারবারে নেমেছে আদানি।
মহামারীতে সারা বিশ্বেই সাধারণ মানুষ কাজ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়লেও এই অতি ধনীদের মুনাফার কোনো খামতি পড়েনি। আদানির মহামারীতে অতিরিক্ত ২হাজার ৭০০ কোটি ডলার মুনাফা বেড়েছে। মোদী সরকারের আমলে ধান্দার ধনতন্ত্রই প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুষ্টিমেয় শিল্পগোষ্ঠীর হাতে চলে যাচ্ছে অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ। এই কর্পোরেটদের ব্যাঙ্কের ঋণও মকুব করা দেওয়া হচ্ছে। মোদী সরকারের সাত বছরে প্রায় ১১লক্ষ কোটি ছাড় দেওয়া হয়েছে এই কর্পোরেটদের। মানুষের সঞ্চয়ের টাকায় লাভ ঘরে তুলছে কর্পোরেটরা। বিনিময়ে এই কর্পোরেটরা তাদের সমর্থন ঢেলে দিচ্ছে বিজেপি-কে। কর্পোরেটদের সঙ্গে শাসকের এক আঁতাত তৈরি হয়েছে, যা অর্থনীতির পক্ষে যেমন বিপজ্জনক, তেমনই গণতন্ত্রের পক্ষে মারাত্মক।