দিল্লি সীমান্তে যতদিন কৃষকরা ততদিন রাজ্যে কিষান জাঠা
-
গণশক্তির প্রতিবেদন
- Jan 12, 2021 08:50 [IST]
- Last Update: Jan 12, 2021 08:50 [IST]
নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা, ১১ জানুয়ারি- যতদিন সিঙ্ঘু, টিকরি, পালওয়াল, শাজাহানপুর, গাজিপুর সীমান্তে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে সড়কে থাকবেন কৃষকরা, ততদিন এই বাংলাতেও প্রতিদিন চলবে কৃষক আন্দোলনের সংহতিতে কিষান জাঠা।
উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সর্বত্রই চলছে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে জাঠা, মিছিল, পথসভা, গ্রামসভা। দিল্লির কৃষক আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন এই রাজ্যের তিন শতাধিক কৃষক, সোমবারই তাঁদের একাংশ পৌঁছেছেন হরিয়ানা-রাজস্থান সীমান্তের শাহজাহানপুরে। জানিয়েছেন এই লড়াইবে বাংলার সংহতির কথা। যতদিন দিল্লি সীমান্তে থাকবেন পাঞ্জাব-হরিয়ানা-রাজস্থান-মধ্য প্রদেশ-উত্তর প্রদেশ-মহারাষ্ট্রের সহযোদ্ধারা, বাংলার কৃষকরাও ততদিনই থাকবেন তাঁদের সঙ্গে।
‘অল ইন্ডিয়া কিষান সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র পশ্চিমবঙ্গ শাখার আহ্বানে কলকাতার লেনিন মূর্তির পাদদেশে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি টানা ৭২ঘণ্টা অবস্থানে শামিল হবেন কয়েক হাজার কৃষক। ‘দিল্লিতে আমাদের রাজ্য থেকে প্রায় তিন শতাধিক কৃষক পৌঁছেছেন কৃষি আইন বাতিল করিয়েই ওঁরা ফিরবেন। সারা ভারত কৃষকসভার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির অন্যতম নেতা পরেশ পালের নেতৃত্বে বাংলার কৃষকরা দিল্লি সীমান্তে থেকে যেমন প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে অংশ নেবেন তেমনি এই রাজ্যেও চলবে প্রতিদিন জাঠা, সভা। ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি টানা ৭২ঘন্টা বাংলার কৃষকরা হাজারে হাজারে থাকবেন কলকাতায় লেনিন মূর্তির সামনে’, বলেছেন সারা ভারত কৃষকসভার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার।
১৩ জানুয়ারি কলকাতায় ধর্মতলার কেন্দ্রীয় অবস্থান সহ রাজ্যের সর্বত্র কৃষি আইনের কপি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাবেন কৃষকরা। ১৮ জানুয়ারি মহিলা কিষান দিবসে অংশ নেবেন মহিলা কৃষিজীবীরা। ২৩ জানুয়ারি নেতাজীর জন্মদিবসে আজাদ হিন্দ কিষান দিবস পালন করা হবে। ২৬ জানুয়ারি কৃষক সাধারণতন্ত্র দিবস পালন করা হবে। ঐদিন সংবিধান রক্ষা ও প্রকৃত দেশপ্রেমের আওয়াজকে তুলে ধরে কর্পোরেটের স্বার্থবাহী কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে জেলায় জেলায় ট্রাক্টর সহ কৃষক মিছিল সংগঠিত হবে।
সোমবারও রাজ্যের সর্বত্রই চলেছে কৃষক আন্দোলনের সংহতিতে মিছিল, সভা। বাঁকুড়ার জয়পুরে রাউতখণ্ড গ্রামে সোমবার সারা ভারত কৃষকসভার ডাকে মিছিল ও পথসভা হয়। দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সংহতি, কেন্দ্রীয় তিনটি কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল বাতিল, সকলের জন্য কাজ খাদ্য শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং অস্বাভাবিক দ্রব্য মূল্য কমানো প্রভৃতি দাবিতে সোমবার পূর্ব বর্ধমানের কুসুমগ্রামে জনসভা হয়। কৃষক-খেতমজুরদের দাবি নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার একলক্ষীতে জাঠা মিছিল হয়। কৃষি আইন বাতিল, ২০০দিনের কাজ, দৈনিক মজুরি ৬০০টাকা করার দাবিতে সোচ্চার ছিলেন কৃষক-খেতমজুররা। কালুই গ্রাম থেকে শুরু হয় জাঠা মিছিল। সর্বনাশা তিন কৃষি আইন বাতিল করা, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহার ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে হুগলির খানাকুল ১ নং ব্লক কৃষক সমিতির ও খেতমজুর ইউনিয়নের উদ্যোগে ঠাকুরানীচক অঞ্চলে কৃষক ও খেতমজুর জাঠা হয়। প্রায় সাড়ে তিন কিমি রাস্তা ৭ টি বুথের মধ্য দিয়ে দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ ধরে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। জাঠা শেষে সভা হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে কৃষকদের কৃষিজাত পণ্য গ্রাস করতে চাইছে তারা। তাই ‘বয়কট রিলায়েন্স, বয়কট আদানি, বয়কট জিও’ এই স্লোগানের পাশাপাশি ফসলের দাম, বিপণন, পণ্য পরিষেবা আইনের সংশোধন এবং চুক্তিচাষে কৃষকদের বাধ্য করানোর মত সর্বনাশী কৃষি বিল অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে সোমবার হালের বলদ এবং লাঙ্গল নিয়ে কোচবিহার শহরের রিলায়েন্স সুপার বাজারের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাল বাম-কংগ্রেস যৌথ মঞ্চ।