প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পোস্টার গলায় ঝুলিয়ে নন্দন চত্বরে
-
-
- Jan 15, 2021 11:46 [IST]
- Last Update: Jan 15, 2021 11:46 [IST]
প্রথম থেকে ষোলো কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
১৯৯৫ থেকে ২০১০, কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ১৬টি বছরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী বা পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর কোনও কাটআউট ছিল না নন্দন চত্বরে। ১৯৮০ সালে নন্দনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নন্দন ও কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শুধু প্রশাসক হিসাবেই নয়, আপাদমস্তক সংস্কৃতিবান মানুষ হিসাবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আক্ষরিক অর্থে পাড়ার দখলদারির ঢংয়ে নন্দন, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের দখল নিতে চেয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বা রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের সৃষ্টি, সৃজন, অবদানকে অস্বীকার করে চলচ্চিত্র উৎসবেও চলেছে কাটআউট সংস্কৃতি। তৃণমূল সরকার ভুলিয়ে দিতে চাইলেও, শহরের এক প্রবীণ চলচ্চিত্রপ্রেমী চলতি উৎসবের দিনেও মনে রেখেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে।
‘ফোরাম অব ক্রিয়েটিভ ফিল্ম লাভার্স কলকাতা’র সঙ্গে যুক্ত সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় গত মঙ্গলবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের দেওয়ালেই পোস্টার সেঁটে এসেছিলেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় পোস্টারে লিখেছিলেন, ‘শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, ক্রিয়েটার অফ নন্দন অ্যান্ড কেআইএফএফ, উই মিস ইউ স্যার, গেট ওয়েল সুন ফর ভাইরাস ফ্রি কালচারাল মুভমেন্ট’।
পোস্টার ছিঁড়ে ফেলতে সময় নেয়নি কলকাতা পুলিশ। দমে যাওয়ার পাত্র নন প্রবীণ মানুষটিও। বৃহস্পতিবার আবার গলায় পোস্টার ঝুলিয়ে হাতে লাঠি নিয়ে ফিরে এসেছেন নন্দন চত্বরে। পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছেন পোস্টার ছেঁড়া হলো কেন, গলায় পোস্টার নিয়েই হেঁটেছেন নন্দন চত্বর। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পরই শুরু হয় কলকাতার, রাজ্যের সংস্কৃতিতে ‘ভাইরাস’র জন্ম। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের কমিটি থেকে ২০১৩ সালে বাদ দেওয়া হয় মৃণাল সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মতো ব্যক্তিত্বদের। তৃণমূলের জমানায় ‘ভাইরাস সংস্কৃতি’র আমদানি, চলচ্চিত্র উৎসবেও নির্লজ্জ দলতন্ত্র, কাট আউট সংস্কৃতির কথাই যেন মনে করিয়ে দিয়েছেন সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টারে। তৃণমূল ভুলিয়ে দিতে চেয়েছে, সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন নন্দন ও চলচ্চিত্র উৎসবের জন্মলগ্ন থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সম্পৃক্ততাকে।