জঞ্জাল থেকে জৈবসার তৈরি, কর্মসংস্থান হবে শিলিগুড়িতে
-
সন্দীপন দত্ত
- Aug 12, 2019 09:02 [IST]
- Last Update: Aug 12, 2019 03:00 [IST]
শিলিগুড়ি
১১ আগস্ট— বাড়ি বাড়ি থেকে সংগৃহীত জঞ্জাল থেকে তৈরি হবে জৈবসার। জঞ্জাল থেকে সার তৈরির প্রকল্পে কাজ পাবে পাঁচ শতাধিক মানুষ। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি বেকারের হাতে কাজ তুলে দেওয়ার লক্ষ্যেই অভিনব উধ্যোগ বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের।
পরিবেশ বান্ধব মহকুমা গড়ার সংকল্প গ্রহণ করেছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। সেই সঙ্গে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কর্মসংস্থানের দিকে। প্রকল্পের নাম ‘সলিড ওয়েস্ট লিকুইড ম্যানেজমেন্ট।’ এর জন্য এক একটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে মহকুমা পরিষদের তরফে দেওয়া হবে ২১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
কী এই ‘সলিড ওয়েস্ট লিকুইড ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প?
শিলিগুড়ি মহকুমার প্রতিটি ব্লকের প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তালিকাভুক্ত করা হবে প্রতিটি পরিবারকে। এরপর প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে দুটো করে জঞ্জাল রাখার ড্রাম। এর মধ্যে একটি ড্রাম থাকবে লাল রঙের এবং দ্বিতীয় ড্রামটি থাকবে সবুজ রঙের। বাড়ির দৈনন্দিন আবর্জনাকে ভাগ করা হবে দুটো ভাগে। একটি পচনশীল আবর্জনা এবং অপচনশীল আবর্জনা। বাড়ির প্রতিদিনের পচনশীল আবর্জনা সংগ্রহ করা হবে সবুজ রঙের ড্রামটিতে। অপচনশীল আবর্জনা সংগ্রহ করা হবে লাল রঙের ড্রামে। প্রতিদিন সকালে প্রকল্পের অধীনে থাকা জঞ্জাল সংগ্রহকারী দল গিয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে সংগ্রহ করবে সমস্ত জঞ্জাল। এরপর মেশিনের সাহায্যে পচনশীল আবর্জনা থেকে সার তৈরি করা হবে। অপচনশীল আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলা হবে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া সাহায্যে। বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় জঞ্জাল পোড়ানোর ফলে পরিবেশে কোনোরকমের দূষণ হবে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ সূত্রে খবর আপাতত পাইলট প্রোজেক্ট তৈরি করতে বেছে নেওয়া হয়েছে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে। এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত হলো নকশালবাড়ি ব্লকের নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত, ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং খড়িবাড়ি ব্লকের বুড়াগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অধ্যাপক তাপস সরকার জানিয়েছেন, ২অক্টোবরের মধ্যে পাইলট প্রোজেক্টের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছি। কারণ পুজোর পরে শিলিগুড়ি মহকুমার বাকি ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘সলিড ওয়েস্ট লিকুইড ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এর জন্য শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের খরচ হবে মোট ৪ কোটি ৭৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।
প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত বাড়ি বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহের কাজে জন্য নিযুক্ত করবে হবে স্বনির্ভব গোষ্ঠীর মহিলাদের। বাড়ি বাড়ি থেকে সংগৃহীত জঞ্জাল প্রকল্প এলাকায় পৌঁছানোর জন্য নিযুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলো নিযুক্ত করবে বেশ কয়েকজন করে ভ্যানচালক। সব মিলিয়ে এক একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এই প্রকল্পের জন্য নিযুক্ত করবে কুড়ি থেকে বাইশ জনকে। এই প্রকল্পের জন্য শিলিগুড়ি মহকুমার বাইশটি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট পাঁচ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি অধ্যাপক তাপস সরকার।
একই সঙ্গে শিলিগুড়ি মহকুমায় তৈরি হওয়া ৭৪ হাজার শৌচাগার ব্যবহারের জন্য বিশেষ প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে পঞ্চাশ মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ওপরে। নিয়মিত শৌচাগার ব্যবহার না করা এবং প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের জন্য জরিমানা করার নির্দেশ জারি করেছেন সভাধিপতি। জরিমানা ধার্য করার জন্য মহকুমার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ‘বাই-ল’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার।