অধোগতির হার হবে (-) ৭.৭%, অনুমান কেন্দ্রেরই
-
-
- Jan 08, 2021 01:44 [IST]
- Last Update: Jan 08, 2021 03:00 [IST]
নতুন বছরেও দেশের অর্থনীতি মহামারীর বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারছে না। বৃহস্পতিবার কেন্দ্র ২০২০-২১ আর্থিক বছরের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি)’র যে আনুমানিক হিসাব প্রকাশ করেছে তাতে এই প্রবণতা স্পষ্ট। কেন্দ্রের হিসাবেই দেখা যাচ্ছে জিডিপি’র হারে অধোগতিই চলছে। গোটা আর্থিক বছরে উৎপাদন হ্রাসের হার দাঁড়াবে (-) ৭.৭ শতাংশে। এই অধোগতির হার ভারতে ১৯৫২ সালের পর এবারে প্রথম দেখা গেল।
লকডাউনের আগেও অবশ্য অর্থনীতি শ্লথতায় আক্রান্ত ছিল। গত অর্থবর্ষে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৪.২ শতাংশ। অর্থবর্ষের ত্রৈমাসিক ভিত্তিক হিসাবেও বৃদ্ধির হার সমানে নেমে চলেছিল। চলতি আর্থিক বছরে ধরে মহামারীর জন্য লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির ওপর বোঝা আরও বেড়ে যায়। অর্থনীতিতে অধোগতির মাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে পিছনের সারিতে চলে যায় ভারত। ধাপে ধাপে আনলক পর্বে বিভিন্ন ক্ষেত্র খুলে গেলেও জিডিপি’র হারে অগ্রগতি ধীরলয়ে থেকেছে। অন্তত চলতি অর্থবর্ষে ইতিবাচক বৃদ্ধির কোনও সম্ভবনা দেখছেন না অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছেন যে অর্থনীতিতে উল্লেখজনক অগ্রগতি তিনি দেখছেন। তিনি বলছেন, আশা করছি অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। ১ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে বাজেট পেশ করতে চলেছেন। তাতে অর্থনীতি চাঙ্গা করায় বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এদিকে স্টেট ব্যাঙ্কের আর্থিক গবেষণা কেন্দ্র এদিন জানিয়েছে, সরকারি ভাবে স্বীকার করা হলো জিডিপি’র হারে অধোগতি চলছে। তা (-) ৭.৭ শতাংশ। ভারতের অর্থনীতিতে ১৯৭৯-৮০ সালের পর ফের এই অধোগতি দেখা যাচ্ছে।
এদিকে সরকারি তথ্যে জানানো হয়েছে দেশের আর্থিক ক্ষেত্রে অধোগতি সবচেয়ে তীব্র হলো উৎপাদন শিল্পে। তাতে অধোগতির হার হলো (-) ৯.৪ শতাংশ। গত অর্থবর্ষে মন্দা পরিস্থিতিতে কলকারখানা বন্ধ হওয়ায় উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধির হার নেমে হয়েছিল মাত্র ০.০৩ শতাংশ। ফলে মন্দায় উৎপাদন শিল্পে যে সঙ্কট ছিল মহামারী তাকে ধ্বস্ত করে দিয়েছে। উৎপাদন শিল্প এখনও কার্যত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি অর্থনীতি। বরং নতুন নতুন আরও কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
হোটেল, পরিবহণ, টেলিকম, খনি ছোট ব্যবসা বাণিজ্য এখনও কর্মতৎপরতা শুরু হয়নি। ফলে তাতেও কোনও বৃদ্ধির সম্ভবনা দেখা যায়নি। পরিষেবা শিল্পে কোনও বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে না। নির্মাণ শিল্পে অধোগতির হার হলো ১২.৬ শতাংশ। উৎপাদনে অধোগতি বেড়ে চলায় কর্মসংস্থান হয়নি, উলটে কর্মসঙ্কোচন চলছে। কমেছে মাথা পিছু আয়। গত বছরের তুলনায় মাথাপিছু আয় কমেছে ৫.৪ শতাংশ হারে। শিল্পে কোনও বৃদ্ধি না দেখা গেলেও কৃষি ও মৎস্যচাষে উৎপাদনে বৃদ্ধি দেখা গেছে। সেই বৃদ্ধির হার ৩.৩ শতাংশ। বৃদ্ধির হারে অধোগতির পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগের কোনও সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে সরকারি রিপোর্টেই।