বিদ্যুৎ বিল মকুবের দাবিতে ১৫ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া হাউস অভিযান
-
গণশক্তির প্রতিবেদন
- Jan 11, 2021 21:51 [IST]
- Last Update: Jan 11, 2021 21:51 [IST]
বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধির বিরুদ্ধে, ইউনিট পিছু স্থায়ীভাবে দাম কমানো এবং লকডাউন পর্বে গরিব পরিবার গুলিতে সিইএসসি'র পাঠানো তুঘলকি বিদ্যুৎ বিল মকুবের দাবি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া হাউস অভিযানের ডাক দিল সিপিআই(এম)'র কলকাতা জেলা কমিটি। ওইদিন মহাজাতিসদন, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার এবং দক্ষিণ কলকাতার নেলসন ম্যান্ডেলা পার্ক থেকে তিনটি কেন্দ্রীয় মিছিল সংগঠিত করে সিইএসসি'র দপ্তর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে শামিল হবেন পার্টি কর্মী সমর্থক সহ কলকাতার বিভিন্ন অংশের মানুষ। সোমবার, একথা জানিয়েছেন সিপিআই(এম)'র কলকাতা জেলার সম্পাদক কল্লোল মজুমদার। প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের আবহে গরিব মধ্যবিত্ত মানুষের রুজিরুটি সঙ্কটে। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন।ছাঁটাই হয়েছেন উপার্জনের স্থল থেকে। আর্থিক অনটনে জেরবার দশার এই সময়ে নিত্যপ্রয়োজীয় জিনিসের লাগামহীন দাম বাড়ার ফলে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটাই কার্যত দুস্কর হয়েছে। সঙ্কটের এই নিদারুণ সময়ে অস্বাভাবিক হারে আসা বিদ্যুতের বিল কার্যত মড়ার ওপর খারার ঘা। লকডাউন পর্বে এপ্রিল থেকে জুন, মিটার রিডিং না দেখার অজুহাতে সিইএসসি তিন মাসের হিসেবে বড় অংকের বিল গ্রাহকদের পাঠিয়েছিল, যা দেখে গ্রাহকদের চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার জোগাড় হয়েছিল। বহু গ্রাহকদের অভিযোগ লকডাউন পর্বে গড় হিসেবে মাসে মাসে পাঠানো বিদ্যুতের বিল দেওয়া সত্বেও তুঘলকি বিদ্যুৎ বিল তাদের ও এসেছে। মানুষের নিদারুণ আর্থিক সঙ্কটের পরিস্থিতিতে সিইএসসি'র এই কষাই সুলভ আচরণের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকরা। কলকাতার সিইএসসি'র দপ্তর গুলির সামনেও চলে লাগাতার বিক্ষোভ। বিক্ষোভের জেরে তিন মাসের পাঠানো মাত্রাছাড়া বিল একবারে না নেওয়ার ঘোষণা করে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ। ধাপে ধাপে নেওয়ার কথা বলে।কিন্তু, সিপিআই(এম) লাগাতার এই দাবি করে আসছে অতিমারীর আবহে মানুষের আর্থিক অনটনের কথা বিবেচনা করে ২০০ ইউনিটের কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারিদের বিদ্যুৎ বিল মকুব করতে হবে। কিন্তু, সিইএসসি সেই দাবি পূরণতো দুরস্ত ,উপরন্তু, বিদ্যুতের লাগামহীন বিল পাঠাতে রেয়াত করছে না। গ্রাহকদের অভিযোগ টানা কয়েকমাস ধরে লাগামহীন বিল আসছে। দেখা যাচ্ছে লক ডাউন পর্বে গড়ে পাঠানো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেও যে পরিবারকে এপ্রিল থেকে জুন, তিন মাসের হিসেবে দু'হাজার টাকা বিল পাঠানো হয়েছিল, সেই পরিবার গুলিকে গত তিন, চার মাস ধরে প্রতি মাসে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিল পাঠানো হচ্ছে। পরিবার গুলির অভিযোগ -আগে গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বিল গরমকালে আসতো, শীতে আসতো আরো কম টাকার বিল, এই শীতের মরসুমে ১০০০- ১২০০ টাকার বিদ্যুৎ বিল হাতে পেয়ে কার্যত দিশাহারা গরিব মধ্যবিত্ত মানুষ। সিপিআই(এম)'র কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার সিইএসসি'র এই মানুষ মারা আচরণের বিরুদ্ধে বলেছেন- লকডাউন, মহামারীর আবহে সাধারণ মানুষের রুজিরুটি বিপন্ন হলেও সিইএসসি:র মুনাফার ঘাটতি নেই, তৃণমূল সরকারের এই দশ বছরের কালে সিইএসসি'র মুনাফার পরিমাণ লাফিয়ে বেড়েছে, বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে এভাবে মুনাফা লুটতে মানুষকে গ্রাস করার সুবিধা পেতোনা সিইএসসি। মানুষের স্বার্থে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ওপর নজরদারি ছিল বামফ্রন্ট সরকারের। বিভিন্ন ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানুষকে সুরাহা দেওয়ার সুনির্দিষ্ট ভাবনা পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু, বর্তমান শাসকদল তৃণমূল বোঝে কর্পোরেট মুনাফার জোগানের বিষয়টাকেই। সরকার এবিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেনা, নিচ্ছে না কোন সদর্থক পদক্ষেপ। মানুষের এই সঙ্কটে মানুষের সুরাহার প্রশ্নে তাই বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে আবারও পথে নামছেন সিপিআই(এম) কর্মীরা।