ব্যবস্থা ছাড়াই, টিকা প্রতিশ্রুতি, বোঝালেন মমতা
-
গণশক্তির প্রতিবেদন
- Jan 12, 2021 09:12 [IST]
- Last Update: Jan 12, 2021 09:12 [IST]
নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা, ১১ জানুয়ারি— বিনামূল্যে করোনা প্রতিষেধকের প্রতিশ্রুতি বিলিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরামর্শ চাইলেন মমতা ব্যানার্জি।
১৬ জানুয়ারি থেকে করোনা মোকাবিলায় নিযুক্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে। তার প্রাক্কালে সোমবার প্রধানমন্ত্রী দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন। নবান্ন থেকে ভার্চুয়াল সভায় যোগ দেন মমতা ব্যানার্জি। ওই বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, অগ্রাধিকারের তালিকার বাইরে থাকা রাজ্যবাসীর জন্য রাজ্য সরকার প্রতিষেধক কিনবে কি না? নরেন্দ্র মোদীর কাছে টিকা কেনার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শের দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী।
১ কোটি স্বাস্থ্য কর্মীর পর ২ কোটি ‘ফ্রন্টলাইন’ কর্মী, মোট ৩ কোটির টিকা বিনামূল্যে দেওয়ার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রই। পরের দফায় দেশে আরও ২৭ কোটিকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে গণটিকাকরণ কর্মসূচিতে।
রাজ্যবাসীর কাছে ইতিমধ্যে বিনামূল্যে টিকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাস্তবের ফারাক স্পষ্ট হয়ে গেছে এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে। অভিযোগ, নিখরচায় সব রাজ্যবাসীকে টিকা দেওয়ার আদৌ কোনও পরিকল্পনা না করেই এই ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী বিনামূল্যে প্রতিষেধক বিলি নিয়ে কেবল ‘নীতিগত’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাজ্যের বহু জেলার স্বাস্থ্যকর্মী থেকে পুলিশের মতো অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা কর্মীদের কাছে মমতা ব্যানার্জি চিঠি দিয়েছেন। করোনা প্রতিষেধক বিনামূল্যে তাদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অভিনন্দন জানিয়ে পাঠানো চিঠি ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের জন্য বিনামূল্যে করোনা প্রতিষেধকের ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকেই করা হচ্ছে। বাকি দেশবাসীর জন্য কী হবে তার কোনও নিশ্চয়তা এখনও কেন্দ্রের তরফে মেলেনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এরাজ্যের বাসিন্দা সবার জন্য বিনামূল্যে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার কথা বলে এখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরামর্শ চাওয়া যথেষ্টই বিস্ময়কর ঠেকেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
সামনে রাজ্য বিধানসভার ভোট। ভোট মরশুমে তাই কেন্দ্র ও রাজ্য দুই শাসকদলের তরফে জনমানসে প্রভাব তৈরির জন্য শুরু হয়েছে করোনা প্রতিষেধক নিয়ে দড়ি টানাটানি। কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে করোনা প্রতিষেধকের প্রথম পর্বে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাফাইকর্মী, পৌরকর্মীদের মতো দেশের মোট ৩ কোটিকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখার।
এরাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় যুক্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার নাম ইতিমধ্যে নথিভুক্ত হয়েছে বলে এদিন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। পাশাপাশি, আড়াই লক্ষ পুলিশকর্মীর সঙ্গে ১ লক্ষ ২৫ হাজার পৌরকর্মীর নামও প্রতিষেধকের জন্য নথিভুক্ত করার কথা বৈঠকে জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি।
১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণের জন্য রাজ্য প্রস্তত বলে এদিন বৈঠকে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিবকে মাথায় রেখে রাজ্যস্তরে একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করেছে রাজ্য। প্রতিষেধকের জন্য একইভাবে জেলা ও ব্লকস্তরেও টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছে রাজ্য সরকার।
প্রথম পর্বে রাজ্য ৪৪ হাজার জনকে প্রতিষেধক দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। করোনা প্রতিষেধককে যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য রাজ্যে ৯৪১টি ‘কোল্ড চেন’ তৈরি রেখেছে রাজ্য সরকার।
এদিন বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরিবহণ কর্মীদেরও অগ্রাধিকারে রাখার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।