স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের দাবিতে ৪৮ ঘন্টা অবস্থান বিক্ষোভে এসএফআই
-
গণশক্তির প্রতিবেদন
- Jan 13, 2021 18:57 [IST]
- Last Update: Jan 13, 2021 18:57 [IST]
ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খোলা, পঠন-পাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বুধবার দুপুর থেকে, আটচল্লিশ ঘন্টার অবস্থান বিক্ষোভে বসলেন এসএফআই কর্মীরা। অবস্থানে শামিল হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারাও। একই দাবিতে এদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও করেছেন এসএফআই কর্মীরা। লকডাউন, করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের সেই মার্চ মাস থেকে রাজ্যের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। টানা এক বছরের এই সময়কালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি বন্ধ থাকার দরুন পঠন-পাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশটাই বিঘ্নিত হচ্ছে।

মহামারীর আবহে অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে পঠন-পাঠন থেকে পরীক্ষা পদ্ধতির যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে একটা বড় অংশের পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ছেন। কারণ অনলাইন পদ্ধতিতে পড়াশোনা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় এনড্রয়েড ফোন, ট্যাব কিংবা পার্সোনাল কম্পিউটার নেই বহু ছাত্র ছাত্রীর। এই পদ্ধতি আদতে পড়ুয়াদের মধ্যে একটা বিভাজন তৈরি হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে এধরনের বিভাজন কাম্য নয় বলেই জানাচ্ছেন এসএফআই নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া ক্যাম্পাস, সহপাঠী সবটা মিলিয়ে স্বাভাবিক ছন্দের যে পঠন-পাঠন, অনলাইন পদ্ধতিতে সেটা হয়না। স্বাভাবিক ছন্দের পঠন-পাঠনের মধ্যদিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের যে সর্বাঙ্গীন বিকাশ হয়, অনলাইন পদ্ধতিতে সেটা সম্ভব নয়। তাই পড়ুয়াদের স্বার্থে দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দের পঠন-পাঠন চালু করতেই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত খুলতে হবে বলে দাবি তুলেছে এসএফআই।

সংক্রমণের আবহে উপযুক্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনেই অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার দাবি নিয়ে কলকাতা জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে লাগাতার বিক্ষোভ, সভা করছেন এসএফআই কর্মীরা। এসএফআই'য়ের আন্দোলনের চাপে পড়ে ইতিমধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তার অধীনস্থ কলেজ গুলিতে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাকে তাদের লাগাতার আন্দোলনের একটা সাফল্য দাবি করে এসএফআই নেতারা জানিয়েছেন আমাদের মূল দাবিই হলো স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলা।

পড়াশোনার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। এই দাবিতে আমরা অনড়। এই দাবি নিয়ে আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত পঠন-পাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে না আনা হচ্ছে। এদিন দুপুর থেকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটের সামনে এই দাবি নিয়ে আটচল্লিশ ঘন্টা অবস্থানে বসা ছাত্র ছাত্রীরা জানাচ্ছেন- "মূল দাবিই হলো দ্রুত ক্যাম্পাস চালু এবং পঠন-পাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। একই সঙ্গে এই অবস্থান বিক্ষোভ থেকে আমাদের আরো দাবি- করোনা আবহের কারণে ভর্তি প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়েছে, সে কারণে পিইউ কোটা, ওপেন কোটায় সব আসন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের সফল ছাত্র ছাত্রীদের মার্কশিটের হার্ড কপি দিতে হবে, সব ছাত্র ছাত্রীদের স্কলারশিপের ব্যবস্থা করতে হবে, প্রকাশ করতে হবে আগামী সেমেস্টার গুলির সময় সূচি। দ্রুত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে পঠন-পাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন বিধান সভার বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী। পড়ুয়াদের স্বার্থের এই দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেছেন- যদি সিনেমা হল খোলা যায়, মিটিং, মিছিলে জমায়েত করা যায়, মেলা, খেলার উৎসব করা যায় তবে পড়ুয়াদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধির ব্যবস্থা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো চালু করা যাবেনা কেন? ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে অবিলম্বে পঠন-পাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে আনতে হবে।