কাশ্মীরের পাশে দাঁড়াতে গিয়েগৃহবন্দী সমাজকর্মী সন্দীপ পাণ্ডে
-
-
- Aug 12, 2019 09:49 [IST]
- Last Update: Aug 12, 2019 03:00 [IST]
লক্ষ্ণৌ, ১১ আগস্ট— চেয়েছিলেন কাশ্মীরের পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে। একতরফাভাবে ৩৭০ ধারা রদ করে কাশ্মীরকে যেভাবে গোটা বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ জানাতে কাশ্মীরের মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় লক্ষ্ণৌয়ে ডাক দিয়েছিলেন এক মোমবাতি মিছিলের। ফল হলো, তাঁকে আর তাঁর পরিবারকেই ঘরবন্দি করে ফেলল যোগীর পুলিশ। গৃহবন্দি অবস্থাতেই টেক্সট মেসেজ করে সংবাদ মাধ্যমকে সেকথা জানিয়েছে ম্যাগসেসে পুরস্কারজয়ী সমাজকর্মী সন্দীপ পান্ডের স্ত্রী অরুন্ধতি ধুরু। তাঁর মেসেজ ছিল, ‘‘আমাদের বাড়ির বাইরে পুলিশ। কাউকেই বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ উত্তর প্রদেশের এই ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
৩৭০ ধারা বাতিল নিয়ে বিজেপি’র উন্মত্ত আস্ফালনে কোথাও রাশ টানা না হলেও দেশজুড়ে প্রতিবাদের স্বর দমনে তৎপরতা বিজেপি তথা প্রশাসন। রবিবার লক্ষ্ণৌয়ে তারই আরেকটি নজির তৈরি হলো। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় ‘কাশ্মীরের মানুষের সমর্থনে’ এক বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। রাজধানী শহরের প্রাণকেন্দ্র হজরতগঞ্জের গান্ধী মূর্তির সামনে এই সমাবেশের আয়োজকদের মধ্যে একজন সন্দীপ পান্ডে। বিক্ষোভ ঠেকাতে লক্ষ্ণৌয়ের পুলিশ এদিন আগে থেকেই পান্ডেকে গৃহবন্দি করে রাখে। এমনকি তাঁদের জিনিসপত্র কিনতেও বেরোতে দেওয়া হয়নি।
ঈদ ও স্বাধীনতা দিবসের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আয়োজকরা। এদিন পুলিশ তাঁর বাড়িতে পৌঁছালে পান্ডে সেকথা পুলিশকে জানিয়েও ছিলেন। যদিও তাতে কান না দিয়েই বাড়ির বাইরে পুলিশ পোস্টিং করে তাঁদের বাড়ি থেকে বেরোনো আটকে দেওয়া হয়।
শুধু পান্ডেই নয়, লক্ষ্ণৌ পুলিশ এদিন চাপ সৃষ্টি করে এই মোমবাতি মিছিলের অন্যতম আয়োজক রিহাই মঞ্চের সভাপতি তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী মহম্মদ সোয়াইবের উপরেও। সিও এবং এসএইচও স্তরের অফিসারদের নেতৃত্বে এক পুলিশ বাহিনী গিয়ে তাঁর বাড়িতেও হাজির হয়। আইনজীবী সোয়াইব তাঁদের বলেন, বিক্ষোভ দেখানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ধারায় তাঁর গ্রেপ্তার হতে তৈরি। তখন পুলিশ তাঁকে জানায়, তারা ওঁদের গ্রেপ্তার করতে চায় না। তারা চাপ দিতে থাকে যে কোনভাবেই এই বিক্ষোভ বন্ধ করতে হবে। সকাল ১১টা নাগাদ কেশরবাগ থানা ও আমিনাবাদ থানার দুই অফিসার এসে সোয়াইবের উপর চাপ দিতে শুরু করে। যতক্ষণ না তারা বুঝেছে যে, আজকের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি ভেস্তে দেওয়া গেছে, ততক্ষণ তারা ওঁর বাড়ি থেকে নড়েনি। ঠিক যেমন অনেকটা সময় কাটিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে না নিশ্চিত হয়েই পান্ডের বাড়ির সমানে থেকে পুলিশ পিকেট উঠেছে। রিহাই মঞ্চ গোটা ঘটনাটিকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ বলে মন্তব্য করেছে।
তবে রবিবার রাত পর্যন্ত লক্ষ্ণৌ পুলিশের তরফে এদিনের ঘটবা সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি।