ভেড়ি দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে হাড়োয়ায় চলল গুলি, বোমা
-
নিজস্ব প্রতিনিধি
- Jul 06, 2020 12:50 [IST]
- Last Update: Jul 06, 2020 03:00 [IST]
আমফানে ক্ষতিপূরণের টাকা বেমালুম ‘চুরি’ করা থেকে মাছের ভেড়ির দখলদারিতে গুলি, বোমা চালানো- করোনা আবহেও তৃণমূল আছে তৃণমূলেই।
মাছের ভেড়ির দখলকে কেন্দ্র করে রবিবার রক্তাক্ত হলো সেই হাড়োয়া। তৃণমূলের আমলে বারেবারে রক্তাক্ত হয়েছে, খবরের শিরোনামে এসেছে সন্ত্রাসদীর্ণ হাড়োয়া। রবিবার হাড়োয়ায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সংঘর্ষে এক গর্ভবতী গৃহবধূ সহ তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মোট ১৩জন জখম হয়েছেন। পুলিশের সামনে দুই পক্ষই দেদার বোমা ও গুলি চালায় বলে অভিযোগ। পরে হাড়োয়া থানার বিশাল পুলিস বাহিনী ও র্যাফ গিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।পুলিশের সামনেই দেদার চলল গুলি,যদিও পুলিশ শাসক তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করে উঠতে পারেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাড়োয়ার নপাড়া গ্রামে ৬০০বিঘার মাছের ভেড়ি রয়েছে। ঐ ভেড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী পিয়ার আলি মোল্লা ও সইদ আলি মোল্লার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রায়শই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্রেফ টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে চলে এই সংঘর্ষ। সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ তৃণমূলী দুষ্কৃতীদের দৌরাত্মে। শনিবার বিকালে পিয়ার আলি মোল্লার অনুগামী হিসাবে পরিচিত এফতাজুল মোল্লার বাড়িতে বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। বোমার স্প্লিন্টার লেগে মোট তিনজন জখম হন। খবর পেয়ে হাড়োয়া থানার পুলিশ আসে। তখনকার মতো উত্তেজনা কোনোমতে নিয়ন্ত্রণ করে।
রবিবার সকাল থেকে পিয়ার আলি মোল্লার অনুগামীরা একতরফা হামলা শুরু করে বলে অভিযোগ। সইদ মোল্লাকে বেধড়ক মারধর করার পাশাপাশি তার কর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হয়। তিনটি বাইক ও একাধিক বাড়ি ভাঙচুর করে দেওয়া হয়। ব্যাপক বোমাবাজি করার পাশাপাশি শূন্যে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতা সইদ মোল্লার গোষ্ঠীর মোট ছ’জন জখম হন। প্রাথমিক ঝটকা সামলে সইদ মোল্লার বাহিনীও পালটা বোমাবাজি ও মারধর শুরু করে তৃণমূলের আরেক গোষ্ঠী পিয়ার মোল্লার বাহিনীর ওপরে। এই হামলায় আবার পিয়ার মোল্লার বৌমা, ভাগ্নে সহ মোট চারজন জখম হন। এরপর হাড়োয়া থানার বিশাল পুলিস বাহিনী ও র্যাফ গ্রামে পৌঁছায়। দুই গোষ্ঠীকে হটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এদিন সকাল আটটা থেকে দুই পক্ষের হামলা ও পালটা হামলায় এলাকার সাধারণ গ্রামবাসীরা তীব্র আতঙ্কে রয়েছেন। দুই পক্ষ ৪০টির বেশি বোমাবাজি করার পাশাপাশি শূন্যে দেদার গুলি চালায় বলে অভিযোগ।এই ঘটনায় এক গর্ভবতী মহিলা সহ বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন।
সইদ আলি মোল্লা বলেন, এদিন সকালে আচমকা ওরা আমার উপর হামলা চালায়। আমাকে বেধড়ক মারধর করার পাশাপাশি দলের কর্মীদের উপর নারকীয় অত্যাচার চালায়। ওদের হামলায় দলের ছয় কর্মী জখম হয়েছেন। পালটা পিয়াল আলি মোল্লা বলেন, ওরা শনিবার বিকাল থেকে হামলা শুরু করে। ওদের বন্দুক বাহিনী আমাদের উপর হামলা চালায়। বোমার স্প্লিন্টার লেগে আমাদের সাত কর্মী জখম হয়েছে।
কার্যত ভেড়ির দখল নিয়ে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর গুলি, বোমাবাজি- লকডাউন শিথিল হতেই তৃণমূল তৃণমূলের ছন্দেই।