পার্থর দেহরক্ষীর পরিবারেও ঢালাও চাকরি, মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
-
গণশক্তির প্রতিবেদন
- Jul 26, 2022 16:34 [IST]
- Last Update: Jul 26, 2022 16:34 [IST]
পার্থ চ্যাটার্জির দেহরক্ষী বিশ্বম্ভর মণ্ডলের পরিবারের যে দশজন প্রাথমিকে বিভিন্ন চাকরি পেয়েছেন তাঁদের মামলার সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের পরই আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। একইভাবে টেট প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ রয়েছে। টেট দুর্নীতি নিয়েও ইডি’র নজরদারি প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেও বিরাট রকমের বেনিয়ম হয়েছে। প্রাথমিকেও আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ কম নয়। দ্রুততার সঙ্গে এই বেনিয়ম খুঁজে বের করতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে তৎপর হতে হবে।
রমেশ মালিক নামে এক প্রাথমিক শিক্ষকপদের চাকরি প্রার্থীর দায়ের করা মামলায় শুনানির সময় গত শুক্রবার আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত একটি হলফনামা জমা দিয়েছিলেন আদালতে। সেই হলফনামায় জানানো হয়েছিল, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির দেহরক্ষী বিশ্বম্ভর মণ্ডলের পরিবারের ১০ জন প্রাথমিকে বিভিন্ন পদে চাকরি পেয়েছেন। একই পরিবারের দশজন কীভাবে চাকরি পেলেন তা খতিয়ে দেখার আবেদন জানানো হয়েছিল। দেহরক্ষী বিশ্বম্ভরের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর থানার দিবাকরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জলপাই গ্রামে। এই অঞ্চলের ১৩ জন চাকরি পেয়েছিলেন, এই ১৩ জনের মধ্যে একই পরিবারের ১০ জন রয়েছেন। যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বম্ভরের স্ত্রী রীনা, তাঁর দুই ভাই বংশীলাল এবং দেবগোপাল, মাসতুতো ভাই পূর্ণ মণ্ডল, মাসতুতো বোন গায়ত্রী মণ্ডল, মেসোমশাই ভীষ্মদেব মণ্ডল, জামাই সোমনাথ পণ্ডিত, শ্যালক অরূপ ভৌমিক, শ্যালিকা অঞ্জনা মণ্ডল, প্রতিবেশী অমলেশ রায়। পূর্ব মেদিনীপুরের বাড়িতে এখন আর বিশ্বম্ভর থাকেন না। হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে তিনি ফ্ল্যাট, গাড়ি কিনেছেন। কলকাতা হাইকোর্ট হলফনামায় থাকায় এই ১০ জনকে টেট দুর্নীতি মামলার সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। টেট মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট যে ২৬৯ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল তার মধ্যে শুধু পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্কুলের ৩০ জন রয়েছেন। প্রসঙ্গত, বিশ্বম্ভর মণ্ডলরা তিনভাই। বংশীলাল, বাবুলাল এবং দেবগোপাল। বংশীলাল প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি করার পাশাপাশি চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ। বাবুলাল চাকরি পেয়েছেন প্রাথমিক স্কুলের গ্রুপ-ডি পদে। বিশ্বম্ভরের আর এক শ্যালিকা অর্চনা মণ্ডল চাকরি পেয়েছেন হাইস্কুলের গ্রুপ-ডি পদে। অর্থাৎ একই পরিবারের ১২ জন সরকারি চাকরি পেয়েছেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির সৌজন্যে।
এদিকে টাকা পয়সা দিয়েও চাকরি পাননি এমন অভিযোগও আদালতে জমা পড়েছে। নদীয়া জেলার ১২ জন প্রাথমিক শিক্ষকপদের চাকরি প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁরা তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়েছিলেন। তাঁদের অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে। এই অভিযোগ তাঁরা তৃণমূলের নেতা অভিষেক ব্যানার্জিকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন। আদালত এই ১২ জনকেও মামলায় পক্ষভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।