ভোটার-আধার যুক্ত করছে কমিশন, বন্ধ করার দাবি জানালেন ইয়েচুরি
-
-
- Aug 06, 2022 13:48 [IST]
- Last Update: Aug 06, 2022 13:48 [IST]
ফের ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার
নম্বরের সংযুক্তিকরণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটদাতাদের ব্যক্তিগত তথ্যের
গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে এখনই এই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার দাবি জানিয়ে শুক্রবার
দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিলেন সিপিআই(এম)’র সাধারণ
সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। চিঠিতে তিনি এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ও স্মরণ করিয়ে
দিয়েছেন কমিশনকে।
প্রসঙ্গত, ভোটার
কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বরের সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করা যাবে না বলে ২০১৫ সালের
আগস্টে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার আগেই ওই বছরে ফেব্রুয়ারিতে এই
সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যে ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল রোলস পিউরিফিকেশন অ্যান্ড অথেনটিকেশন
প্রোগ্রাম (এনইআরপিএপি) বা জাতীয় ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণ ও প্রামাণ্যকরণ কর্মসূচি
শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে তা বন্ধ করা হয়। কিন্তু
সম্প্রতি এই বিষয়ে এক নতুন কৌশল নিয়েছে কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায়
ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্ত করতে ভোটদাতাদের বলা হচ্ছে না। বদলে
রাজ্যে রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের দিয়ে গণবণ্টন ব্যবস্থার মতো বিভিন্ন
সরকারি ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আধার নম্বর সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপর ভোটার তালিকা ধরে
ভোটদাতাদের অগোচরেই তাঁদের ভোটার কার্ডের নম্বরের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে
আধার নম্বর। চিঠিতে এই কৌশলের কথা উল্লেখ করেই ইয়েচুরি লিখেছেন, এর মধ্যে ৩১
কোটি ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর যুক্ত করা হয়েছে। এভাবে ভুয়ো ভোটার ধরতে গিয়ে
সারা দেশে বহু প্রকৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ হয়ে গিয়েছে ব্যবস্থার ত্রুটির
কারণে। তেলেঙ্গানায় ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটের সময়ে তা বোঝা গিয়েছিল। সেই সঙ্গে
অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানায় আধার যুক্ত ভোটার কার্ডের সূত্রে সংশ্লিষ্ট বহু
ভোটদাতার ব্যক্তিগত গোপন তথ্য প্রকাশ্যেও চলে এসেছে।
ইয়েচুরি আরও লিখেছেন, এই কৌশলে
ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বরের সংযুক্তিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করার আগে কমিশন
রাজনৈতিক দলগুলিকে কিছু জানায়নি। তা ছাড়াও ভারতে এখন পর্যন্ত তথ্য বা ব্যক্তিগত
গোপনীয়তা রক্ষার কোনও আইন নেই, ভোটারদের আধার কার্ডের তথ্য গোপন রাখার বিষয়ে নির্বাচন
কমিশনের কোনও নীতিও নেই। এই অবস্থায় কমিশন ফের ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বরের
সংযুক্তিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করায় একদিকে আগের মতোই বহু প্রকৃত ভোটারের নাম
তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার এবং আরেকদিকে ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা
লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অতীতের এমন গাফিলতির তদন্ত করাই বরং নির্বাচন
কমিশনের দায়িত্ব। কারণ, ভারতের ভোটদাতাদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করা কমিশনের
কর্তব্য। তাই যত দিন না কমিশন আগের ত্রুটিগুলির বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করতে
পারছে এবং ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখার বিষয়ে ত্রুটিহীন ব্যবস্থা সুনিশ্চিত
করতে পারছে, তত দিন এই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে। এই সঙ্গেই ইয়েচুরি চিঠিতে
কমিশনের উদ্দেশে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ভোটার
কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক নয়। সুতরাং এই সংযুক্তিকরণ ভোটারের
দিক থেকে স্বেচ্ছামূলক। তাই ইতিমধ্যে যাঁদের ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর যুক্ত
করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে তা বিযুক্ত করার অনুমতি দিতে হবে।