ভয়ঙ্কর সন্ধিক্ষণে সঠিক দিশা দেখাতে পারে বামপন্থীরাই
-
তিস্তা শেতলবাদ
- Jul 03, 2022 17:39 [IST]
- Last Update: Jul 03, 2022 17:38 [IST]
দক্ষিণ এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের বাসিন্দা হিসাবে বর্তমান সময়ে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল রাজনৈতিক বাঁকের মুখে এসে পৌঁছেছি। এই জটিল অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিতে পারে একমাত্র বামপন্থা ও তার দর্শন। অনেক সময় নষ্ট হয়েছে, রাজনীতি তার অতীত গৌরব হারিয়ে চরিত্রগতভাবে আজ অনেক নিচে নেমে গেছে। দেশে সাম্প্রতিক সময়ে অসহিষ্ণুতার হিংস্র রাজনীতির শিকার হয়েছেন নরেন্দ্র দাভোলকার, গোবিন্দ পানসারে, এম এম কালবুর্গী এবং সর্বশেষ গৌরি লঙ্কেশ। এঁরা সকলেই মুক্ত চিন্তার সমর্থক ছিলেন। এঁরা সকলেই ইতিহাসের বাস্তবতাকে তুলে ধরার চেষ্টা করতেন, যা আজ মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলি এড়িয়ে চলে।
মহারাষ্ট্রের নরেন্দ্র দাভোলকারের যুক্তিনিষ্ঠ এবং জোরালো কুসংস্কার-বিরোধিতার স্বরূপ আমরা বুঝতে পারি তাঁর ‘শিবাজী কে?’ বইটি পড়লেই। প্রায় ২৫বছর আগে লেখা ঐ বইটি এক লাখেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে, মোট পাঁচটি ভাষায় অনুদিতও হয়েছে। বইটিতে তিনি পরিষ্কারভাবেই দেখিয়েছেন, শিবাজী আসলে বহুত্ববাদের প্রচারক ছিলেন। শিবাজীর সেনাবাহিনী ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে মুসলিমদের স্থান ছিল সুবিদিত। শিবাজী একটি বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও তৈরি করতে চেয়েছিলেন। অথচ আমাদের দেশের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তাঁকে ‘হিন্দুত্বের’ তকমা দিয়ে নিজেদের কুক্ষিগত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে কোনটা সঠিক ইতিহাস ও কোনটা বেঠিক, সেটা আমাদেরই ঠিক করতে হবে।
ঠিক এভাবেই গৌরি লঙ্কেশও লিখেছেন, ‘লিঙ্গায়ত’ ব্যবস্থা কখনোই হিন্দু ঐতিহ্যের অঙ্গ হতে পারে না। এরকম অনেক কিছুই লিখে তিনি সরাসরি ব্রাহ্মণ্যবাদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান শাসকদলের চূড়ান্ত অপছন্দের পাত্রী হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
আপনারা সকলেই জানেন, ‘ফ্যাসিবাদ’ হলো এমন একটি রাজনৈতিক দর্শন যেখানে রাষ্ট্রব্যবস্থায় নাগরিকদের ওপরে কোনও জাতির প্রাধান্য চাপিয়ে দেওয়া হয়। ফ্যাসিবাদে একজনের নেতৃত্বেই এককেন্দ্রিক স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা তৈরি করা হয়। পাশাপাশি দেশজুড়ে নাগরিক ও বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবরোধ তৈরি করা হয়। এই প্রত্যেকটি প্রবণতাই আজ আমাদের দেশে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রভাত পট্টনায়েকের ভাষায়– ‘একটি ফ্যাসিস্তসুলভ শক্তিই আজ সরকার পরিচালনা করছে।’ আসলে দেশের সরকারে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেই , রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস-ই এখন সরকার পরিচালনা করছে। কট্টর হিন্দুত্ববাদী আরএসএস দেশের সংবিধানের মূল ভিত্তিটাকেই উপড়ে ফেলতে চায়। আমাদের পরিষ্কারভাবে এটাই বুঝতে হবে। আরএসএস ‘মনুস্মৃতি’র মতো আইন বানিয়ে দেশকে কেবল ‘হিন্দুস্থান’ হিসাবেই গড়তে চায়। এই কাজে তাদের শত্রু হলো মুসলিম, খ্রিস্টান এবং কমিউনিস্টরা।
আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এখন ‘কর্পোরেট ফ্যাসিজম’ কথাটিও ব্যবহার করতে হচ্ছে। কারণ ফ্যাসিবাদ শুধুমাত্র একটি জাতিকে ওপরে তুলে ধরা বা অন্যকে নিচে নামানোর কাজটুকু করেই ক্ষান্ত হয় না, তার সাথে সাথেই সরকারি সম্পত্তি ও মালিকানাকে বেসরকারি পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজটিও করে। এর বিনিময়েই আজ এক একটি রাজনৈতিক দল কয়েকশো কোটি টাকার মালিক।
এখন আমাদের দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি অর্থক্ষমতার কুক্ষিগত। মূলধারার বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলগুলি এখন এক একটি নির্বাচনে বেপরোয়াভাবে টাকা খরচ করে। এছাড়াও রয়েছে বর্তমান সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার। নানারকম মিথ্যা প্রচারকে ‘সত্য’ করে তোলার লাগাতার অপপ্রয়াস চলছে।
আমাদের এই ফ্যাসিস্তসুলভ শাসনব্যবস্থার সম্পূর্ণ চেহারাটিকে বুঝতে গেলে প্রথমেই নয়া উদার অর্থনৈতিক ব্যবস্থার স্বরূপটিকেও বুঝতে হবে। আমাদের দেশে এখনও ৯৩শতাংশ শ্রমিক অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করছেন। অসংগঠিত ক্ষেত্রের এই বিপুল শ্রমিকের সম্মান ও ন্যূনতম মজুরির দাবি আদায়ে আমাদের কঠিন লড়াই চালাতে হচ্ছে। মনে রাখা দরকার, অসংগঠিত ক্ষেত্রের এই বিপুল শ্রমিকের বেশিরভাগ অংশের মধ্যেই এখনও রাজনৈতিক অধিকারবোধ তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি। একমাত্র বামপন্থীরাই পারেন এই শ্রমিকদের রাজনৈতিক অধিকারবোধে জাগিয়ে তুলতে এবং তাঁদের প্রাপ্য অধিকারের কঠিন লড়াই লাগাতারভাবে চালিয়ে যেতে। সেই দায়িত্ব পালনের যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বামপন্থীরা।
আমি সকলকে দশ বছর আগের সময়ে ফিরে তাকাতে অনুরোধ করবো, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউপিএ-১ এবং ইউপিএ-২ সরকারের সময়ের দিকে। বিশেষ করে ইউপিএ-১ সরকারের দিকে, যখন দেশজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এখনকার মতো সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার পুরোপুরি বাইরে চলে যায়নি। দুর্নীতির লাগামের রাশ অনেকটাই টেনে রাখা গিয়েছিল। মানুষের অধিকার রক্ষায় বেশ কিছু বিল আইনে পরিণত করা সম্ভবপর হয়েছিল। বামপন্থীরা ইউপিএ-১ সরকারের বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করছিল বলেই এগুলি সম্ভব হয়েছিল। সাধারণ মানুষের তথ্য জানার অধিকারের আইন, সকলের জন্য খাদ্যের আইন, এম এন রেগা, সকলের শিক্ষার অধিকার আইন ইত্যাদি ছিল সেসময়ের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
যদিও এসব কাজ করতে স্বাধীনতার পরে এতগুলি বছর লেগে গেল, তার কারণ রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন হলেও দেশের নাগরিকরা এখনও পুরোপুরি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতা পাননি। দেশের সংবাদমাধ্যমগুলিও আসলে পরাধীন। প্রায় আশি শতাংশ সংবাদমাধ্যমের মালিক দেশের বৃহৎ তিনটি কর্পোরেট সংস্থা। ফলে তারা শাসকশ্রেণির অনুকূলে কথা বলেই সাধারণ মানুষকে ভুলিয়ে রাখতে চাইছে। মানুষের ন্যায্য অধিকারের দাবিগুলিও তাই অনুচ্চারিত থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমে। আমাদের লড়তে হচ্ছে এসবের বিরুদ্ধেও।
দেশের প্রধান মিডিয়া হাউসগুলিকে নিয়ে আরেকটা কথা বলতে চাই। এরা রোজ রাতে ৮টা, ৯টা এবং ১০টার সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। সেই বিষয়গুলির মধ্যে ৫০ শতাংশই হলো পাকিস্তান নিয়ে, আর ২০ শতাংশ হলো বিরোধীদের মুণ্ডপাত নিয়ে। অথচ দেশের অসংখ্য জ্বলন্ত সমস্যার একটি নিয়েও আলোচনায় কোনও আগ্রহ নেই তাদের। এই তো নভেম্বরের ১৫ থেকে ২১ তারিখ পঞ্চাশ হাজার মৎস্যজীবী তাঁদের দাবি নিয়ে আদানি সংস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেন, অথচ মূল ধারার মিডিয়াগুলিতে তার কোনও উল্লেখই নেই! খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অতি ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত এই আদানি গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই গুজরাতের উপকূলকে ধ্বংস করে এখন কেরালা উপকূলের দিকে এগচ্ছে। আবার ক’দিন আগেই শুনলাম, আমাদের দেশের খাদ্যশস্য ও ডাল আমদানি করতে হচ্ছে কানাডা থেকে! এতবড় একটা লজ্জার বিষয় নিয়েও কোথাও কোনও আলোচনা নেই! দেশের ভয়াবহ কৃষি সঙ্কটে লক্ষ লক্ষ কৃষক আত্মহত্যা করছেন, অথচ তা নিয়ে কোনও আলোচনাই দেখা যায়না প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যমে!
বর্তমানে গণতন্ত্রের প্রত্যেকটি স্তম্ভ আরও গণতান্ত্রিক হওয়ার পরিবর্তে কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছে। বিচারব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিক্ষাব্যবস্থা, সর্বত্রই একই পরিস্থিতি। সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, সব জায়গাতেই এককেন্দ্রিক ক্ষমতার দম্ভ! আমি কুর্নিশ জানাই জেএনইউ’র সেই ছাত্র-ছাত্রীদের, যাঁরা এর বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চালিয়েছেন। এদেশের ফ্যাসিবাদী শাসকরা ‘মনুবাদী’ শাসনব্যবস্থার অনুসরণে এমন একটি ‘হিন্দু দেশ’ বানাতে চায়, যেখানে মানুষের দারিদ্র নিয়ে কথা বলা অপরাধ! দলিতদের ওপর অত্যাচার নিয়ে মুখ খুললেই আপনি দেশদ্রোহী! মুসলিমদের পিটিয়ে খুন করার প্রতিবাদ জানালে আপনি পাকিস্তানি! আশ্চর্যের বিষয়, মূল ধারার মিডিয়াগুলিও এসব বিষয়ে তর্কবিতর্ক চায় না, বরং এসব প্রসঙ্গ আড়াল করতেই তাদের আগ্রহ বেশি। তবে এখন সোশাল মিডিয়ার উপস্থিতির কারণে প্রতিবাদ এবং অনেক বিকল্প প্রচারের সুযোগ আছে। সেই সুযোগকেই পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে আমাদের।
একদিকে আমাদের হাতে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, যা ভেদাভেদহীন রাষ্ট্রীয় সমাজ ও নাগরিক ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করে। অন্যদিকে রয়েছে হিন্দু মহাসভা, মুসলিম লিগ এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, যারা চায় ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত নাগরিক সমাজ। এই তিনটি শক্তিই ধংসাত্মক। তাই আমি চাই আমাদের প্রতিটি সভা-সমিতি ও কর্মসূচিতে এই তিনটি বিভেদকামী সংগঠনের সোচ্চার বিরোধিতা হোক ।
আমি একজনের ডায়েরির কিছু অংশ পড়ে শোনাবো। ডায়েরিটি আরএসএস’র একসময়ের প্রচারক বি এস মুঞ্জে-র। মুসোলিনির আমলে মুঞ্জে ইতালি ভ্রমণ করেছিলেন। পরে ভারতে ফিরে এসে ১৯৪৬সালে কুখ্যাত দাঙ্গার সময়ে বিহারের ইসলামপুরে যান। বিহার ঘুরে এসে তিনি তাঁর ডায়েরিতে সেখানকার সংখ্যালঘু মানুষের মনের ভয়ের কথা তুলে ধরেছিলেন। পরে তিনি আরএসএস’র কঠোর সমালোচনাও করেছিলেন। তিনি লিখছেন, একজন বৃদ্ধ মুসলিম তাঁর হাত ধরে বলছেন– ‘আমাকে আর যাই করুন প্রাণে মারবেন না। আমি বাকি জীবন হিন্দু হয়ে থাকবো।’ বর্তমান সময়ে ঠিক এই কায়দাটিই অনুসরণ করা হচ্ছে– মানুষের মনে স্রেফ ভয় ঢুকিয়ে দাও, তাহলেই গোটা রাষ্ট্র এবং সমাজব্যবস্থা তোমার দাস হয়ে যাবে। ২০১৪ সালের মে মাসে মোদী সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এভাবেই একে একে মহম্মদ আকলাখ, নোমান, রফিক, হাবিব, ইমতিয়াজ খান, ইব্রাহিম, জুনেইদ, পেহলু খানদেরকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর যারা এই ঘৃণ্য আক্রমণ চালিয়েছে, তারা পরিষ্কার জানে বর্তমান সরকার তাদের সুরক্ষাই দেবে। তাই আজ তারা অকুতোভয়। রাজস্থান পুলিশ যেভাবে পেহলু খানের খুনিদের ক্লিনচিট দিল, তাতেও আরেকবার বিষয়টি দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে। একইভাবে তেলেঙ্গানায় হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ মেধাবী গবেষক রোহিত ভেমুলার হয়রানি ও আত্মহত্যার ঘটনাতে সুবিচার মেলেনি আজও। শুধু সরকারেই নয়, আমাদের দেশের আমলাদের মধ্যেও এধরনের মানসিকতার লোকজনই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে।
নজর করার মতো ব্যাপার হলো, নরেন্দ্র দাভোলকার, এম এম কালবুর্গী, গৌরি লঙ্কেশ তাঁদের রাজ্যের কংগ্রেস শাসনকালেই খুন হলেন। তাই দীর্ঘমেয়াদি লড়াইতে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের পরিবর্তনেই সীমিত থাকলে হবে না, পরিবর্তন দরকার এই কর্পোরেটসর্বস্ব অর্থনৈতিক নীতিরও। একমাত্র বিকল্প সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতিই পরিস্থিতিতে বদল আনতে সক্ষম।
এই পরিস্থিতিতে একমাত্র বাম প্রগতিশীল শক্তিই দেশকে একটি সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিকল্প দিতে পারে। এই বিকল্পই বর্তমানের ঘুণ ধরে যাওয়া উদার অর্থনীতির সঙ্কটের জাঁতাকল থেকে দেশকে মুক্তি দিতে পারে। এটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে এটাও আশার কথা যে, এই দেশের প্রতিটি জেলাতেই আন্দোলন চলছে– কোথাও জমির অধিকার নিয়ে, কোথাও জঙ্গলের অধিকার নিয়ে, কোথাও সংখ্যালঘু মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে, আবার কোথাও বা দলিতের সামাজিক অধিকার নিয়ে। এই লড়াইগুলিকে একসূত্রে গেঁথে সামগ্রিক চেহারা দিলেই একটি প্রগতিশীল বিকল্প গড়ে তোলা সম্ভব। একমাত্র প্রগতিশীল চিন্তাই পারে এই মহতী দায়িত্ব সম্পন্ন করতে।
আমাদের আর নষ্ট করার মতো সময় নেই। ২০০২সালে গোধরা পরবর্তী একতরফা সাম্প্রদায়িক হিংসার বলি হয়েছিলেন ১৯২৬জন মানুষ। তাঁদের স্বজনদের সুবিচার পাওয়ার লড়াই এখনও চলছে। আমরা সক্রিয়ভাবে আছি সেই লড়াইতে। আমি জানিনা আমরা সুবিচার পাবো কি না । কখনও মনে হয় গ্লাসটি অর্ধেক ভর্তি, আবার কখনও মনে হয় অর্ধেক খালি। যদিও ইতিমধ্যে ১২৬জনের যাবজীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছে, নীতি অনুসারে আমরা অবশ্য কখনোই ফাঁসির দাবি করি না।
বন্ধুরা, দেশের এই ভয়ংকর সন্ধিক্ষণে সঠিক দিশা ও নেতৃত্বের জন্য আমরা তাকিয়ে আছি পশ্চিমবঙ্গের দিকে, কেরালার দিকে এবং সমাজের প্রগতিশীল ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন অংশের মানুষের দিকে।