গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের আন্তঃরাজ্য সমবায়ে টাকা ঢালছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এরা অন্য রাজ্যে সক্রিয় হচ্ছে। এমনকি দূরের রাজ্য কেরালায় গিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে। অন্য রাজ্যের সমবায়গুলির সক্রিয়তা কমাতে এই তৎপরতা কেন্দ্রের। এভাবেই অন্য রাজ্যে রাজনৈতিক পুঁজি তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। আন্তঃরাজ্য সমবায় সমিতি সংশোধনী বিলকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে এই ব্যাখ্যা দিয়েছে সিপিআই(এম)।
পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপত্র ‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’-তে সমবায় বিলের বিপদ প্রসঙ্গে নিবন্ধে বলা হয়েছে, রাজ্যের সাংবিধানিক ক্ষমতা কেড়ে কেন্দ্রীকরণের আরেকটি উদাহরণ এই বিল।
সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনে বিলটি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পেশ করে পাশ করানোর জন্যই। বিরোধীরা আপত্তি জানান। গুরুত্বপূর্ণ এই বিল সংসদীয় কমিটিতে বিশদ চর্চার জন্য পাঠানোর দাবি তোলেন তাঁরা। বিলটি আপাতত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘‘রাজ্যের আইনমাফিক পরিচালিত সমবায়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ব্যবস্থা রয়েছে সংশোধনীতে। যে কোনও সমবায় দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মিশে যেতে পারে কোনও আন্তঃরাজ্য সমবায়ে। সমবায়ের বোর্ড অব ডিরেক্টরস’র সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে কেন্দ্র।’’
এর আগে সমবায় সংশোধনী বিল পেশ করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু গত অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় যে রাজ্যের আইনে গঠিত সমবায়ে কেন্দ্রের আইন কার্যকর হবে না। সিপিআই(এম)’র পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্ট হঠকারি অভিযানে বাধা দেওয়ায় নতুন রাস্তা নেওয়া হয়েছে। আন্তঃরাজ্য সমবায় সমিতি আইন সংশোধনী বিল আনা হয়েছে। আসল লক্ষ্য রাজ্যে রাজ্যে সমবায়ের ওপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা। সমবায় মন্ত্রক আলাদা করে গড়া হয়েছে কেন্দ্রে। আর মন্ত্রী করা হয়েছে অমিত শাহকে।
কিন্তু আন্তঃরাজ্য সমবায়ের অবস্থা কী? নিবন্ধে মনে করানো হয়েছে যে সংসদে তোলা এক প্রশ্নে অমিত শাহ কী জানিয়েছিলেন। ২০২১’র ডিসেম্বরে সংসদে কেন্দ্র জানিয়েছিল যে দেশে ৪৪টি আন্তঃরাজ্য সমবায় ব্যবসা গুটিয়েছে। ৯টি রাজ্যে সক্রিয় এই সব সমবায়ে আর্থিক বেনিয়ম ধরা পড়েছে, পরিচালনায় গলদ দেখা গিয়েছে। বলা হয়েছে, এমন সমবায়ের চাইতে কেরালার মতো রাজ্যে সেখানকার আইনে চালু সমবায় অনেক দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। রাজ্যস্তরের এমন সমবায়গুলিকে কেন্দ্রীয় আইনে বেঁধে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে সমবায় পরিচালনা নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধেও একতরফা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ প্রবল। সমবায় পরিচলনা ঘিরে গণতান্ত্রিক রীতি না মানার ঘটনা বহুবার সামনে এসেছে। নির্বাচন করানোর দাবি উঠেছে বহু সমবায়ে।
Comments :0