KOROLA JALPAIGURI

স্নানেরও অযোগ্য করলা নদীর জল, বলছে রিপোর্ট

জেলা

জলপাইগুড়ির করলা নদীর এমনই অবস্থা।

পান তো দূর, স্নানও করা উচিত নয় করলা নদীতে। জলপাইগুড়ির এওই নদী নিয়ে এমনই বিপদ জানিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট। 
গত ১০ মে পরীক্ষায় করলা নদীর জলের নমুনায় ‘বিওডি’ বা ‘বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড’ ছিল ২.৫। করলা নদীতে টোটাল কলির্ফম (ব্যাক্টেরিয়া) ছিল অন্তত ১৭,০০০ হাজার ইউনিট। এই দুই সূচক থেকে দূষণের পরিমাপ করা হয়। রিপোর্ট বলছে, করলা নদীর জল দূষণের সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। জল পান অস্বাস্থ্যকর তো বটেই, স্নানের পক্ষেও অযোগ্য। 
জলপাইগুড়ি শহরে করলা নদী থেকে পানীয় জল সরবরাহ করে না পুরসভা। তবে করলার দু’দিকে বাসিন্দাদের স্নান, কাপড় কাচা সহ শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও শহর সংলগ্ন গ্রামের মানুষের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানও চলে সারা বছর ধরে। নদীর জল দূষিত হওয়ায়, এই সব কাজকর্ম থেকেও রোগ চর্মরোগ সহ ও অন্যান্য রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকছেই।
করলা নদীর জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয় কিং সাহেবের ঘাট লাগোয়া এলাকা থেকে। যেখানে কলিফর্মের মাত্রা প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ১,৭০০০ ইউনিট। কলিফর্মের মাত্রা অতিরিক্ত হওয়ার অর্থ জলে জৈবিক বিষাক্ত পদার্থ বেশি মাত্রাকে ইঙ্গিত করে। 
সম্প্রতি করলা নদী কচুরিপানায় ঢেকে গিয়েছিল। তা নিয়ে প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনগুলির তরফে দাবি ওঠায় পানা পরিষ্কার করা হয়। ফের পানা জমতে শুরু করেছে। 
জলপাইগুড়ির পৌরপ্রধান পাপিয়া পাল বলেন, “করলা নদীর দূষণ ঠেকানো একা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। সেচ দফতর, প্রশাসন সবার সমন্বয় চাই। অনুদান পেলে, দূষণ থেকে রক্ষা করার প্রকল্প নেওয়াই যেতে পারে।” 
করলা নদীর নাব্যতা ফেরাতে সদর প্রশাসনের তরফে সেচ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। মহকুমাশাসক (জলপাইগুড়ির সদর) তমোজিৎ চক্রবর্তী প্রস্তাব দিয়েছিলেন যাতে করলা নদী দিয়ে তিস্তার জল বইয়ে দেওয়া যায়। নদীতে জলের পরিমাণ বাড়লে নাব্যতা ফিরবে, দূষণও ঠেকানো যাবে বলে দাবি করেছিল প্রশাসন।
যদিও সে প্রস্তাব সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সেচ দপ্তর। সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার (উত্তর-পূর্ব) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, “তিস্তা ব্যারাজ থেকে জল নিয়ে করলায় বইয়ে দেওয়ার একটি ব্যবস্থা রাখা আছে, ব্যারাজ থেকে চ্যানেল রয়েছে। কিন্তু মাঝপথে সেই চ্যানেল বা খাল নেই। কাজেই করলার দিকে জল ছাড়লে, যেখানে খাল নেই সেখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে। তাই এটি সম্ভব নয়।”

Comments :0

Login to leave a comment