গঙ্গার ভয়াবহ ভাঙনের মুখে শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন। গঙ্গার ধারে এই বোটানিক্যাল গার্ডেনের বহু গাছগাছালি তলিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়ে অভিযোগ জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
পরিস্থিতি ঠিক কী তা জানতে সম্প্রতি বোটানিক্যাল গার্ডেনে গঙ্গার ধার ঘুরে দেখলেন পরিবেশবিদরা। তাঁদের আশঙ্কা এইভাবে চলতে থাকলে বিশ্বখ্যাত এই উদ্ভিদ উদ্যানের অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে এসে যাবে।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের নেতৃত্বে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা লঞ্চে করে গঙ্গার ধার বরাবর পরিদর্শন করেন। সেখানে দেখা যায়, গঙ্গার ধারে বোটানিক্যাল গার্ডেনের যে অংশে বেড়া নেই, সেখানে অনেক গাছ হেলে পড়েছে। গঙ্গার ভাঙনে মাটি ক্ষয়ে গাছের শিকড় বেরিয়ে পড়েছে। যে কোনও মূহূর্তে সেগুলি জলের তলায় চলে যাবে।
স্থানীয় অনেকের বক্তব্যও তাই। গার্ডেনের বহু গাছ আগেই গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। এমনকী বোটানিক্যাল গার্ডেনের গঙ্গার ধারে যে অংশে বেড়া রয়েছে, সেখানেও গঙ্গার ভাঙনে সেই কংক্রিটের বাঁধন অনেক জায়গাতেই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গঙ্গার ধারে বিই কলেজ এক নম্বর ঘাটের পঞ্চাশ বছরের পুরোনো বাসিন্দা হীরা দেবী জানাচ্ছেন, এক নম্বর ঘাট থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রায় ৫০০ মিটার এলাকার গাছগাছালি গঙ্গায় ইতিমধ্যে তলিয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা বারবার বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ ও হাওড়া পৌরসভাকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
ভাঙন পরিদর্শনের পর পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তা চলতে থাকলে আগামী কুড়ি বছরের মধ্যে পুরো বোটানিক্যাল গার্ডেনই গঙ্গার তলায় চলে যাবে। অভিযোগ, বোটানিক্যাল গার্ডেনের যুগ্ম অধিকর্তা দেবেন্দর সিং অবশ্য এ বিষয়ে এখনও উদাসীন।
তাঁর মতে, যে অংশ গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে, সেই এলাকাটি বোটানিক্যাল গার্ডেনের কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। তার পরই এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।
‘খতিয়ে দেখা’ এবং ‘ভাবনাচিন্তা’ কবে হবে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
Comments :0