দীর্ঘদিন পরে ফের ফুটবল ফিরল ইস্টবেঙ্গল মাঠে। এবং বৃহস্পতিবারের সেই ম্যাচে দুরন্ত ফুটবল উপহার দিল ইস্টবেঙ্গলের রিজার্ভ দলের খেলোয়াড়রা। পূর্ব রেলকে ৫-১ গোলে দুরমুশ করল লাল-হলুদ।
এদিন বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ম্যাচ শুরু হয়। শুরু থেকে দুরন্ত গতিতে খেলতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। একইসঙ্গে ফুটবলারদের মধ্যে দেখা যায় দীর্ঘদিনের আকাঙ্খিত বোঝাপড়া। ২০১৮ সালে আইএসএল’এ ঢোকার পর থেকে যেই বোঝাপড়া এক প্রকার হারিয়ে গিয়েছিল ক্লাব থেকে। তারফলে ছবির মতো সুন্দর ফুটবল ফুটে ওঠে ইস্টবেঙ্গল মাঠে।
প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ২১ মিনিটের মাথায় দুরন্ত গোল করেন অভিষেক কুঞ্জম। এই গোলের নেপথ্যে রয়েছে দীপ সাহার ইঞ্চি মাঁপা ফ্রিকিক। ফ্রিকিক ক্রসবারে লেগে চলে আসে অভিষেকের কাছে। তিনি ফরতি বল জালে জড়ান। ৩১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান মাঝমাঠের খেলোয়াড় ভানলালপেখা। তিনি পূর্বরেলের বক্সের বাইরে বল পান। সেখান থেকে জোরালো শট নেন তিনি। বল ফারপোস্টের জালে জড়িয়ে যায়।
৩৬মিনিটে দলের স্কোর ৩-০ করেন আমান সিকে। ডানপ্রান্ত থেকে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে এসে বল জালে জড়ান তিনি। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের একটি গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়।
৩-০ ফলাফল নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হয়। এই অর্ধেও শুরু থেকে চাপ বজায় রাখে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ৫৫ মিনিটের মাথায় স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি গোল শোধ করে পূর্বরেল। গোলটি করেন সাগর কুমার।
গোল শোধ করলেও ম্যাচে ফেরত আসতে পারেনি পূর্ব রেল। ৭৮ মিনিটে ফের ব্যবধান বাড়ান আমান। করে ফেলেন নিজের দ্বিতীয় গোল। কুশ ছেত্রীর সঙ্গে রেলের বক্সে ওয়ান-টু-ওয়ান খেলে নিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। এদিনের ম্যাচের শেষ গোলটি আসে ৮৮ মিনিটে। কুশের পাস থেকে গোল করে যান রাজিবুল মিস্ত্রি।
এদিন গোটা ম্যাচে রেলের গোল লক্ষ করে ২৯টি শট নিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল খেলোয়াড়রা। তারমধ্যে গোলে থেকেছে ১১টি শট। এর থেকেই স্পষ্ট, কি পরিমাণ আধিপত্য নিয়ে গোটা ৯০ মিনিট জুড়ে মাঠ দাপিয়েছেন লাল হলুদ খেলোয়াড়রা।
এদিন দলের খেলা দেখতে উপস্থিত ছিলেন লাল হলুদের সিনিয়র দলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। সহকারী ডিমাস ডেলগাডোকে নিয়ে মাঠে হাজির হাজির ছিলেন তিনি।
দীর্ঘদিন পরে নিজেদের মাঠে প্রিয় দলের জয় দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলেন লাল হলুদ সমর্থকরাও। বৃষ্টির মধ্যেও গ্যালারি ভরাতে কার্পণ্য করেননি তাঁরা। গোলে এবং চোখ ধাঁধানো একের পর এক মুভমেন্টের সঙ্গে সঙ্গেই গ্যালারিতে জ্বলে উঠছিল লাল-হলুদ রংমশাল। তারসঙ্গে হাজির ছিল লাল-হলুদ স্কার্ফ এবং টিফো। সব মিলিয়ে উৎসবের পরিবেশে মাঠ মাতিয়ে রাখেন টিম ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা।
এদিনের জয়ের পরে কলকাতা লিগের প্রিমিয়র ডিভিশনের বি গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল। গত ম্যাচে বিএসএস’র সঙ্গে ১-১ ড্র করার পরে কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল দলের পারফর্মেন্স নিয়ে। কিন্তু চওড়া স্কোর লাইনের সাহায্যে সমস্ত সমালোচনা আপাতত ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন রিজার্ভ দলের কোচ বিনো জর্জ।
Comments :0