Haltu suicide

হালতু কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও এক, শিশুটির চিকিৎসার জন্য ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছিল পরিবার বলছেন প্রতিবেশীরা

কলকাতা

হালতু কাণ্ডে গ্রেপ্তারি বেড়ে তিন। চঞ্চল মুখার্জি নামে এক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে টাকার বিনিময় রাষ্ট্রয়াত্ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে ১০ লক্ষ টাকার ঋণ সে পাইয়ে দিয়েছিল সোমনাথ রায়কে। 
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন শিশুটির একটি শারিরীক সমস্যা ছিল। শিশুটিকে স্কুলে ভর্তির পর সেখানে গিয়ে যাতে কোন সমস্যার মুখে পড়তে হয় তার জন্য চিন্তিত ছিলেন বাবা মা। তার একটি অস্ত্রপচারও হয়। আরও একটি হওয়ার কথা ছিল। আর এই ব্যায় বহুল চিকিৎসার জন্য তারা ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে। 
মঙ্গলবার সকালে ৪০ বছর বয়সি সোমনাথ রায় পেশায় অটোচালক। তার স্ত্রী সুমিত্রা রায় (৩৫) এবং আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীল রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় পূর্বপল্লী এলাকায় তাদের বাড়ি থেকে।
বুধবার তিনটি দেহের ময়নাতদন্তের পর দেখা যায় শিশুটিকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে মারা হয়। তারপর তাকে নিজের দড়ির সাথে জড়িয়ে আত্মহত্যা করেন সোমনাথ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে সোমনাথ এবং তার স্ত্রী দুজনেই আত্মহত্যা করেছেন।
স্থানীদের দাবি প্রতিদিন সকালে অটো নিয়ে বেরিয়ে যেতেন সোমনাথ কিন্তু এদিন সে বেরোয়নি। ঘরের দরজার দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিল। সোমনাথ যেই বাড়িতে থাকতেন তা তার মামার বাড়ি। মায়ের অংশে সে থাকতেন পরিবার নিয়ে। আর থাকতেন মামা এবং মাসির পরিবার। 
বেলা হয়ে গেলেও তাদের দেখতে না পেয়ে ডাকা ডাকি করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা কসবা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকলে দেখে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনজন। আড়াই বছরের ছেলের সঙ্গে নিজের দেহ বেঁধে তারপর আত্মহত্যা করেছেন সোমনাথ। পাশে ঝূলছে তার স্ত্রীর দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর তাদের ঘর থেকে পাওয়া গিয়েছে সুইসাইট নোট। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন সেখানে একজন পাওনাদার সহ মামা ও মামির নাম উল্লেখ করা আছে। তিনি জানিয়েছেন, ওই নোটে লেখা ছিল তার মামা প্রদীপ কুমার ঘোষাল এবং নীলিমা ঘোষাল তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ি। মামা, মামি দুজনেই পুলিশে কাজ করতেন।
রামলাল বাজার গড়িয়াহাট রুটে অটো চালাতেন ওই ব্যাক্তি। দুটি অটো ছিল তার। একটি নিজে চালাতেন, অন্যটি ভাড়া দিতেন। ওই রুটের কয়েকজন চালক খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন তারা জানান, ছেলের চিকিৎসার জন্য বাইরে থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন সোমনাথ। সেই পাওনাদার বার বার টাকা চাইতে বাড়িতে আসতেন। এছাড়া তিনি নাকি ওই অটো চালকদের বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন সম্পত্তি নিয়ে তার মামা মামির সাথে ঝামেলা চলছে।
সোমনাথ ছোট বেলা থেকেই মামার বাড়িতে মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন সোমনাথের বিয়েও তার মামা মামি দিয়েছিলেন। কোন সেই ভাবে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়নি বলে জানাচ্ছেন তারা।
সুইসাইট নোটের ভিত্তিতে আগেই গ্রেপ্তার হয়ে ছিলেন মামা ও মামি। তাদের ১২ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Comments :0

Login to leave a comment