সিপিআই(এম) প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালালো তৃণমূল ও বিজেপি’র যৌথ বাহিনী। প্রার্থী কেবল নন, জঘন্য আক্রমণ হয়েছে তাঁর স্ত্রী এবং বোনের ওপর। দুর্গাপুরের ফরিদপুরে এই হামলায় ধিক্কার জানিয়ে শনিবার হয়েছে বিশাল মিছিল।
ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সিপিআই(এম) প্রার্থী প্রশান্ত রুইদাস। সিপিআই(এম) নেতৃত্ব জানিয়েছেন, রুইদাসের বাড়িতে চড়াও হয়ে তৃণমূল ও তৃণমূল মদতপুষ্ট বিজেপি বাহিনী পরিকল্পিত হামলা চালায়। হামলায় প্রার্থী প্রশান্ত রুইদাস, তাঁর সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও প্রার্থীর যুবতী বোন রূপা রুইদাস আহত হন।
প্রশান্ত রুইদাস জানিয়েছেন, বোনকে বিবস্ত্র করার চেষ্টা হয়। তাঁর গলার হার ছিনতাই করে নিয়েছে। স্ত্রী পূজা দুষ্কৃতীদের বলেন যে তাঁর গর্ভে সাত মাসের সন্তান রয়েছে। তার তোয়াক্কা করেনি তৃণমূল-বিজেপি’র বাহিনী। পেটে লাথি মারে। তাকে মাটিতে ফেলে পেটানো হয়। সংবাদ মাধ্যমের কয়েকজন প্রতিনিধিদের সামনেই হামলাবাজি চলেছে।
দুষ্কৃতীরা সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও রেয়াত করেনি। তাঁরাও আক্রান্ত হয়েছেন। আহত প্রার্থী প্রশান্ত রুইদাস ও তাঁর স্ত্রী পূজা রুইদাসকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। কালীগঞ্জ গ্রামের সাধারণ মানুষ সঙ্গে সঙ্গে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন। শাসকদলের মাতব্বররা এই ঘটনাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা করে। পুলিশও দলদাসের মতন আচরণ করে পরিকল্পিত হামলাবাজির ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা চালায়। পুলিশী আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ ছড়ায়। প্রার্থী ও তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি পুলিশ। সিপিআই(এম) নেতা পঙ্কজ রায় সরকার, সিদ্ধার্থ বসু, প্রণব পাল সহ অনেকে ছুটে আসেন কালীগঞ্জে। তাঁদেরই উদ্যোগে অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিন হামলাবাজির পরিকল্পিত ঘটনাটি ঘটেছে বেলা ১০টা নাগাদ। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার চলার সময় অতর্কিতে গুণ্ডাবাহিনী চড়াও হয় প্রার্থী প্রশান্ত রুইদাসের বাড়িতে।
সিপিআই(এম) দুর্গাপুর পূর্ব ৩ নম্বর এরিয়া কমিটির উদ্যোগে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিল আছড়ে পড়ে দুর্গাপুর নিউ টাউনশিপ থানায়। পুলিশ বাহিনী থানার গেট অবরোধ করে রেখেছিল। ক্ষুব্ধ মানুষ গেটের বাধা টপকে ঢুকে পড়েন থানার চৌহদ্দিতে। এসিপি তথাগত পান্ডে, সিআই সহ পুলিশের উচ্চ আধিকারিকরা থানায় আসেন। ক্ষুব্ধ মানুষ দাবি জানান, অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। জন অসন্তোষ এতটাই প্রবল ছিল যে, পুলিশের উচ্চ আধিকারিকরা থানা থেকে বের হয়ে ক্ষুব্ধ মানুষের কাছে এসে বলেন, তারা ব্যবস্থা নেবেন। পার্টির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রহৃত প্রার্থী ও তাঁর স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে দুইজন তৃণমূলের এবং একজন বিজেপি’র।
Comments :0