পুলিশের করা মিথ্যা মামলায় সোমবার অবশেষে জামিন পেলেন পার্টি নেতৃবৃন্দ। জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালত সোমবার জামিন মঞ্জুর করে।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী সদস্য জিয়াউল আলম, পার্টি জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য পীযুষ মিশ্র, পার্টির জেলা নেতা তমাল চক্রবর্তী, এবিটিএ জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায়, এবিপিটিএ’র জেলা নেতা জ্যোতি বিকাশ কর- চারদিন জেলে বন্দি এই নেতাদের অভিবাদন জানায় বিশাল জনতা। মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত পার্টি নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গত চার দিন উত্তাল হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা। মিছিল করেছেন শিক্ষক, কর্মচারী, শিল্পী, সাহিত্যিক বিশিষ্ট জনেরা। মুক্তির দাবিতে সোমবার সকালে কবিতা লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক মন্দাক্রান্তা সেন।
১৬ আগস্ট রাতে জলপাইগুড়িতে সিপিআই(এম) জেলা দপ্তরের সামনে দলবল নিয়ে হামলা করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীবাহিনী। ছিল পুলিশ, তবু আক্রমণ হয়। বাধা দেন পার্টিকর্মী, ছাত্র-যুব আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। ওই দিনই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতণ্ডায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতানেত্রীদের বধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে চলে হামলা। আক্রান্ত সিপিআই(এম) নেতা-কর্মীরাই কেবল নন, ছাত্র-যুব এবং শিক্ষক নেতাদের হাসপাতালে নিতে হয়। আক্রান্তদেরই গ্রেপ্তার করে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেয় মমতা ব্যানার্জির পুলিশ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে শামিল সব স্তরের মানুষকে অভিবাদন জানিয়েছেন আলম সহ পার্টি নেতৃবৃন্দ। আইনজীবীদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জামিনের কোনো শর্ত আরোপ করেনি আদালত।
বেলা তিনটের পর মামলাটি আদালতের সেখানে প্রবীণ আইনজীবী জিতেন বোস, শুভ্রাংশু চাকি, দীপক সরকার, সমীর দাস সহ এআইএলইউ এর সমস্ত আইনজীবী ও নির্মল ঘোষ দস্তিদার সহ কংগ্রেস আইনজীবী সেলের সদস্যরা। বিচারক অভিজিৎ গুপ্তাকে সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় ব্যানার্জি বলেন যে পুলিশের মাথায় আঘাত লেগেছে। বিচারক সরকারি আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন সেই পুলিশ অফিসার কি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি? সরকারি আইনজীবী জানান ওই অফিসার নার্সিংহোম থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িতে আছেন। এরপর বিচারক পাঁচ নেতার জামিন মঞ্জুর করেন।
উৎকণ্ঠার সাথে সকাল থেকে কোর্ট চত্বরে উপস্থিত ছিলেন পার্টির জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য, উকিলের পোশাক গায়ে জড়িয়ে এজলাসে উপস্থিত ছিলেন পার্টির জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য আশিস সরকার, প্রাক্তন বিধায়ক ও ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সভাপতি আইনজীবী গোবিন্দ রায়, কোর্ট চত্বরে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) দার্জিলিং জেলা সম্পাদক শ্রমিক নেতা সমন পাঠক সহ নেতৃবৃন্দ।
জেলের গেট থেকে আটক নেতৃবৃন্দকে ফিরে পেয়ে উৎসাহ উদ্দীপনায় ফেটে পারেন পার্টি ও গন সংগঠনের কর্মীরা লাল আবির মাখিয়ে শুরু হয় প্রত্যয়ী মিছিল। শহরের একাংশ ঘুরে মিছিল পৌঁছয় কদমতলা মোড়ে সেখানে সংক্ষিপ্ত সভা করেন পার্টি নেতৃবৃন্দ। পার্টির জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, ‘‘পার্টি নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় ছড়িয়ে পুলিশ জেলের ভেতরে রাখতে চেয়েছিল আরো কিছুদিন। আমরা আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে রাস্তার লড়াইয়ে ছিলাম। অবশেষে প্রশাসন বাধ্য হয়েছে নেতৃবৃন্দকে জেল থেকে ছাড়তে। বৃহৎ পার্টি পরিবারের বাইরেও এই লড়াইয়ে যাঁরা আমাদের সঙ্গে ছিলেন সকলকে অভিনন্দন। এই জয় মানুষের লড়াইয়ের জয়।’’
Comments :0