Nepal PM Meeting

প্রধানমন্ত্রীর নাম নিয়ে বৈঠকে নেপালের রাষ্ট্রপতি, মতবিরোধ বিক্ষোভকারীদের

আন্তর্জাতিক

নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌড়েল চালাচ্ছেন বৈঠক।

অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম নিয়ে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে নেপালের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌড়েল এবং সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেল। 
সেনার এক মুখপাত্র বলেছেন, বিক্ষোভে জড়িত বিভিন্ন অংশের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক চলছে। অচলাবস্থা কটানো যায় কিভাবে তা নিয়েই আলোচনা চলছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার বিষয় নিয়েও চলছে আলোচনা। 
নেপালে কমবয়সীদের বিক্ষোভ, যা ‘জেন জি’ বিক্ষোভ বলে পরিচিত হয়েছে, তা হিংসাত্মক হয়েছে গত দু’দিনে। পোড়ানো হয়েছে মন্ত্রীদের বাসভবন। সংসদ ভবন এবং সচিবালয়ে হামলাও হয়েছে। সক্রিয় হয়েছে হটে যাওয়া রাজতন্ত্রের সমর্থক বিভিন্ন অংশও। 
আবার বিক্ষোভকারীদের একাংশ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন যে তাঁরা  রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছেন না। কর্মহীনতা, স্বজনপোষণ, দুর্নীতির মতো বিষয়গুলি নিয়েই হচ্ছে আন্দোলন। ক্ষোভ তীব্র হয় বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া অ্যাপে সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করায়।
বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়েছেন কেপি শর্মা ওলি। তাঁর দল সিপিএন (এমালে) শান্তিপূর্ণ উপায়ে সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। টালমাটাল পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী পদে বুধবারই ভেসে উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সুশীলা কারকির নাম। তবে কারকির ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন যে বিষোভকারী বা রাষ্ট্রপতি কারও তরফ থেকেই তাঁকে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। 
এদিন বিক্ষোভকারীদের পক্ষে একটি বিবৃতিতে বলা হয় যে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহই যোগ্যতম। তবে তিনি রাজি নন। সুশীলা কারকির বয়স সত্তরের বেশি। ফলে পেশায় প্রযুক্তিবিদ কুলমান ঘিসিংকেই এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী পদে কাজ চালানোর জন্য আবেদন জানানো হবে। 
কোনও কোনও অংশ বলেছে যে নেপালে গভীর বিদ্যুৎ সঙ্কট সামলানোর কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন কুলমান ঘিসিং। তিনি ভারতের ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনলজির ছাত্র ছিলেন। তবে কাকে ঠিক কোন কারণে বাছা হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়।  
তবে সেনার একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে যে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের সময় ছিলেন সুশীলা কারকি। ছিলেন রাজতন্ত্রের সরব সমর্থক হিসেবে পরিচিত দুর্গা পারসাই। 
বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক হিসেবে যাঁর নাম উঠে এসেছে এনজিও ‘হামি নেপাল’-র প্রধান সুধন গুরুঙ এদিন বলেছেন যে আগে সংসদকে ভেঙে দিতে হবে। তারপর অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভা তৈরি করতে হবে। 
বিক্ষোভ এবং সুরক্ষা বাহিনীর গুলিতে মোট ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক। জেল ভেঙে ৯০ বন্দির পালানোর খবরও রয়েছে। নেপালে আটকে পড়া ভারতীয়দের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারাও। 

মন্তব্যসমূহ :0

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন