ফুরফুরা শরিফে বৃহস্পতিবার হামলা চালায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রবীণ পীরজাদা ইব্রাহিম সিদ্দিকীকে লক্ষ করে ঢিল ছোড়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। ঢিলের আঘাতে মাথা ফেটে যায় ইব্রাহিম সিদ্দিকীর। শুক্রবার ইব্রাহিম সিদ্দিকীকে দেখতে ফুরফুরা শরিফে গেলেন সিপিআই(এম)-এর হুগলি জেলা কমিটির সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ।
ফুরফুরা শরিফ পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় বৃহস্পতিবার। সিপিআই(এম) এবং আইএসএফ’র অভিযোগ, পঞ্চায়েতের ২৯টি আসনের মধ্যে ২২টি আসনে তাঁরা এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু গণনায় কারচুপি করে হারানো হয়েছে তাঁদের। মাত্র ৫টি আসনে জয়ী হওয়ার সংশাপত্র আদায় করতে পেরেছেন তাঁরা। এই নির্বাচনকে ঘিরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে। কিন্তু বিচারাধীন হওয়া সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরের এসডিও সম্রাট চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে ফুরফুরায়।
তৃণমূলের এই দখলদারীর বিরোধীতা শুরু করেন ফুরফুরার সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দেয় জনতা। বিক্ষোভ থেকে ৫জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপরেই গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, পঞ্চায়েত অফিস থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত হলেও ফুরফুরা শরিফেও হামলা চালায় পুলিশ। ধর্মস্থানে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর বাড়িতেও হামলা চলে। এরই মাঝে পীরজাদা ইব্রাহিম সিদ্দিকী আক্রান্ত হন।
দেবব্রত ঘোষের কাছে বৃহস্পতিবারের ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেন ইব্রাহিম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, দরবার চলাকালীন সেখানে পুলিশ আক্রমণ চালায়। ধর্মস্থান থেকে পুলিশকে সরে যেতে বলায় তাঁরা আক্রমণ শুরু করে। ভক্তদের মারধোর করা হয়। লাঠিচার্জের পাশাপাশি ইঁট ছুড়তে শুরু করে পুলিশ। একটি ইঁট আমার মাথায় এসে লাগে। আরও কয়েকজন পীরজাদা পুলিশের আক্রমণে জখম হয়েছেন।
ইব্রাহিম সিদ্দিকী পরবর্তীকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ইংরেজ আমল থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফুরফুরা শরিফ। স্বাধীনতা আন্দোলনেও অংশ নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এই প্রথম পুলিশি অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হল ফুরফুরা শরিফের দরবারকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। তাই তিনি পুলিশকে ব্যবহার করে এই ধরণের অন্যায় কাজ করে চলেছেন।
ইব্রাহিম সিদ্দিকী ফুরফুরা শরিফের ভক্তদের আহ্বাণ জানান, দলীয় রাজনীতির ঊর্ধে উঠে এই ধরণের কাজের প্রতিবাদ করতে হবে। ভয় পেলে চলবে না।
এদিন দেবব্রত ঘোষ বলেছেন, সাধারণ মানুষের জনমতকে গায়ের জোরে উল্টে দিয়ে পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। অন্যায় করতে করতে তৃণমূল এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যে স্থান, কাল কিংবা পাত্র ভুলে গিয়েছে তাঁরা। তারফলেই এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী থাকল ফুরফুরা শরিফ।
Comments :0