Saman Pathak

এসআইআর’র বিভ্রান্তি কাটাতে দায়িত্ব নিতে হবে কমিশনকে: সমন পাঠক

জেলা

সাংবাদিক সম্মেলনে সমন পাঠক, রয়েছেন দিলীপ সিং, নুরুল ইসলাম, জয় চক্রবর্তী।

সঠিকভাবে এসআইআর প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ইলেকশন কমিশনের উচিৎ বিএলও’দের নির্দিষ্ট করে নির্দেশ ও গাইডলাইন দেওয়া। কারণ সঠিকভাবে ফরম পূরনের দায়িত্ব বিএলও’দের। কোথায় কে ফরম বিলি করছেন, আদৌ বাড়িতে আসবে নাকি গিয়ে জমা করতে হবে, এসআইআর নিয়ে মানুষের মধ্যে ভোগান্তি ও আতঙ্ক বাড়ছে। বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষেরা সমস্যায় পড়ছেন। এসআইআর প্রক্রিয়ার বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টির ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ইলেকশন কমিশন দায়ি। আচমকাই নিয়ম নীতির বদল ঘটিয়ে সার্কুলার জারি করার দরুন বিভ্রান্তি আরও বাড়ছে। সোমবার দুপুরে সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা কমিটির ডাকে পার্টির জেলা দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে সংগঠনের জেলা সম্পাদক সমন পাঠক এই অভিযোগ করেছেন। প্রথমে বিএলএ দেবার ক্ষেত্রে বুথ ভিত্তিক দেবার নিয়ম থাকলেও পরবর্তীতে বাইরে থেকে বা যেকোন জায়গা থেকেই বিএলএ দেওয়া যাবে বলে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। কার নির্দেশে, কাকে সুবিধা দিতে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে নিয়মের পরিবর্তন ঘটানো হলো প্রশ্ন তোলেন তিনি। 
সমন পাঠক বলেন, বিএলও’রা এতোটা চাপের মধ্যে রয়েছেন যে নিজেদের কাজ বুঝতে পারছেন না। বিএলওদের সঠিকভাবে গাইডলাইন দেবার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। আবার কিছু বিএলও’রা শাসকদলের অফিস থেকেই এসআইআর’র কাজ পরিচালনা করছেন। সাধারণ মানুষকে নির্দিষ্ট জায়গায় এসে ফরম জমা দেবার জন্য বলছে বিএলও’রা। হয়রানি বাড়ছে। শুধু তাই নয়, শিলিগুড়ি মহকুমার গ্রামাঞ্চলের বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূল ও বিজেপি’র ক্যাম্পে এসআইআর ফরম পূরন করা হচ্ছে টাকার বিনিময়ে। স্বচ্ছ এসআইআর করার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিকর বিষয়গুলি দেখা উচিৎ ইলেকশন কমিশনের। তা না হলে আতঙ্কিত বহু মানুষ সঠিকভাবে ফরম ফিলআপ করতে পারবে না। ইতোমধ্যে এসআইআর ফরম ফিল আপে সহায়তা করার জন্য সিপিআই(এম) পক্ষ থেকে ক্যাম্প করা হচ্ছে। ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে প্রকৃত ভোটার একজনের নাম বাদ দেওয়া হলে সিপিআই(এম) তার বিরোধীতা করবে। সাধারন মানুষকে সজাগ থাকার আবেদন জানান তিনি। 
বহু মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ আসছে সিএএ ফরমও একই সঙ্গে পূরনের জন্য তাদের বলা হচ্ছে। সিএএ ফরম পূরন করার জন্য শিলিগুড়িতে বিজেপি’র বিধায়কের আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা প্রসঙ্গে সমন পাঠক এদিন বলেন, ৯ডিসেম্বরের আগেই উনি জেনে গেছেন এসআইআরে কত নাম বাদ পড়বে। তাই জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিয়ে সিএএ ফরম পূরন করার জন্য ঘোষণা করছেন। ২০২৬’র নির্বাচনকে সামনে রেখেই তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও ইলেকশন কমিশন নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিয়েছে। এই সময়ে সিএএ ফরম কোনভাবেই বিলি করা উচিৎ নয়। কোন রাজনৈতিক দল সিএএ ফরম পূরন সহ গোটা প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে পারে না। এটা সম্পূর্ন বেআইনী কাজ। এর বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য ইলেকশন কমিশনকে পার্টির পক্ষ থেক চিঠি দেওয়া হবে। এদিন নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত এমএলএ, এমপি’দের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।  
সিপিআই(এম) নেতা নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন নতুন নতুন চাপের মুখে বিএলও—রা বিদ্রোহ করছেন। শিলিগুড়ি শহরের ভোটারদের মধ্যে ৫০শতাংশের বেশী অবাঙালি। অথচ বাংলায় ভোটার লিস্ট ও ফরম দেওয়া হচ্ছে। ফলে সেই মানুষেরা ফরম পূরনের ক্ষেত্রে হয়রানি হচ্ছেন। মহকুমা শাসককে বিষয়গুলি জানানো সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এক শ্রেণির দালাল টাকার বিনিময়ে রাস্তায় নেমে ভুল ফরম ফিল আপ করে দিচ্ছে। চা বাগান, বস্তি ও পিছিয়ে পড়া এলাকায় বসবাসকারী নিরক্ষর ও অবাঙালী মানুষদের ফরম পূরনের ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা না মেলায় আমাদের সহায়তা করতে হচ্ছে। তৃণমূল আর বিজেপি দুইদলই আরএসএসের শাখা সংগঠনক। ইলেকশন কমিশনের নির্দেশ এই দুই দলই আগাম জানতে পারে। ইলেকশন কমিশন এই দুই দলের স্বার্থে কাজ করছে। প্রয়োজনে আবার এডিও’র সাথে দেখা করে অভিযোগ জানানো হবে। সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন দিলীপ সিং ও শরদিন্দু চক্রবর্তী।

Comments :0

Login to leave a comment