ডাঃ পুলিনবিহারী বাস্কে
আজ ১৫ নভেম্বর। এই দিনটি আদিবাসীদের পাশাপাশি সমস্ত দেশবাসীর জন্য গর্বের দিন, এটি শপথ গ্রহণের দিন, কারণ এই দিনে আদিবাসী সমাজে একজন বীর পুরুষের জন্ম হয়েছিল— নাম বীরসা মুণ্ডা। জন্ম ১৮৭৫ সালের ১৫ নভেম্বর বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বর্তমান ঝাড়খণ্ড রাজ্যের খুঁটি জেলায় অবস্থিত উলিহাতু গ্রামে। পিতা সুগনা মুন্ডা ও মাতা কারমি হাতু। দারিদ্র্যের মধ্যে সাধারণ মুণ্ডা রীতিতে তাঁর শৈশব কেটেছে। তার বাবা-মা কর্মসংস্থানের সন্ধানে বীরসাকে নিয়ে মুম্বাই চলে যান। বীরসা যখন শিক্ষা গ্রহণ করতে চায় তখন মিশনারি স্কুলে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে বাধ্য করা হয়। তাই বীরসার বাবা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। শুধু বীরসাই নন, সেই সময় আদিবাসীরা দ্রুত ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করছিল। যখন বীরসা স্কুলে যেতে শুরু করলেন, বীরসার নাম বিরসা ডেভিড হয়ে গেল। তিনি দেখতে পেলেন স্কুলগুলিতে আদিবাসীদের উপর নানা ধরনের অত্যাচার করা হচ্ছে; তাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং অধিকারকে সম্পূর্ণ চূর্ণ করা হচ্ছে। এই সব দেখে বীরসার হৃদয় গভীরভাবে আহত হয় এবং তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, অনেক হয়েছে তিনি আর কোনও অত্যাচার সহ্য করবেন না এবং তার উপজাতি সমাজের জন্য কাজ করবেন। তিনি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলেন যে ব্রিটিশরা, অর্থাৎ খ্রিস্টানরা, শুধু আদিবাসীদের ধর্ম ও সংস্কৃতি ধ্বংস করছে না, তারা আদিবাসীকে শেষ করছে, তারা আদিবাসীদের পরিচয়টাকেই ধ্বংস করছে। আদিবাসীদের নিজস্ব অন্যান্য ভাষা এবং সংস্কৃতি রয়েছে যা তাদের মূল পরিচয় এবং এই পরিচয়েই আদিবাসীদের একত্রিত করে, সেই কারণেই খ্রিস্টানরা আদিবাসীদের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিজেদের ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে বাধ্য করত। যাতে আদিবাসীরা তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি ভুলে যায় এবং তাদের জল, বন এবং জমি সহজেই দখল করা যায়। কিন্তু বীরসা তা হতে দেননি। তিনি পড়াশোনা ছেড়ে গ্রামে গিয়ে তাঁর সম্প্রদায়ের মানুষকে একত্রিত করে এবং সচেতনতা তৈরি করতে শুরু করেন।
শীঘ্রই, দরিদ্রদের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা এবং সেবা ভাবনার কারণে বীরসা সমাজে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। লোকেরা তাঁকে ‘ধরতি আবা’ অর্থাৎ পৃথিবী পিতা বলে ডাকতে শুরু করে। ধর্মীয় ও সামাজিক আন্দোলনে তিনি একজন আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন এবং তাঁর অনুগামীরা 'বীরসাইত' নামে পরিচিত হয়। তিনি মুণ্ডা এবং অন্যান্য উপজাতিদের সংগঠিত করে তাদের সামাজিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য কাজ করেন।
১৮৯৫ সালে ব্রিটিশদের শোষণমূলক নীতি এবং জোরপূর্বক শ্রমের বিরুদ্ধে তিনি "উলগুলান" বা ‘মহা বিদ্রোহ' নামে এক বিপ্লবী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এবং তিনি স্লোগান তুলেছিলেন— ‘‘আবোয়াঃ’’ রাজ এতে জানা, মহারানী রাজ টুণ্ডু জানা''। এর অর্থ, রানী শাসনের অবসান ঘটাও এবং উপজাতি শাসন প্রতিষ্ঠা করো।
বিদ্রোহ
ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে নিজস্ব অধিকার রক্ষার জন্য তিনি আদিবাসীদের একত্রিত করেন এবং তীর ধনুক নিয়ে বিদ্রোহে অংশ নেন। এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য, ব্রিটিশ সরকার বীরসা মুণ্ডাকে বেশ কয়েকবার কারারুদ্ধ করে এবং তার শিষ্যদের উপর অত্যাচার তীব্র করে, তবুও বীরসার বিদ্রোহ থামাতে ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত, বীরসার লোকদের প্রলুব্ধ করে সে বীরসাকে গ্রেপ্তার করে। ১৯০০ সালে ৯ জুন, মাত্র ২৫ বছর বয়সে রাঁচির এক কারাগারে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যু একটি রহস্যময় ঘটনা ছিল।
জাতীয় নায়ক
তিনি ছিলেন একজন উপজাতি স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজ সংস্কারক এবং ধর্মীয় নেতা। তিনি আদিবাসীদের শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং তাদের অধিকার ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। মুণ্ডা সমাজের উন্নতি ও সমাজ সংস্কৃতি, ভাষা উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তিনি বুঝেছিলেন ধর্ম ও সংস্কৃতির উপর আঘাত, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফল, শোষণের মাত্রা বৃদ্ধির (কর বৃদ্ধি) ফলে মুণ্ডা সম্প্রদায়ের বড় ক্ষতি হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন 'আবোয়াঃ দি শম আবোয়াঃ রাজ', যার অর্থ আমাদের দেশ, আমাদের শাসন।
এর ফলে বড় প্রাপ্তি হয়েছিল CNT (Chhota Nag Pur Tenancy Act)। ১৯০৮ সালে সিএনটি চালু করতে বাধ্য হয়। 'ছোটনাগপুর টেনেন্সি অ্যাক্ট', ছিল ব্রিটিশদের দ্বারা ১৯০৮ সালে প্রণীত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমি আইন। এটি মূলত ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে, যা বর্তমানে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের একটি বড় অংশ, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকার রক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
আইনটির প্রধান বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্যগুলি ছিল—
১. আদিবাসী ভূমি হস্তান্তর নিষিদ্ধকরণ (Land Alienation Ban) - এই আইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান ছিল যে, তফসিলি উপজাতিদের (Scheduled Tribes/Adivasis) জমি অ-উপজাতিদের কাছে হস্তান্তর (বিক্রি বা অন্য কোনও উপায়ে) করা যাবে না। এর মূল লক্ষ্য ছিল জমিদার, মহাজন এবং বহিরাগতদের (যারা 'দিকু' নামে পরিচিত) দ্বারা আদিবাসীদের জমি শোষণ ও দখল করা থেকে রক্ষা করা।
২. উলগুলান বিদ্রোহের প্রতিক্রিয়ায় তৈরি এই আইনটি সরাসরি বীরসা মুণ্ডার উলগুলান-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল ছিল। মুণ্ডা বিদ্রোহে আদিবাসীরা তাঁদের চিরাচরিত 'খুঁটকাঠি' (গোষ্ঠীগত বন পরিষ্কার করে চাষের উপযোগী করার অধিকার) এবং অন্যান্য ভূমির অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।
এই আইন সেই বিদ্রোহের পর আদিবাসীদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে এবং তাঁদের অধিকারের কিছু অংশ আইনি স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিল। বীরসা মুণ্ডা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একজন গুরুত্বপূর্ণ আদিবাসী নেতা এবং জাতীয় নায়ক হিসাবে স্বীকৃত পার্লামেন্ট ভবনের সেন্ট্রাল হলে আদিবাসী বীর হিসেবে যার ছবি রয়েছে। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, বিমানবন্দর, ইত্যাদি বীরসা মুণ্ডার নামে নামকরণ করা হয়েছে। তাঁর জন্মদিবস এই কারণেই জনজাতি গৌরব দিবস হিসেবে পালিত হয় ।
বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপি আরএসএস দ্বারা পরিচালিত সরকার এবং ব্রিটিশদের মধ্যে কোনও পার্থক্য ছিল না। ব্রিটিশ শাসনামলেও আদিবাসী, দলিত, উঁচ-নিচ, সাদা-কালোদের নামে তাদের ইচ্ছামতো অত্যাচার চালানো হতো। আজও দেশের সরকার ধর্মের নামে রাজনীতি করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে, নারীদের উপর নির্মম নির্যাতন করা হচ্ছে, আর যখন সংবিধান বাধাগ্রস্ত হয়, তখন তারা সেটাও ধ্বংস করতে চায়। যার মূল উদ্দেশ্য ভারতে হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। মনুবাদী ব্যবস্থা কায়েম করা। নয়া উদারবাদী আর্থিক নীতি গ্রহণ করার ফলে, ভারতের আদিবাসী জনগণ ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন। ভারতে ৮.৬ শতাংশ আদিবাসী মানুষের বসবাস। লর্ড কর্নওয়ালিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত (১৭৯৩) স্থাপনের পর থেকে সমাজের এই অংশের মানুষ বিদ্রোহে শামিল হলো। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামে আদিবাসীদের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে আছে। যেমন 'সাঁওতাল বিদ্রোহ', ‘বাবা তিলকা মাঝি বিদ্রোহ', চুঁয়াড় বিদ্রোহ', 'ভূমিজ বিদ্রোহ', কোল বিদ্রোহ, 'ভিল বিদ্রোহ,' 'নাগা বিদ্রোহ' ও ‘রলি আদিবাসী বিদ্রোহ' ইত্যাদি অসংখ্য বিদ্রোহ রয়েছে। অতএব, সংবিধানে আদিবাসীদের জন্য একটি পৃথক স্থান রয়েছে। তারা সমাজের সবচেয়ে শোষিত এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণি, তাই তাদের পৃথক অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এই অধিকারগুলি লঙ্ঘন করছে।
ভারতের আদিবাসী এলাকা বন, জঙ্গল, পাহাড় ও খনিজ সম্পদে ভরপুর। কেন্দ্রীয় সরকার কর্পোরেট স্বার্থবাহী নীতি গ্রহণ করার ফলে এই সমস্ত অঞ্চল থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আমাদের রাজ্যে বীরভূম জেলায় দেওচা পাঁচামী প্রকৃষ্ট উদাহরণ রয়েছে। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়, টিলাবনি পাহাড়, বিক্রি করার প্রক্রিয়া চলছে।
বিজেপি-আরএসএস’র বিভাজনের রাজনীতি
বিজেপি-আরএসএস’র বিভাজনের রাজনীতির ফলে গরিব শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে চরম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে, কখনো জাত ধর্ম সম্প্রদায় ভাষা সংস্কৃতি পরিচিতি সত্তার রাজনীতি, পরম্পরা ইত্যাদির ক্ষেত্রে শ্রেণি ঐক্য বিনষ্ট হচ্ছে। আদিবাসীদের স্বীকৃত ধর্ম নেই। বর্তমানে তা নিয়েও রাজনীতি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার সেন্সাস কলমে হিন্দু, ইসলাম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ইত্যাদি ধর্ম উল্লেখ থাকলেও আদিবাসীদের কোন উল্লেখই নেই। তাই আদিবাসীদের ন্যায্য দাবি সারনা ধর্ম, এসটি, জনজাতি, আদিবাসী বিশ্বাস উল্লেখ করা প্রয়োজন।
রাজ্যে ব্যাপকভাবে ও আদিবাসীদের জাল আদিবাসী শংসাপত্র বিতরণ করা হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে। এটাও সরকারের শাসক দলের দুর্নীতির করার বড় জায়গা হয়েছে। আদিবাসী সংগঠনগুলি জাল শংসাপত্র নিয়ে ব্যাপকভাবে আন্দোলন করছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে।
সংবিধানের ৩৪২নম্বর অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে— আদিবাসীদের রাজ্য ভিত্তিক সিডিউল ট্রাইব তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া রয়েছে। রাজ্যের রাজ্যপাল বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী সম্প্রদায় সিআরআই এর মাধ্যমে বিধানসভায় প্রস্তাব গ্রহণ করে, আরজিআই’র নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করে তালিকা তৈরি করা হয়। প্রতি ১০ বছর অন্তর এই তালিকা সংশোধন করতে পারে একমাত্র সংসদ।
এই কমিটির প্রধান সুপারিশ ছিল, কোনও সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য নিম্নলিখিত পাঁচটি মানদণ্ড বিবেচনা করা উচিত। লোকুর কমিটির সুপারিশকৃত পাঁচটি মূল মানদণ্ড হলো:
১) আদিম বৈশিষ্ট্য— তাঁদের মধ্যে আদিম জীবনযাত্রার কিছু নিদর্শন বা বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। ২) স্বতন্ত্র সংস্কৃতি— তাঁদের নিজস্ব, সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা একটি সংস্কৃতি থাকতে হবে (যেমন ভাষা, রীতিনীতি, বিশ্বাস, শিল্পকলা)। ৩) ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা— অন্যান্য বৃহত্তর জনগোষ্ঠী থেকে ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন বা দূরে বসবাস করতে হবে। ৪) সংকোচশীলতা— বৃহত্তর সমাজের সাথে মিশে যেতে বা যোগাযোগ রাখতে সাধারণভাবে তাদের মধ্যে একটি সংকোচ বা অনীহা থাকতে হবে। ৫) পশ্চাদপদতা— শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে চরম পশ্চাদপদতা থাকতে হবে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলি হলো, তফসিলি উপজাতিদের তালিকা তৈরি করার সময় সেই সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত না করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাদের জনসংখ্যা কোনো রাজ্যে ১০০ বা তার কম এবং যারা সাধারণ জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে গেছে। কমিটি কিছু সম্প্রদায়কে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নমঃশূদ্র, রাজবংশী, শুঁড়ি এবং ধোবা সহ তফসিলি জাতি বা উপজাতি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল, কারণ তাদের মতে তারা যথেষ্ট উন্নত হয়েছে বা তাদের ক্ষেত্রে অস্পৃশ্যতা প্রথা আর কার্যকর নয়। তবে এই সুপারিশের তীব্র প্রতিবাদ হয়েছিল। তফসিলি জাতিদের তালিকাভুক্তির জন্য 'চরম সামাজিক, শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক পশ্চাদপদতা' এবং 'অস্পৃশ্যতার কারণে সৃষ্ট পশ্চাদপদতা'-কে মূল মানদণ্ড হিসাবে রাখা হয়।
এই সুপারিশগুলি পরবর্তীকালে ভারতে তফসিলি উপজাতিদের শ্রেণিকরণের ভিত্তি হিসেবে গৃহীত হয়, তবে সময়ের সাথে সাথে এগুলোর প্রাসঙ্গিকতা এবং প্রয়োগ নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে। গত বছরগুলি থেকে ১৫ নভেম্বর জনজাতি গৌরব দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে কিন্তু আদিবাসী মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের ক্ষেত্রে বঞ্চনা ঘটেছে। ট্রাইবাল সাব প্লানের অর্থ বরাদ্দ কমেছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ কমেছে। আদিবাসী স্কুল, হস্টেল কেন্দ্রীয় স্কুল, একলব্য মডেল স্কুলগুলো দুরবস্থায় রয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী গাল ভরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আদিবাসীদের বিভ্রান্ত করছে। রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের টাকা বরাদ্দ বন্ধ করেছে রাজ্য সরকার এই অজুহাতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। হাইকোর্ট ১০০ দিনের কাজ চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট ১০০ দিনের টাকা বরাদ্দ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদিম জনজাতি গোষ্ঠীগুলির অবস্থা খুবই করুন। দেশে ও রাজ্যে মহিলা সহ আদিবাসী মহিলাদের উপর অত্যাচার, খুন, ধর্ষণের সংখ্যা ক্রমবৃদ্ধি ঘটেছে। সরকার নির্বিকার। ফলে বীরসা মুণ্ডার লড়াই সংগ্রাম স্মরণে রেখে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন তথা শ্রেণি আন্দোলন সংগঠিত করার অঙ্গীকার করতে হবে, তবেই বীরসা মুণ্ডার জন্মজয়ন্তী পালন সার্থক হবে।
Comments :0