প্রবীর দাস: বাদুড়িয়া
বাধা দিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন। সমাবেশ সফল যাতে না হয় তার জন্য চলেছে অসহযোগিতা। তবে প্রবল উৎসাহ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হলে বিক্ষোভ সভায়। প্রতিবাদ জানালেন পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দেদার লুটে।
শনিবার বাদুড়িয়ার এই সমাবেশে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বললেন, ‘‘বোমা বন্দুক উঁচিয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতলেও মানুষকে ভয় পাচ্ছে। ভয় পাচ্ছে বলেই আমাদের কোথাও মিছিল সভা সমাবেশে পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না। আমরা মিছিল সমাবেশ করলেই আমাদের নামে কেস দিচ্ছে, আর রাজভবনের সামনে তৃণমূলের সভার জন্য পুলিশ মঞ্চ সাজিয়ে দিচ্ছে।’’
সেলিমের স্পষ্ট ঘোষণা, ‘‘বোমা বন্দুক দেখিয়ে, বামপন্থীদের সার্টিফিকেট কেড়ে নিয়ে, মানুষকে মারধর করে তৃণমূল পঞ্চায়েত দখল করেছে, কিন্তু মানুষ সব মনে রেখে দিচ্ছে, এক মাঘে শীত যাবে না।’’
ভোট লুট, গণনায় কারচুপি, খুন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এদিন ধিক্কার মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছিল সিপিআই(এম)’র বাদুড়িয়া ১ এবং ২ এরিয়া কমিটি। বাদুড়িয়া ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাদুড়িয়া পৌরসভার ১৭টি ওয়ার্ড থেকে প্রতিবাদী মানুষজন পাঁচটি মিছিল করে বাদুড়িয়া শহরে সমাবেশ যোগ দেন।
সেলিম বলেন, ‘‘আমরা শান্তি চাই। আমরা দাঙ্গা, সন্ত্রাস চাই না। ৩৪বছর এই রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ছিল, রাজ্যে আরএসএস বাড়তে পারেনি। তৃণমূল এসে এই রাজ্যে বিজেপি’কে জায়গা করে দিয়েছে।’’
আবহাওয়ার প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে যাশাইকাটি হাইস্কুল সংলগ্ন শাঁড়াতলা মোড় থেকে মানুষের দীর্ঘ মিছিল সমাবেশে আসে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন মহম্মদ সেলিম, মহম্মদ সেলিম গায়েন, শঙ্কর ঘোষ প্রমুখ।
অন্যদিকে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পলাশ দাশ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নারায়ণপুর থেকে আরেকটি মিছিল এবং পার্টির উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী, রাজু আহমেদের নেতৃত্বে গোকনার মোড় থেকে আরেকটি মিছিল এবং ইছামতি নদী পেরিয়ে লক্ষ্মীনাথপুর ও কাজীর দোকান মোড় থেকে একটি মিছিল আসে সমাবেশস্হলে। লাল ঝাণ্ডায় সাজানো মিছিলে অবরুদ্ধ হয়ে যায় বাদুড়িয়া শহরের তিনটি রাস্তা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্টি নেতা অনিমেষ মুখার্জি। মহম্মদ সেলিম ছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পলাশ দাশ, মৃণাল চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিম গায়েন ও বিশিষ্ট আইনজীবী শামিম আহমেদ।
ভিড়ে ঠাসা সমাবেশে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘দিল্লিতে মোদী লুট করছেন আর রাজ্যে মমতা ব্যানার্জি লুট করছেন। আর লুটের রাজত্ব কায়েম রাখতে হিন্দু, মুসলমান তপশিলি জাতি, আদিবাসী কুড়মী এমন নানা নামে মানুষকে ভাগ করে রাখছে। মানুষের শক্তিকে দুর্বল করে রাখছে। আমাদের কাজ হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকে একজোট করে কেন্দ্রের সরকার থেকে মোদী আর রাজ্যের সরকার থেকে মমতা ব্যানার্জির দলকে তাড়ানো।’’
Comments :0