KARNATAKA FOOD SCHEME

গরিবের জন্য খাদ্য প্রকল্পে কর্ণাটককে শস্য বিক্রি বন্ধ কেন্দ্রের

জাতীয়

ছবি টুইটার থেকে।

খোলা বাজার বিক্রি প্রকল্পে বেসরকারি ব্যবসায়িক সংস্থাকে খাদ্যশস্য বিক্রি করবে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া। কিন্তু সুলভে খাদ্য সরবরাহে রাজ্য সরকারকে শস্য বিক্রি বন্ধ করেছে কেন্দ্র। বুধবার এই মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। 

সিদ্দারামাইয়া তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের চিঠিও তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক কারণে নেওয়া। কংগ্রেস সরকার যাতে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের প্রকল্পকে বন্ধ করানো যায়। বেসরকারি ব্যবসায়ীদের শস্য বিক্রি করা যায় ফুড কর্পোরেশনের গুদাম থেকে। অথচ রাজ্য সরকারকে বিক্রি করা যায় না!

খাদ্য মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত এবং সিদ্দারামাইয়ার অভিযোগ ঘিরে জাতীয় স্তরে উত্তাপ তৈরি হয়েছে। কর্ণাটকের নির্বাচনে সদ্য হার হয়েছে বিজেপি’র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লাগাতার প্রচার সত্ত্বেও আসনসংখ্যায় নজির গড়ে সরকার গড়েছে কংগ্রেস। কর্ণাটকের ফলাফল জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে, পর্যবেক্ষকদের একাংশ তা মনে করছেন। কংগ্রেসের লক্ষ্য হলো লোকসভা নির্বাচনে আগে এ রাজ্যে যেন কেউ প্রতিশ্রুতি ভাঙার অভিযোগ সরকারের বিরুদ্ধে তুলতে না পারে। সে কারণে প্রতিশ্রুতি রূপায়নের সূচি ঘোষণাও করে রেখেছেন সিদ্দারামাইয়া।  

কর্ণাটকের নির্বাচনে জনকল্যাণের পাঁচ দফা প্রতিশ্রুতি সামনে রেখে ভোট লড়েছিল কংগ্রেস। তার মধ্যে মহিলাদের বিনামূল্যে বাসে যাতায়াতের মতো প্রকল্প চালু হয়ে গিয়েছে। পরের সিদ্ধান্ত রাজ্যে দরিদ্র পরিবারে মাসে ১০ কেজি করে শস্য বিনামূল্যে দেওয়ার প্রকল্প চালুর কথা জানায় কংগ্রেস সরকার। 

কর্ণাটক সরকার জানিয়েছে, ফুড কর্পোরেশনের কাছে ২.২৮ লক্ষ টন শস্য কেনার আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার। ফুড কর্পোরেশন রাজিও হয়। ২.২২ লক্ষ মেট্রিক টন শস্য বিক্রি করবে বলে ১২ জুন ফুড কর্পোরেশন চিঠিও দেয়। গত মঙ্গলবার আরেকটি চিঠিতে জানানো হয় যে কেন্দ্রীয় খাদ্য, ক্রেতা বিষয়ক এবং গণবন্টন মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে ফুড কর্পোরেশনের গুদাম থেকে চাল ও গম বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।   

খাদ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ছোট ছোট বেসরকারি ক্রেতারা এফসিআই’র গুদাম থেকে কিনতে পারবে। কিন্তু রাজ্য সরকারের মতো বড় ক্রেতাকে বিক্রি করা হবে না। দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ফুড কর্পোরেশনের গুদামে মজুতের স্তর যাতে নির্দিষ্ট মাত্রায় বজায় থাকে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হয়েছে। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। 

বহু অংশই কেন্দ্রের ব্যাখ্যায় সহমত নয়। ফুড কর্পোরেশনের গুদামে উদ্বৃত্ত সঞ্চয় অথচ খাদ্য বাজারে সঙ্কটের বিপরীত চিত্র নিয়ে বারবার বামপন্থীরা সরব হয়েছেন। বিরোধী বিভিন্ন দলই খাদ্য বাজার বেসরকারি খাদ্য কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা বলেই বিষয়টিকে আখ্যা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় গুদামে মজুতে সঙ্কটের কোনও তথ্য কেন্দ্র হাজিরও করেনি। বিভিন্ন অংশই বলছে যে দরিদ্র মানুষ বাড়তি শস্য পেলে বরং বাজার থেকে চড়া হারে খাদ্যশ্য কিনতে হতো না। কারণ কেন্দ্রীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে বরাদ্দ গুরুত্বপূর্ণ হলেও প্রয়োজনের সবটুকু নয়। নরেন্দ্র মোদী সরকারের আচরণকে খারাপ মানের রাজনৈতিক প্রতিহংসা বলেও অভিহিত করছে বিভিন্ন অংশ। 

Comments :0

Login to leave a comment