SALIM INDIA MAMATA

মমতা ব্ল্যাকমেল করছেন ইন্ডিয়া মঞ্চের মধ্যে থেকে

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

রামশঙ্কর চক্রবর্তী: তমলুক 
 

ইন্ডিয়া মঞ্চের মধ্যে থেকে ব্ল্যাকমেলের রাজনীতি করছেন মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর একথা বলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, বামপন্থীরা প্রথম থেকেই বলেছে, ইন্ডিয়া মঞ্চ বিজেপি-বিরোধী প্রচারের জন্য। যেভাবে সারা দেশে বিজেপি ভয়ঙ্কর উগ্র ধর্মীয় রাজনীতি আমদানি করেছে, তার বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিবাদ করতে হবে। মমতা ব্যানার্জির মতো কিছু নেতা-নেত্রী শুধু বলছেন, আসন সমঝোতা করে নাও, আর একটা প্রধানমন্ত্রীর মুখ ঠিক করে নাও। সিপিআই(এম) বা বামপন্থীরা প্রথম থেকেই বলেছে, নেতা নয়, নীতি ঠিক করতে হবে। অন্যান্য দলগুলি সম্মতি জানিয়েছে। সেই মতোই সারা দেশে প্রতিবাদ সংগঠিত হচ্ছে। আর মমতা ব্যানার্জি বলছেন, আসন সমঝোতা না হলে প্রতিবাদে নামবে না তৃণমূল। এটাকে ব্ল্যাকমেলের রাজনীতি বলে, যা তৃণমূলের অভ্যাস। সংসদকে কার্যত বিরোধীশূন্য করে বিল অনুমোদন করানো হচ্ছে। এভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার প্রতিবাদে শনিবার কলকাতায় মিছিল সংগঠিত করবে বামফ্রন্ট। 
এদিন সিপিআই(এম) পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির বর্ধিত সভায়  উপস্থিত ছিলেন মহম্মদ সেলিম। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুজন চক্রবর্তী, অনাদি সাহু, নিরঞ্জন সিহি, হিমাংশু দাস, ইব্রাহিম আলি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। বর্ধিত অধিবেশনের বিরতিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মহম্মদ সেলিম স্পষ্টভাবেই বলেছেন, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সমস্ত বামপন্থী শক্তি ও তৃণমূল-বিজেপি’র বিরোধী শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে সিপিআই(এম) লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করবে। কেন্দ্রের সরকার যেভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করছে, একই কায়দায় এরাজ্যেও তৃণমূল বিরোধীদের প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না। মিথ্যা মামলা, সন্ত্রাস করছে তৃণমূল বাহিনী। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে একই প্রচার করে লড়বে সিপিআই(এম) সহ বামপন্থীরা। 
চাকরিপ্রার্থীদের কালীঘাটে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, সবেমাত্র কালীঘাটের গলি পর্যন্ত পৌঁছেছেন ওঁরা। এরপর বাড়িতে যাবেন ওঁরা। যদি সিবিআই কিছু না করে, তারা যদি না পৌঁছায়, তাহলে চাকরিপ্রার্থীরা তথা বেকার যুবকরা নিজেদের হকের দাবি নিয়ে ওখানে পৌঁছাবেন। সরকারি কর্মচারীদের নবান্নে পৌঁছানোর বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে মহম্মদ সেলিম বলেন, এই রাজ্যে যেভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে, কিছু দিন আগেও যারা তৃণমূলের ঝাণ্ডা নিয়ে ঘুরত, তারাও বুঝতে পারছে, তারাও বলছে, এটা অন্যায়। মানুষের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, প্রতিবাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে সিপিআই(এম) ও বামপন্থী গণসংগঠনগুলির উপর আক্রমণ হয়েছিল। তারপর যে কেউ, সে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক অথবা মাদ্রাসা বা উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী থেকে সরকারি কর্মচারী হোন, তাঁদের হাইকোর্টে গিয়ে অনুমতি নিতে হচ্ছে প্রতিবাদ করার। তারপরেও পুলিশ বাধা দিচ্ছে। আদালতকেও মানছে না এই সরকার।  যেমন দিল্লির সরকার করছে, কাউকেই কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না, প্রতিবাদ করলে বহিষ্কার। এরাজ্যেও একই কায়দা। সুতরাং সরকারি কর্মচারী বা সাধারণ মানুষ নিজেরা নিজেদের মতো প্রতিবাদ করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। 
সেলিম এদিন বলেন, মমতা ব্যানার্জি বলছেন, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, তাও তিনি না কি টাকা দিচ্ছেন। কার টাকা কে দেয়? মমতা বা মোদী কি বাড়ির টাকা কর্মচারীদের দেন? মানুষের করের টাকা খরচ হয় বিভিন্ন উন্নয়ন বা সরকারি কর্মচারীদের বেতন খাতে। মানুষের সেই করের টাকা নিয়েই এরাজ্য বা দিল্লির শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা আমোদ-প্রমোদ করেন। এদিকে, মৃত মানুষের নামে বালি খাদান চলার প্রশ্নে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, মৃত মানুষের নাম ভোটার তালিকায় আছে। রেশনও তোলা হচ্ছে। ঘরের টাকা, ১০০ দিনের কাজের টাকা তোলা হচ্ছে। তৃণমূল যেভাবে জালিয়াতি করছে, এরপর না দেখা যায়, মৃত মানুষের নাম ক্যাবিনেটেও রয়েছে!

Comments :0

Login to leave a comment