বিশ্বনাথ সিংহ
পঞ্চায়েত ভোটে খুন হয়েছিলেন কমরেড মনসুর আলম। শহীদকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চোপড়া ব্লকের গেন্দাগছ এসএসকে ময়দানের সমাবেশে নামল মানুষের ঢল। মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিলে ১৯ বছরের এই যুবককে গুলি করা হয়েছিল। সাত দিন বাদে মারা গিয়েছিলেন তিনি। দোষীদের বিচারের দাবিতে সরব হয়েছে সমাবেশ।
সমাবেশে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, তৃণমূল বিজেপির বিষদাঁত ভেঙে দিয়েছে আজকের সমাবেশ। ১২ বছরে এত অরাজকতা করেছে তৃণমূল এখন ওরা ভয় পেয়েছে। ওরা ভয় পেয়েছে বলেই পঞ্চায়েতে ভোটে প্রার্থীদের আক্রমণ করেছে।
তিনি বলেছেন মোদীর বিজেপি এবং মমতার তৃণমূল, দু’দলই চোর এবং লুটেরা। এক চোরের বিরুদ্ধে লড়াই আরেক চোরকে নিয়ে হয় না। সংখ্যালঘু আদিবাসী প্রান্তিক গরিব মানুষ নিজেদের অধিকারের জন্যে লড়াই করছেন। তাঁদেরকে নিয়েই হবে লোকসভা ভোট। তৃণমূল বলছে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। এটাও একটা নাটক। ইডি, সিবিআই ছাড় না দিলে চোর ভাইপো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারত না। এটা আসলে ওদের সেটিং।
খুনিদের গ্রেপ্তার এবং শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সরব হয়েছে সমাবেশ। পঞ্চায়েতে ভোট হয়নি চোপড়ায়। কারণ মনোনয়ন জমা আটকাতে সশস্ত্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল। মনোনয়ন জমা দিতে মিছিল করে যাচ্ছিলেন প্রার্থীরা। ছিলেন কমরেড মনসুরও। গত ১৫ জুন সেই মিছিলেই চলে গুলি। এখন বিরোধীশূন্য চোপড়ায় গ্রামের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ লক্ষ লক্ষ টাকায় বিকোচ্ছে। চোপড়ার ডানকেনের বাগান লুট করেছে, বাগানের কারখানার ইট বালি খেয়েছে, চোপড়া বাগান লুট করেছে, কাঁচা চা পাতা খেয়েছে। এখন আস্ত পঞ্চায়েত খাচ্ছে।
সেলিম বলেন, চোপড়ার ১৯ বছরের যুবক কমরেড মনসুরকে খুন করেছে। রাজ্যে এরকম ৬০ জনকে খুন করেছে। বামপন্থীরা শহীদকে শ্রদ্ধা জানাতে সমাবেশ করে। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুট করতে গিয়ে তৃণমূলের কর্মীরাও খুন হয়েছেন। তৃণমূল নিজের কর্মীদেরও মনে রাখে না। এটাই ফারাক।
মনসুর আলমকে চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ৭ দিন বাদে গেন্দাগছ গ্রামের বাড়িতে ফিরেছে কফিন বন্দি নিথর দেহ। শহীদ কমরেড মনসুর আলমের মা আজও কাদঁছেন। মা মারিয়ম বেগমও মঞ্চে ছিলেন। সন্তানহারা মা-কে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়েছেন বাবা মৈনুল হক। কমরেড মসনুর আলমের দাদু গিয়াসুদ্দিনও দাবি করেছেন, খুনিদের এর বিচার চাই। নাতির খুনে অভিযুক্ত দোষীরা বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার বলেন, চোর খুনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকবে। পার্টির জেলা সম্পাদক আনোয়ারুল হক, প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অশোক রায়ও বক্তব্য রাখেন।
Comments :0