একটানা পদযাত্রা নয়। পদযাত্রায় মাঝে হবে সমাবেশ, বাইক মিছিল, জনসংযোগ। নারী নিরাপত্তা, নদী ভাঙন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান সহ জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যাকে কেন্দ্র করে আগামী ২৯ নভেম্বর তুফানগঞ্জ থেকে শুরু হচ্ছে সিপিআই(এম)’র ডাকে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন আগেই। মঙ্গলবার ২৯ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই যাত্রার সম্পূর্ণ সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে বামপন্থী যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই’র ডাকে ‘ইনসাফ যাত্রা’ হয়েছে কোচবিহার থেকে কলকাতা পর্যন্ত। মূল যাত্রার পাশাপাশি হয়েছে সমাবেশ। ব্রিগেডে হয়েছিল মহাসমাবেশ।
‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’-র সমাপ্তিতে উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে এসে শেষ হবে সেই যাত্রা। সেখানেই হবে সমাবেশ।
২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ‘চোর ধরো জেল ভরো’ বা ‘গ্রাম জাগাও চোর তাড়াও’-র মতো কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল রাজ্যে। তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন মানুষ। তৈরি হয়েছিল গণ প্রতিরোধ।
একাধিক জায়গায় প্রশাসনকে ব্যবহার করে তৃণমূল নির্বাচনে জয়ী হলেও সেই আন্দোলন দেখিয়েছিল গ্রাম বাংলার মানুষের সমর্থন বামপন্থীদের প্রতি।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, মন্দির-মসজিদ থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তার মতো জীবিকার এবং জীবনের বিষয় রাজনীতির কেন্দ্র করতে চাইছি।
সেলিম বলেন, বিশ্বাস রয়েছে মানুষের সাড়া পাবো। সাড়া অতীতে পেয়েছি। বাংলাকে বাঁচাতে হলে বামপন্থার পুনরুত্থান দরকার। তা ঘটছে, চলমান এই প্রক্রিয়া। এই কর্মসূচি সেই প্রয়াসের একটি অংশ।
পরিযায়ী শ্রমিক, বিড়ি শ্রমিক, গিগ শ্রমিক, রেগা শ্রমিকের দাবি থাকবে কর্মসূচিতে। থাকবে ক্ষুদ্র ঋণের জাল থেকে মহিলাদের বাঁচানোর দাবিও।
উল্লেখ্য, রাজ্য জুড়ে একের পর এক যেই নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তার বিরুদ্ধে এই পদযাত্রা থেকে সরব হবে সিপিআই(এম)।
সিপিআই(এম) জানিয়েছে, এই কর্মসূচির মধ্যেই বিভিন্ন অংশের জনতার সঙ্গে যোগাযোগও করা হবে। চলবে মতবিনিময়।
সূচি অনুযায়ী, ১৪ ডিসেম্বর যাত্রার একেবারে শেষের দিকে উত্তর ২৪ পরগনা পরিক্রমা করা হবে। সেই সময় নৈহাটি অঞ্চলে সেই চটকলগুলির শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় হবে, তাঁরা শামিলও হবেন কর্মসূচিতে। প্রতিরোধের রূপরেখা তৈরি হবে। আবার ১৫ ডিসেম্বর আমডাঙায় একটি বেহাল গ্রামীণ স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্রদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। ওই একই দিনে অশোকনগরে নেতৃবৃন্দ দেখা করবেন আরজি কর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের সাথে।
সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দের কথায় এই যাত্রা শুধুমাত্র একটি কর্মসূচি নয়। বাংলায় বামপন্থার পুনরুত্থানের লক্ষ্যের একটি অংশ। মানুষের সঙ্গে বামপন্থীদের সংযোগ নতুন করে দৃঢ় করা হবে এই যাত্রার মাধ্যমে। বিজেপি এবং তৃণমূলের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির হাত থেকে বাংলাকে বাঁচাতে এবং বাংলার সংস্কৃতি, সাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে এই যাত্রা।
Comments :0