গায়ে সাদা জামা। মাথায় সাদা টুপিতে আঁকা লাল তারা। সবার হাতে বড় সাদা ঝান্ডা। যেই ঝান্ডা রাজ্যের কারখানার জন্য পদযাত্রা করেছিল, বক্রেশ্বর তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে জন্য রক্ত দিয়েছিল। সেই সংগঠন ডিওয়াইএফআই এবার কোচবিহার থেকে কলকাতা পর্যন্ত পদযাত্রা শুরু করলো কাজের দাবি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারকে সুনিশ্চিত করতে।
কোচবিহারের সিতাইয়ে কয়েকদিন আগে একটি প্রস্তুতি সভায় হামলা চালিয়েছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতি বাহিনী। মানুষের প্রতিরোধের সামনে পড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল তারা। আজ সেই কোচবিহারের মাটিতে দাঁড়িয়ে মীনাক্ষী মুখার্জি, কলতান দাশগুপ্তরা জানিয়ে দিলেন বাঁধা যদি দেওয়া হয় তবে ইনসাফ যাত্রা প্রতিরোধের জাত্রায় পরিনত হতে বেশি সময় লাগবে না।
এদিন মিছিল শুরু আগে ডিওয়াইএফআইয়ের পক্ষ থেকে সবাশেব করা হয়। সেই সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা।
বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘কোচবিহার থেকে ইনসাফ যাত্রা শুরু হয়েছে। রাজ্যে তৃণমূল মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে মানুষের টাকা লুঠ করেছে, বিজেপি আয়ুসমান ভারত, পেনশন প্রকল্পের টাকা চুরি করছে। বিজেপি তৃণমূল উভয় বলেছিল তারা কর্মসংস্থান করবে। কিন্তু হয়নি। রাজ্যে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়েছে। বেকারত্ব ক্রমশ বাড়ছে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতির জবাব নিতে এই ইনসাফ যাত্রা।’’
মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘‘কাজ নেই যুবকদের হাতে লোহার রড, ছটা দানা তুলে দিচ্ছে তৃণমূল। রাজবংশী, হিন্দু, মুসলমানে মানুষের মধ্যে ভাগ করছে বিজেপি। আমরা বলছি আমাদের একটাই পরিচিতি আমরা ভারতীয়। আমরা যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ চাই। সরকার কাজ দিতে পারছে না। ঘুষ দিয়ে চাকরি দিয়েছে তৃণমূল। সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছে মন্ত্রী মেয়ে। কারা এর বিচার করবে? যারা নবান্নে বসে আছে? পারবে না। বিজেপি দেবে? না। ওরা দেশ বিক্রি করছে। কারা এর বিচার করবে? মানুষ বিচার করবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনার ভোটে জিতে ওরা লাল বাতির গাড়ি চড়ছে, আপনি কাজ করছেন তাই দেশ চলছে। তাই মানুষের কাছে আমরা যাবো ইনসাফ চাইতে। ৬০ দিন আমরা রাস্তায় হাঁটবে। যত বেলা বাড়বে ধুলো ততো উড়বে, তৃণমূল বিজেপির চোখের সামনে অন্ধকার ততো বাড়বে। আমাদের দাবি কাজ চাই, দুর্নীতি বন্ধ করো, মানুষকে বাঁচতে দিতে হবে।’’
কোচবিহারে ডিওয়াইএফআই কর্মীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘যদি তোমরা ভদ্রতার হাত বাড়িয়ে দেবে তো আমরা হাত বাড়িয়ে দেবো। যদি হাতে লাঠি নিয়ে আসো তবে ইনসাফ যাত্রা প্রতিরোধের যাত্রায় পরিনত হবে।’’
কলতান দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘চাকরি চুরি হয়েছে, কয়লা গরু বালি চুরি হয়েছে। দোষীরা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না? আসলে দিল্লির সাথে সেটিং রয়েছে যাতে পরিবার পরিজনদের নিয়ে জেলে যেতে না হয়। আমরা আজ কোচবিহারে জড়ো হয়েছি নিজেদের পরিবারে মুখে সামান্য হাঁসি ফোটাতে। আমরা যখন চাকরির দাবিতে লড়াই করছি তখন জাত ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে ভাগ করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচতে ধর্মের ভিত্তিতে নয় দেশ বেচার দালাল এবং চাকরি চোরদের মধ্যে ভাগ করতে হবে। দুমাসের পদযাত্রার শেষে জনতার আদালতের চোর, চিটিংবাজদের বিচার করতে আমরা ব্রিগেডে সমবেত হবো।’’
Comments :0