এই ঘটনা সামনে আসে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের করা একটি টুইট থেকে।
সেলিম একটি ভিডিও টুইট করেন। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্ট্রং রুমে একটি ব্যালট বাক্সকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বামপন্থী কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, হুগলির সিঙ্গুর ব্লকের ৪ নম্বর জেলা পরিষদ আসনের একটি ব্যালট বাক্সের সিল খোলা। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ব্যালট বাক্সের প্ল্যাস্টিক এবং কাপড়ের মোড়ক খুলে ফেলা হয়েছে। বাক্সে ব্যালট পেপার ফেলার গর্তটিও দৃশ্যমান। অর্থাৎ, চাইলেই সেই বাক্সে নতুন করে ব্যালট পেপার ফেলা সম্ভব।
এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সিপিআই(এম) কর্মীরা। সেই বিক্ষোভের ভিডিও-ই ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও তে দেখা গিয়েছে, সিঙ্গুর ব্লকের কালিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ নম্বর ঘরের ৫৮ নম্বর বুথের ব্যালট বাক্স এটি।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে প্রিসাইডিং অফিসার সমস্ত রাজনৈতিক দলের এজেন্টের সামনে ব্যালট বাক্স সিল করেন। সেই বাক্স প্রথমে কাপড়, এবং তারপরে প্ল্যাস্টিক দিয়ে মোড়া হয়। একেবারে গণনার দিন সেই সিল করা মোড়ক খোলার কথা। এই গোটা প্রক্রিয়া পঞ্চায়েত নির্বাচন বিধিতে লিপিবদ্ধ। কিন্তু তারপরেও সেটি মানা হলনা কেন, স্ট্রংরুমে উপস্থিত নির্বাচনী আধিকারিকদের সেই প্রশ্ন করতে শোনা যায় সিপিআই(এম) কর্মীদের।
ভিডিও অনুযায়ী সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি নির্বাচনী আধিকারিকরা। তাঁদের কেবল বলতে শোনা যায়, স্যারেরা আসছেন। যা বলার তাঁরাই বলবেন।
অপরদিকে ব্যালট বাক্স অরক্ষিত রয়েছে এবং তাতে কারচুপি হয়েছে, এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের শ্রীকৃষ্ণপুর হাইস্কুলের স্ট্রংরুমের সামনে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। সকাল থেকে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে অবরোধ বিক্ষোভ চলে। পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সেই অবরোধ সরায় জেলা প্রশাসন।
স্ট্রং রুমে কারচুপির অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিশন এবং প্রশাসনের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে সেলিম বলেন, ‘‘বুথ থেকে ব্যালট বালট বাক্স তৃণমূলের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ব্যালট ঢুকিয়ে আবার ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ব্যালটের কোনও হিসেব নেই। প্রশিক্ষণের সময় ভোটকর্মীদের বলা হলো ব্যালটে প্রিসাইডিং অফিসারের সই লাগবে না। অর্থাৎ, আইনের বিপক্ষে কথা বলা হলো।’’
তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনার ব্যালটের সুরক্ষা দিতে পারছেন না, ব্যালট বাক্সের সুরক্ষা দিতে পারছেন না। গণনা কেন্দ্রের সুরক্ষা দিতে পারবেন কিনা বলতে পারছেন না। দায়িত্ব কার হাতে থাকবে বিডিও, আইসি না তৃণমূল- তাও জানাতে পারছেন না। রাজ্য নির্বাচন কমিশন কালিঘাটের ‘রুলবুক’ মেনে চলছে।’’
Comments :0