ইতিহাসবীদদের কথায় এই সেনগল দক্ষিণ ভারতের রীতি। এছাড়া ভারতের স্বাধীনতা এবং ব্রিটিশ শাসন শেষ হওয়ার অন্যতম প্রতীক এই সেনগল। সংসদ ভবনে সেনগল থাকবে তা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু প্রশন হচ্ছে যে কারা এই সেনগলকে স্থাপন করছে। সেনগলকে সংসদে স্থাপন করছে বিজেপি। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর ভারতীয় ইতিহাসকে বদলে দিতে চেয়েছে এই বিজেপি। ব্রিটিশদের তাবেদারি করা সাভারকারকে স্বাধীনতা সংগ্রামী বানাতে চেয়েছে তারা। ভগৎ সিংকে আতঙ্কবাদী চিহ্নিত করেছে। গান্ধী হত্যাকারি নাথুরাম গডসেকেও তারা স্বাধীনতা সংগ্রামী বলে চিহ্নিত করেছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, যা স্বাধীন ভারতের ঐতিহ্য তা নষ্ঠ হয়েছে মোদী সরকারের শাসন কালে। ধর্মের নামে, লাভ জিহাদের নামে পিটিয়ে মারা হয়েছে সাধারণ মানুষকে। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে ইতিহাসের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস।
আরএসএসের স্কুল সরস্বতী বিদ্যামন্দির সেখানে পাঠ্যক্রম আলাদা। আরএসএসের পাঠ্যক্রম চলে সেখানে। ইতিহাস, ভুগোল, বিঞ্জান, ভুগোল, অঙ্কের মতো সব বিষয় পড়ানো হয়। কিন্তু তা আরএসএসের তৈরি করা সিলেবাসে। যেই সিলেবাসে নেই কোন বিঞ্জান ভিত্তিক আলোচনা।
অষ্টম শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যক্রম যদি দেখা যায় তাহলে ওপর থেকে দেখলে মনে হবে বাকি পাঁচটা বোর্ডের মতোই সিলেবাস। কিন্তু না।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ভিত্তিক বা পর্যায় ভিত্তিক কোন অধ্যায় নেই। আছে শুধু একটা অধ্যায়। যেখানে ১৮৭০-১৯৪৭ পর্যন্ত গোটা স্বাধীনতা আন্দোলনকে একটা তুলে ধরা হয়েছে!
মাত্র একটা অধ্যায়। স্বাধীনতা আন্দোলনে গান্ধীর ভূমিকা কি? সুভাষ বোসের আজাদ হিন্দ ফৌজ কি করলো? চিত্তরঞ্জন দাস, সূর্য সেন, ভগৎ সিং, চন্দ্রশেখর আজাদের ভূমিকা সব কিছু একটা অধ্যায়।
অন্যদিকে আমাদের রাজ্যের বা সিবিএসই, আইএসসি বোর্ডর অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ের দিকে দেখি তাহলে দেখা যাবে অন্য চিত্র। ঘটনা ভিত্তিক বা পর্যাক্রমে অধ্যায়। যা পড়ে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সম্পর্কে একটা সম্যক ধারনা তৈরি হবে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর মনে।
অনেকে মনে করছেন লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের একবার জাতীয়তাবাদী হাওয়া তোলার জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ। সেন্ট্রাল ভিস্তা তৈরি করতে বিপুল টাকা খরচ হয়েছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বেকারি। জিনিসের দাম বাড়ছে। সেই সবের থেকে মানুষের নজর ঘোড়াতে লোকসভা ভোটের এক বছর আগে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের এই সিদ্ধান্ত।
Comments :0