শিবপুর পিএম বস্তি অঞ্চলে ১৪৪ ধারার অজুহাতে রবিবার হাওড়া জেলা বামফ্রন্টকে শান্তি মিছিল করার অনুমতি দিল না পুলিশ প্রশাসন। পালটা হাওড়ায় সিপিআই(এম)'র জেলা কমিটির অফিসের সামনে প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে।
রবিবার প্রতিবাদ সভায় সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সূর্য মিশ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চ্যাটার্জি সহ বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ উপস্থিততে সভা শুরু হয় এদিন বিকেলে।
সেলিম বলেছেন যে দুর্নীতি-দুষ্কৃতী জোটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন মানুষ। সর্বত্র প্রতিরোধ হচ্ছে। তা থেকে নজর ঘোরাতেই সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থেই মন্দির-মসজিদের নামে দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা হচ্ছে।
সাম্প্রদায়িক বিভাজনের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি, দু’দলকেই দায়ী করেছেন সেলিম। তিনি বলেছেন, এর আগে বসিরহাট বা ধুলাগড়ে উত্তেজনার সময় সরকার বলছিল কিছু হয়নি। এবার ধর্মতলায় ধরনার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে খবর শোনানোর ভঙ্গিতে ঘোষণা করলেন যে হাওড়ায় দাঙ্গা হয়েছে।
সেলিম বলেন, তৃণমূল বা বিজেপি চেষ্টা করলেও বিভাজনের কৌশল সফল হবে না। বাংলার মানুষ সরাসরি তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছে। আর মমতা ব্যানার্জি নিজেদের দুর্নীতি থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে রাম নবমীর দু’দিন আগে আরএসএস'র নির্দেশে রেড রোডে ধরনায় বসলেন। ধর্মীয় উগ্রতা ব্যবহার করে দাঙ্গা হয়। আর লাল ঝান্ডা সেই বিভাজনের উস্কানিকে প্রতিরোধ করতে পারে। পুলিশ যেটা পারে না, সেটা আমরা পারি।
সেলিম বলেন, গোটা মার্চ জুড়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে চিঠি চালাচালি করেছে হাওড়া পুলিশ। পুলিশ অনুমতি দিয়েছে এইবারের মিছিলে। গতবার রুট মানেনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, তাও এইবার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ শর্ত দিয়েছিল। সেগুলি মানেনি। যারা শর্ত ভাঙলো তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিলেন?
সেলিম বলেছেন, বামপন্থী ছাত্র-যুবদের রুখতে পুলিশের বিরাট বাহিনী নামানো হয়। স্টিলের ব্যারিকেড হয়। মাথা ফাটানো হয়। রাম নবমীতে সেই ‘রোবো কপ’, টিয়ার গ্যাস কোথায় গেল? ভাইপোকে বাঁচাতে দাঙ্গাবাজদের কাছে মাথা বিক্রি করা হচ্ছে। কয়লা পাচার, গরু পাচার থেকে বাঁচতে মোহন ভাগবত, অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদীর শর্তে রাজ্যকে বাজি ধরেছে মমতা ব্যানার্জি।
সেলিম বলেন, বাংলার মানুষ বলছে, ‘চোর ধরো জেলে ভরো’। মানুষের দাবি সমস্ত চোরকে গ্রেপ্তার করতে হবে। কোনও দাঙ্গা করে সেইদিক থেকে নজর সরানো যাবে না।
সূর্য মিশ্র বলেন, জ্যোতি বসু প্রায়শই সাংবাদিকদের বলতেন, সরকার না চাইলে দাঙ্গা হয় না। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার চায় বলেই দাঙ্গা হচ্ছে। মিশ্র বলেন, মমতা ব্যানার্জির সবথেকে বড় অপরাধ বিজেপিকে বাংলার মাটিতে ডেকে আনা।
বামপন্থীদের মিছিল করতে না দেওয়ায় তৃণমূল সরকারের পুলিশের প্রতি ধিক্কার জানান শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। সমবেত জনতাকে তিনি বলেছেন, নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আরও বেশি। সর্বত্র বিভাজনের রাজনীতিকে প্রতিরোধ করতে হবে। মানুষের মধ্যে সাহসের সঞ্চার করতে হবে। দাঙ্গাবাজদের পরাজিত করতে হবে মানুষকে একজোট করে।
Comments :0