বহুদিন পর নিজেদের ঘরোয়া লিগ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে এই রকম বল দখলে রেখে গোল করে জিততে দেখা গেল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে। মঙ্গলবার গভীর রাতের ম্যাচে এরিক টেন হাগের লাল ম্যাঞ্চেস্টার বিপক্ষ নটিংহ্যাম ফরেস্টকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে কার্যত নাকানি চোবানি খাওয়ালো। রেড ডেভিলস বাহিনীর হয়ে ম্যাচে তিনজন ভিন্ন ফুটবলার মার্কাস রাশফোর্ড, অ্যান্টনি মার্তিনাল ও ফ্রেড জয়সূচক গোলগুলি এনে দিয়েছেন। প্রতিটা গোলের পিছনে ছিল দলগত নৈপুণ্য ও ব্যক্তিগত প্রতিভা।
খেলার প্রথমার্ধের শুরু থেকেই বিপক্ষ নটিংহ্যাম ফরেস্টের রক্ষণ ভেঙে আক্রমণ তৈরি করার চেষ্টা করে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ফুটবলাররা। ম্যাচের বয়স তখন ১৯ মিনিট ছুঁইছঁই কর্নার-কিক আদায় করে নেয় প্রাক্তন ইপিএল চ্যাম্পিয়নরা। সতীর্থ ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের মাটিঘেঁষা কর্নার বিপক্ষ ডি-বক্সে কিছুটা অরক্ষিত অবস্থায় পেয়ে যায় আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় মার্কাস রাশফোর্ড। তারপর সেটি ঠান্ডা মাথায় ডান-পা দিয়ে গোলের মধ্যে ক্লিনিক্যাল ফিনিস রাখেন তিনি।
এরপর ম্যাচের ২৩ মিনিটের মাথায় গোল সংখ্যা দ্বিগুণ করেন ফরাসি আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় অ্যান্টনি মার্তিয়াল। তাঁর করা গোলটি হয়েছে নটিংহ্যাম ফরেস্টের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার উইলি বলির পায়ের ফাঁক ভেদ করে গোলরক্ষক ওয়েন হেনসির হাত ফসকে। এরপর প্রথমার্ধে নটিংহ্যামের একটি গোল বাতিল হয়ে যায়। ব্রাজিলিয়ান লেফট ফুল ব্যাক রেনান লোদির করা ফ্রি-কিকে মিডফিল্ডার রায়ান ইয়েটস হেড করেছিলেন গোলের উদ্দেশে। কিন্তু বল জালে জড়ানোর আগে দলের একজন সতীর্থের পায়ে লেগে যায়। তিনি অফ সাইডের ফাঁদে জড়িয়ে ছিলেন। গোল লাইন প্রযুক্তি বিদ্যার মাধ্যমে সেটা স্পষ্ট ধরা পড়ে।
খেলার দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যান ইউ খেলোয়াড়রা আরও একক প্রধান্য নিয়ে খেলতে থাকে। বেশ কয়েকবার ব্যবধান বাড়ানোর মুহূর্তে পৌঁছে যায় দলের আক্রমণ সামলানো খেলোয়াড়রা। কিন্তু সেগুলো মিস করে বসেন ব্রাজিলিয়ান অ্যান্টনি, ফরাসি মার্তিনাল। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৮৭ মিনিটের মাথায় স্কোর লাইন ৩-০ করে কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের ৭৭ মিনিটের মাথায় ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের পরিবর্তে খেলতে আসা খেলোয়াড় ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফ্রেড। গোলটির ক্ষেত্রে বলটি জোগান দিয়েছেন দেশের হয়ে একদা সতীর্থ ক্যাসেমিরো।
এই ম্যাচ জয়ের ফলে এরিক টেন হাগের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড লিগ তালিকায় পয়েন্টের বিচারে কিছুটা উন্নতি করল। কিন্তু থেকে গেল নিজেদের পুরানো জায়গা ৫ নম্বরে।
এদিকে, ইপিএলের অন্য ম্যাচে সহজ জয় পেল চেলসি এফসি। বোর্নমাউথ এফসিকে ২-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করল গ্রাহাম পটারের ছেলেরা। ম্যাচের প্রথমার্ধেই জয়সূচক গোল দুটি এসে যায়। গোলের খাতায় নাম লেখেন জার্মান ফুটবলার কাই হার্টজ ও ইংলিশ ফুটবলার ম্যাসন মাউন্ট।
খেলার প্রথমার্ধের ১৬ মিনিটের মাথায় চেলসি আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় রহিম স্টার্লিং বিপক্ষ বোর্নমাউথ এফসি’র ডি-বক্স থেকে অসাধারণ থ্রু পাস বাড়ান আগুয়ান সতীর্থ সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড কাই হার্টজের উদ্দেশে। হার্টজ সেটি বিপক্ষের জালে পাঠানোর সময় নিজের শরীরটাকে মাটিতে একেবারে ছুঁড়ে দিয়েছেন। এরপর ২৪ মিনিটের মাথায় চেলসি’র হয়ে গোল সংখ্যা ২-০ করেন মাঝমাঠের দায়িত্ব নেওয়া খেলোয়াড় ম্যানস মাউন্ট। সতীর্থের সাজিয়ে দেওয়া বল বিপক্ষ ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে ডান পায়ের বিষাক্ত ইনসুইং মাখানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। এরপর ম্যাচের বাকি সময় থিয়াগো সিলভারা অসংখ্যবার বিপক্ষের রক্ষণে ও গোলের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। কিন্তু ফলাফল আর দীর্ঘায়িত হয়নি।
এই ম্যাচ জয়ের ফলে গ্রাহাম পটারের চেলসি এফসি লিগ তালিকায় ৮ নম্বরে উঠে এল।
Comments :0