আবাস তালিকায় গরিব মানুষের নাম তুলতে চলছিল বিক্ষোভ। নন্দকুমারের বিডিও নারাজ ছিলেন ডেপুটেশন নিতে। বিডিও দপ্তর ঘিরে বসেছিলেন মানুষ। সন্ধ্যের আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্বিচারে লাঠি চালালো পুলিশ। পরে সিপিআই(এম) পার্টি অফিসে ঢুকেও চালায় লাঠি। পার্টি অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সিপিআই(এম) পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি, পার্টিনেতা পরিতোষ পট্টনায়েক এবং পার্টিকর্মীদের।
আবাস যোজনার তালিকায় নেই গরিব মানুষের নাম। পঞ্চায়েতের মাথা এবং তৃণমূলের নেতারা নিজেদের পছন্দে নাম ঢুকিয়েছে। নামের তালিকা প্রকাশ করার দাবিতে শুক্রবার সকালে সিপিআই(এম)’র ডাকে নন্দকুমার ব্লক অফিসের সামনে হয় বিক্ষোভ। মিছিল করে গ্রামবাসীরা যোগ দেন বিক্ষোভে।
আবাস যোজনার ঘর চাইতে গিয়ে জুটলো পুলিশের মার। বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ব্লক অফিসে থাকা উপস্থিত থেকে এমন নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছেন শুক্রবার। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হলেন শতাধিক কর্মী। মাথা ফাটলো গরীব ঘরহারা মানুষদের।
মিছিল নেতৃত্ব দেওয়া পরিতোষ পট্টনায়কের বুকে পেটে লাথি মারতে মারতে পুলিশ ভ্যানে তোলে পুলিশ। এমনকি হুমকিও দেয় থানায় নিয়ে গিয়ে প্রাণে মেরে দেওয়ার। অবস্থান বিক্ষোভ তখন ছত্রভঙ্গ, পুলিশ যাকে যেখানে পেরেছে মারতে মারতে পুলিশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এর কিছু পরে নন্দকুমার সিপিআই(এম) পার্টি অফিসে থেকে নিরঞ্জন সিহি, শান্তনু দাস, চন্দন মাইতি সহ কয়েকজন কর্মী সমর্থককে নন্দকুমার থানার ওসি মনোজ ঝার নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ব্যাপকভাবে মারধর করতে করতে পুলিশ গাড়িতে তোলে। এভাবে পার্টি অফিসে ঢুকে মারধরের ঘটনা এই প্রথম। পুলিশের লাঠির আঘাতে লৌহজংগ্রামে শেখ হাকিম, সামিদ আনসারী'র মাথা ফেটে যায়। তাদের নন্দকুমার খেজুরবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এখনো পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ২৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে পাঁচ জনের আঘাত অত্যন্ত গুরুতর। নিখোঁজ রয়েছে ৪ জন। মোট ১৭ জনকে আটক করে পুলিশ।
বিডিও’কে ডেপুটেশন দিতে চাওয়া হলেও তিনি তা নিতে চাননি। ডোপুটেশন জমা না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ-অবস্থান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় সিপিআই(এম)। সন্ধ্যের অন্ধকার নামতেই জাময়েতের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ। বেধরক লাঠিপেটা করা হয় জনতাকে। পুলিশ বাহিনী এরপর চলে যায় নন্দকুমার পার্টি অফিসে। সেখানে ছিলেন নিরঞ্জন সিহি এবং পার্টিকর্মীরা। তাঁকেও মারা হয়। পার্টি অফিসে ঢুকে তান্ডব চালায় পুলিশ। মারতে মারতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় নেতা-কর্মীদের।
আরজুনা বিবিকে মারছে পুলিশ
জঘন্য আক্রমণ হয়েছে মহিলাদের ওপরও। বিবস্ত্র করার চেষ্টা হয়েছে প্রতিবাদী মহিলাদের। ঘটনাস্থল থেকে তোলা ভিডিও’তে সেই দৃশ্য ধরাও পড়েছে। চালানো হয়েছে লাঠিও।
নিরঞ্জন সিহি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের উপর পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রতিটি ব্লক এলাকায় বিক্ষোভ হয়।
Comments :0