LEFT CONGRESS RALLY

চুরি করলে তদন্ত হোক,কিন্তু গরীবের বরাদ্দ বন্ধ কেন?
প্রশ্ন বিমান বসুর

রাজ্য কলকাতা

CPIM CONGRESS TMC KOLKATA 100 DAYS JOB BENGALI NEWS

 কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাংলার গরীব মানুষ। রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা করে ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ ১বছর ধরে আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্ত মানা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে তার তদন্ত হোক। সেই সংক্রান্ত আইন তো রয়েছে। কিন্তু গরীব মানুষের বরাদ্দ আটকে দেবে কেন? বুধবার কলকাতার মহামিছিল থেকে এই প্রশ্নই তুললেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। 

বুধবার কলকাতার রামলীলা ময়দান থেকে পার্কসার্কাস অবধি মহামিছিলের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বামফ্রন্ট। সেই মিছিলে কংগ্রেসও যোগ দেয়। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন বিমান বসু। 

এদিন দুপুর ৩টের কিছু পরে মৌলালীর রামলীলা ময়দান থেকে শুরু হয় মিছিল। গরম উপেক্ষা করেই বামফ্রন্ট কর্মী সমর্থকরা দুপুর ২টো থেকে রামলীলা ময়দান চত্ত্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেন। মিছিল শুরুর কিছু আগে প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দপ্তর বিধান ভবন থেকে মিছিল করে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা মহামিছিলে অংশ নেন। মহামিছিল কার্যত জনজোয়ারের রূপ নেয়। 

মিছিল এজেসি বোস রোড ধরে মল্লিকবাজার হয়ে পার্ক সার্কাস মোড়ের দিকে এগোয়। মিছিল মল্লিকবাজার মোড়ে পৌঁছন মাত্র দেখা যায় পার্ক স্ট্রিটের দিক থেকে তৃণমূল কর্মী সমর্থক ভর্তি একাধিক বাস মিছিলের রুটে ঢুকে পড়েছে। বামফ্রন্ট কর্মীদের অভিযোগ, পুলিশের কাছে আগাম খবর থাকা সত্ত্বেও বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্যই মহামিছিলের মধ্যে তৃণমূল সমর্থকদের বাস প্রবেশ করানো হয়। যদিও বামকর্মীরা রুখে দাঁড়ানোয় বাসগুলি দ্রুত অন্যদিকে চলে যায়।

এদিন মিছিল শেষে একটি পণ্যবাহী গাড়ির উপর তৈরি করা অস্থায়ী মঞ্চে সংক্ষিপ্ত সভা হয়। সভায় বিমান বসু বলেন, বামপন্থীরা বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার মনোভাবকে ধিক্কার জানাচ্ছেন। যাঁরা চুরি করল, তাঁদের শাস্তি না দিয়ে গ্রামের গরীব মানুষকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। 

বসু বলেন, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে ইচ্ছুক সমস্ত শক্তিকে একজোট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদিনের মহামিছিল সেই প্রক্রিয়ারই অঙ্গ। রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ বাতিলের প্রশ্নে তিনি বলেন, কেন্দ্রে ‘তানাশাহী’ চলছে। ফ্যাসিস্ট সুলভ মনোভাব নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও সরব হন তিনি। 

বিমান বসু স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন, চরম প্রতিক্রিয়াশীল বিজেপি এবং প্রতিক্রিয়াশীল তৃণমূল বিরোধী সমস্ত দলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। 

এদিন কংগ্রেসের তরফে বক্তব্য রাখেন অসীত মিত্র এবং আশুতোষ চ্যাটার্জি। অসীত মিত্র তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করার পক্ষে সাওয়াল করেন। আশুতোষ চ্যাটার্জি বলেন, বুধবার তৃণমূলের তরফে সভা এবং ধর্ণা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রাজপথে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে তার কোনও প্রভাব নেই। উল্টোদিকে কাস্তে হাতুড়ি এবং হাতের ঝান্ডার মিছিল মানুষের মধ্যে আলোড়ন ফেলেছে।

ফরোয়ার্ড ব্লকের তরফে নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, গ্রামে গ্রামে দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। সেই টাকার ভাগ পেয়েছে কালীঘাট। কেন্দ্রের সাহস থাকলে মমতা ব্যানার্জিকে গ্রেপ্তার করুক ইডি-সিবিআই। কিন্তু সেটা না করে গরীব মানুষকে সমস্যায় ফেলা হচ্ছে। 

এদিনের সভা পরিচালনা করেন সিপিআইর রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি। 

মহামিছিলে সিপিআই(এম)’র তরফে মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু, সূর্য মিশ্র, সিপিআইর তরফে স্বপন ব্যানার্জি, আরএসপি’র তরফে মনোজ ভট্টাচার্য, সুভাষ নষ্কর, সারা ভারত ফরোয়ার্ড ব্লকের তরফে নরেন চ্যাটার্জি, জাতীয় কংগ্রেসের তরফে অসীত মিত্র, আশুতোষ চ্যাটার্জি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

Comments :0

Login to leave a comment