Justice Ganguly

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার নিয়ে হলফনামা চাইল সুপ্রিম কোর্ট

জাতীয় রাজ্য

কোনো মামলা চলাকালীন সেই বিষয়ে বিচারপতির সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়া উচিত নয়। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি সাক্ষাৎকার সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত আগামী শুক্রবারের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে সংশ্লিষ্ট বিচারপতির কাছ থেকে ব্যাখ্যা-সহ হলফনামা দিতে বলেছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার প্রসঙ্গেই এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছে সিবিআই বা ইডি’র তদন্ত এর ফলে বন্ধ হবার কোনো কারণ নেই। 


সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলায় সোমবার এই সাক্ষাতকারের প্রসঙ্গ ওঠে। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির দায়ে ধৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ দাবি করছিলেন, তদন্তকারীরা তাঁকে দিয়ে অভিষেক ব্যানার্জির নাম বলাতে চাইছে। সেই মর্মে এমনকি হেস্টিংস থানায় তিনি অভিযোগও দায়ের করেন। ঘটনাচক্রে কুন্তল ঘোষ এই অভিযোগ করার কয়েকদিন আগেই অভিষেক ব্যানার্জি এক জনসভায় বলেন, তাঁর নাম বলাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা। কলকাতা হাইকোর্টে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই প্রসঙ্গ উঠলে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ধৃত কুন্তল ঘোষ অভিষেক ব্যানার্জির কথা থেকেই অভিযোগ করার সূত্র পেয়েছেন কিনা, তা জানার জন্য প্রয়োজনে সাংসদকে জেরা করা যেতে পারে। দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়েও জেরা করা যেতে পারে। এই নির্দেশ এসেছিল ১৩ এপ্রিল। দ্রুত সুপ্রিম কোর্টে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন অভিষেক। ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট প্রথম শুনানিতে ২৪ তারিখ পর্যন্ত অভিষেককে জেরার ওপরে স্থগিতাদেশ দেয়। সোমবার ছিল দ্বিতীয় শুনানি। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পিএস নরসিমার বেঞ্চে এই মামলা ওঠে।


এদিন অভিষেক ব্যানার্জির আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এবিপি আনন্দ চ্যানেলকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের উল্লেখ করেন। সেই সাক্ষাৎকারের একটি বয়ানও তিনি জমা দেন। সিংভি বলেন, এই সাক্ষাৎকারে অভিষেক ব্যানার্জির বিরুদ্ধে মন্তব্য করা হয়েছে। এই কাজ করা যায় না। সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি এই বিবৃতির ব্যাখ্যা দেননি, প্রত্যাহারও করেননি। উল্লেখ্য, এই সাক্ষাৎকার গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের। 


প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় তখনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কিনা, তা তাঁরই কাছ থেকে জেনে হলফনামা দিতে বলেন কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। এটি নির্দেশ। মৌখিক ভাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মামলার ভালো-মন্দ নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করছি না। আমি জানতে চাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কিনা। আমি শুধু বলতে চাই যে মামলা চলছে তা নিয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়া বিচারপতিদের কাজ না। যদি আবেদনকারী সম্পর্কে তিনি ওই কথা বলে থাকেন তাহলে তাঁর শুনানিতে অংশ নেওয়া উচিত না। প্রশ্ন হলো একজন বিচারপতি যিনি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি সম্পর্কে এইরকম মন্তব্য করে থাকেন তাহলে তাঁর কি শুনানিতে অংশ নেওয়া উচিত? একটি পদ্ধতি থাকা উচিত।’
এইসঙ্গেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্ত এর ফলে বন্ধ হবে না। তা চলতে থাকবে। 
 
 

Comments :0

Login to leave a comment