মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আর নিবন্ধক। তাঁদের ঘিরে একদল লাঠি, ঘুঁষি চালিয়ে যাচ্ছে। এমনই ভয়াবহ দৃশ্য দেখল গোরখপুরের দীনদয়াল উপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়েছে সংবাদমাধ্যমেও।
ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে হাজির ছিল পুলিশ। কিছু ভিডিও’তে দেখা যায়, বিপন্ন উপাচার্য ও নিবন্ধককে বাঁচানোর চেষ্টা করায়, পুলিশকেও মারছে বিজেপি’র সহযোগী ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা।
উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে আরএসএস অনুগামী উগ্র হিন্দুত্ববাদী ছাত্র সংগঠনের তাণ্ডবে উদ্বিগ্ন শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন অংশ। উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। আরএসএস’র এই ছাত্র সংগঠনের তাণ্ডব অবশ্য দেখা গিয়েছে দেশের নানা প্রান্তেই। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সংগঠনই মারধর করেছিল ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের।
জানা গিয়েছে বেতন কাঠামোর মতো কয়েকটি বিষয়ে এবিভিপি আন্দোলন করছিল। উপাচার্য রাজেশ সিংয়ের সঙ্গে সংগঠনের কথাও হয়। কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কথা মানা হচ্ছে না এই অভিযোগ তুলে উপাচার্যের ওপর চড়াও হয় এবিভিপি। নিবন্ধক অজয় সিং-ও পড়েন তাঁদের রোষের মুখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ, বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের ধরে এনেছিল এবিভিপি’র বাহিনী। তারপরই ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের।
উপাচার্যকে টেনে মাটিতে ফেলা হয়। সেই অবস্থায় তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কয়েকজন। নির্মমভাবে লাথি চলতে থাকে। মারমুখী বাহিনী ছাড়েনি নিবন্ধককে। তাঁকে আড়াল করে পুলিশ। পুলিশের ঘেরাটোপ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে উন্মত্ত ভিড় মারতে থাকে অজয় সিং-কে। মাটিতে ফেলে তাঁর মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
উত্তর প্রদেশে বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কেবল এবিভিপি নয়, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন বাহিনীকে এমন বেপরোয়া তাণ্ডব চালাতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ, প্রশাসন বিভিন্ন ঘটনায় কার্যত চোখ বুঁজে থেকেছে। কখনও ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’-তে যুবক-যুবতী ধরে হেনস্তা। কখনও ধর্মান্তকরণ বা লাভ জিহাদের ধুয়ো তুলে হামলার বহু ঘটনাই সামনে এসেছে। কোনও ক্ষেত্রেই পুলিশ বা প্রশাসনকে কড়া হাতে দমনে নামতে দেখা যায়নি। এই প্রশ্রয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এমন খুনে হামলা বলে মনে করছেন একাংশ।
Comments :0