DYFI TRIPURA

ত্রিপুরায় ৬০ হাজার সরকারি কাজ ছেঁটে বিভাজন বিজেপি’র, লড়াইয়ে ডিওয়াইএফআই

জাতীয়

ছবি ও ভিডিও: প্রিতম ঘোষ

অরিজিৎ মণ্ডল

রাজ্য সরকারের ৬০ হাজার কর্মচারী কমিয়েছে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। আর বিজেপি’র যুব মোর্চা নেশায় ডুবিয়ে দিতে চাইছে যুবদের। তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে ডিওয়াইএফআই।
ডিওয়াইএফআই’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ২০তম সম্মেলন সংঘটিত হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের রবীন্দ্র সদনে। এখানেই ছিলেন ডিওয়াইএফআই’র ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব। ‘গণশক্তি ডিজিটাল’-র মুখোমুখি হয়ে ত্রিপুরার বর্তমান যুবকদের পরিস্থিতি সম্পর্কে একথা বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন কিভাবে বিজেপি আরএসএস বিভাজন তৈরি করছে। চলছে লড়াই। তিনি বলেছেন, ত্রিপুরার যুবরা তাকিয়ে রয়েছে বাংলার দিকেও। ডিওয়াইএফআই’র নেতৃত্বে যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক আন্দোলন হয়েছে তা থেকে রসদ পেয়েছে ত্রিপুরার যুব আন্দোলন। 
নবারুণ দেব বলছেন, ত্রিপুরায় আসীন বিজেপি সরকার। রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে মানুষের মধ্যে বিভাজন চলছে। ঘৃণার রাজনীতি গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে বিজেপি। বিজেপি আরএসএস-এর ঘোষিত শত্রু কমিউনিস্টরা। তাই শারীরিক আক্রমণের সঙ্গেই চলছে মতাদর্শগত আক্রমণও। সেই আক্রমণের প্রতিরোধ হচ্ছে মতাদর্শগত লড়াইয়ের রাস্তা ধরেই। দীর্ঘদিন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যের দায়িত্ব পালন করেছে বলে বিজেপি’র অন্যতম লক্ষ্য থেকেছে ত্রিপুরা। এখন বিজেপি সরকারে আসীন হওয়ার পর প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রশক্তিকে অপব্যবহার করে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। সাত বছর পর মানুষের কাছে তা জলের মতো পরিষ্কার। 
নবারুণ জানাচ্ছেন শুধু ধর্মীয় বিভাজন নয় সামাজিক বিভাজনকেও প্রতিষ্ঠিত করছে বিজেপি-আরএসএস। তিনি বলছেন, "ত্রিপুরাতে শুধু ধর্মের বিভাজন করছে তা নয়। সামাজিকভাবে ও বিভাজন করছে বিজেপি। যেখানে হিন্দু-মুসলিম করতে পারছে না, সেখানে উপজাতি-অনুপজাতি, দলিত-অদলিত, উঁচু জাতি নিচু জাতির মধ্যে বিভাজন করছে। বিভাজন করছে পরিবারের মধ্যেও।’’ 
তিনি বলেছেন, বেকার যুবদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। বিজেপির যুব মোর্চার নেতারা যুবকদের নেশার দ্রব্য পাচার খুন ডাকাতির সাথে যুক্ত করে দিচ্ছে। তাই যুবদের স্থানীয় দাবি নিয়ে ডিওয়াইএফআই ও উপজাতি যুব সংগঠন টিওয়াইএফ একসঙ্গে লড়াই করছে। মানুষ ওই লড়াইয়ের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। কেউ বিজেপির ভয়ের রাজনীতিকে উপেক্ষা করে সরাসরি পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন, কেউ দূর থেকে সমর্থন করছেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় আমাদের মূল তিনটি কথা- কর্মসংস্থানের দাবি, নেশার বিরুদ্ধে লড়াই ও আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা। তার জন্য আমরা লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছি। এই আন্দোলনকে আমরা তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছি, প্রথমত স্থানীয় দাবিতে এলাকার যুবকদের থেকে গণহারে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি প্রদান। দ্বিতীয়ত, ত্রিপুরা রাজ্যের ২৩ টি সাব ডিভিশনে বিভিন্ন সন্ত্রাসবলিত এলাকায় বড় বড় মিছিল। তৃতীয়ত, ডিএম অফিস অভিযান। 
তিনি জানাচ্ছেন রাজ্যের কর্মসংস্থানের প্রশ্নে বামফ্রন্ট সরকার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। তাকে ধ্বংস করে দিয়েছে বিজেপি। ভৌগলিক অবস্থানের জন্য ত্রিপুরায় বড় শিল্প সম্ভব নয়। তাই রাজ্য সরকারি চাকরি ছিল যুবকদের প্রধান আশ্রয়। কয়েক মাস আগে আগে এক বিধায়কের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী বলেছেন বর্তমানে রাজ্যে সরকারি চাকুরীজীবী সংখ্যা এক লক্ষ পাঁচ হাজার। ২০১৮ সালে বামফ্রন্ট সরকার যখন পরাজিত হয় সেই দিনের পরিসংখ্যান ছিল ১ লক্ষ ৬০ হাজার। মানে শেষ সাত বছরে প্রায় ৬০ হাজার শূন্য পদ রয়েছে। কিন্তু সেই শূন্য পদে নিয়োগ করছে না বিজেপির সরকার। ২০১৮ তে ভোটে জেতার আগে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বছরে পঞ্চাশ হাজার যুবক চাকরি দেবে তারা। কিন্তু সেই মিথ্যাচার মানুষের কাছে আজ স্পষ্ট।

Comments :0

Login to leave a comment