MD SALIM BALAGARH

চোর কখনও চোরকে ধরবে না,
দুই শক্তিকে হারানোর ডাকে সেলিম

রাজ্য জেলা

MD SALIM BALAGARH মঙ্গলবার জিরাট কলোনি হাইস্কুল মাঠে জনসভায় বলছেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।

অনন্ত সাঁতরা ও শুভ্রজ্যোতি মজুমদার 

চোর কখনও চোরকে ধরে না। লুটেরা কখন লুটেরাকে ধরবে না। কয়লা, গরু, সরকারি নিয়োগে লাগামছাড়া দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। বামপন্থীরা স্লোগান দিয়েছে গ্রাম জাগাও, চোর তাড়াও। মানুষ জাগছেন। এখন বিজেপি বলছে আমাদের ইডি, সিবিআই ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু চোর এরা ধরবে না। 

বুধবার বলাগড় থানার জিরাট কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সিপিআই (এম) বলাগড় ২ এরিয়া কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেছেন মহম্মদ সেলিম। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক এবং পলিট ব্যুরোর এই সদস্যের আহ্বান, চোর তাড়াও- বাংলা বাঁচাও, বলাগড়ের ঐতিহ্য রক্ষা কর। গড়ে তোলো জনগণের পঞ্চায়েত।

 

সেলিম বলেন, ‘‘সব একজোট হয়ে বলেছিল লাল হটাও দেশ বাঁচাও। লাল হটেছে কিন্তু দেশ বাঁচেনি। ওষুধে জিএসটি ১৮ শতাংশ। খাবার, জামাকাপড়ে জিএসটি, মূল্যবৃদ্ধি মারাত্মক। দুই সরকার অর্ধেক করে করের টাকা নিচ্ছে। পরিবারের খরচ বাড়ছে। বামপন্থীরাই লড়াই চালাচ্ছে। আজকে দেশকে বাঁচাতে এই লালঝান্ডা নিয়েই রুখে দাঁড়াতে হচ্ছে।’’ 

এই জনসভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ও হুগলী জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ এবং জেলা কমিটির সদস্য অতনু ঘোষ। জনসভা পরিচালনা করেন পার্টি নেতা বেচু রায়। উপস্থিত ছিলেন পার্টি নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য, রাজ্য কমিটির সদস্য মনোদীপ ঘোষ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 

সেলিম বলেছেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী কী ভূমিকা নিয়েছিলেন? তখন তৃণমূল সরকারের এই মন্ত্রী জেলায় জেলায় ভোট লুটে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন বলছেন বিধায়ক কিনতে তিনি ৫০ লক্ষ টাকাও নিয়েছেন। কেউ তাকে ধরছে না, জানতে চাইছে না কোথা থেকে এল এত টাকা। রাজ্যের পুলিশের মতো কেন্দ্রের ইডি-সিবিআই আসলে চোরদের পাহারা দিচ্ছে। কেন্দ্রে মোদীর লুট আর রাজ্যে দিদির লুট চলছে।’’ 

এদিন সমাবেশের আগে পার্টির বলাগড় -২ এরিয়া কমিটির নবরূপে গঠিত কার্যালয় কমরেড প্রবীর সেনগুপ্ত ভবন উদ্বোধন করেন মহম্মদ সেলিম । ছিলেন মিতালি কুমার, রামকৃষ্ণ রায়চৌধুরী ,পরিতোষ ঘোষ, বিকাশ হেমব্রমও। 

সেলিম বলেন, ‘‘চোরেরা এ রাজ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরতে পারতো না। আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি, তৃণমূল নামক নোংরা দল গোটা পশ্চিমবঙ্গকে দূষিত করেছে। নাকে রুমাল চেপে এই দূষণ থেকে বাঁচতে পারবেন না। লালঝান্ডা নিয়ে এই দূষণ আমাদের আপনাদেরই সাফ করতে হবে। লাল ঝান্ডাই পারে এই চোরেদের প্রতিহত করতে।’’ 

পার্টির জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের পার্টি অফিস তৈরি হয়েছে জনগনের টাকায়। চিটফান্ডের টাকায় তৈরি হয়নি। সাধারণ মানুষ যারা পার্টি অফিস তৈরি করতে অকুণ্ঠ  সাহায্য করেছেন তাদেরকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানাই।’’ তিনি বলেন, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালের পঞ্চায়েতে প্রহসনের ভোট হয়েছিল। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে অন্যরকম। এই নির্বাচন হবে বামপন্থীদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। কোনও লুঠেরা বামপন্থীদের রুখে দিতে পারবে না।’’ 

ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল মানে পাঁচিল টপকানো। তৃণমূলের বিধায়ক এত চুরি করেছেন যে পাঁচিল টপকে পালাতে হচ্ছে। আর আমরা যুবদের চাকরির দাবিতে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ব্যারিকেড ভাঙছি। এটাই বামপন্থা।’’  মানুষের মধ্যে বিভাজন গড়ে তুলছে তৃণমূল ও বিজেপি। রিষড়া ও শিবপুরে অশান্তি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের রুখে দিয়েছেন সচেতন মানুষ।’’ ঘোষ বলেন যে, ‘‘১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য দায়ী তৃণমূল ও  বিজেপি উভয়েই।’’

পার্টিনেতা অতনু ঘোষ বলেন, মানুষের পঞ্চায়েতে করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। সেই পঞ্চায়েতকে তৃণমূল আবার বাস্তুঘুঘুর বাসায় পরিণত করেছে। তাকে ফের মানুষের পঞ্চায়েত হিসেবে গড়ে তুলব। 

Comments :0

Login to leave a comment