অনিন্দিতা দত্ত- শিলিগুড়ি
গত বছর শিলিগুড়িতে পুজো কার্নিভাল মুখ থুবড়ে পড়ার পর এবছরের কার্নিভালকে ঘিরে পৌর কর্পোরেশনের দায়িত্ব নিয়ে শহরবাসীদের মধ্যে যথেষ্ট সংশয় দেখা দিয়েছে। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে গতবছর পুজো কার্নিভালকে ঘিরে শহর জুড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো। আগাম না জানিয়েই কার্নিভাল শুরুর অনেক আগেই শহর জুড়ে যান নিয়ন্ত্রণ করায় সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি বেড়েছিলো। তার ওপর কার্নিভালের দিন বিকেলের পর থেকে শহরে প্রবল বৃষ্টি নামে। রাস্তাঘাট আটকে দিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলায় যানবাহন বন্ধ থাকায় শহরবাসীদের বৃষ্টিতে ভিজে নাজেহাল হতে হয়েছিলো। দীর্ঘসময় রাস্তা আটকে কার্নিভালের অনুষ্ঠান চলার দরুন ভিড়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়ে। অপরিকল্পিতভাবে কার্নিভালের অনুষ্ঠানকে ঘিরে কর্পোরেশনের বর্তমান বোর্ডের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় শহরবাসীদের মধ্যে যথেষ্ট ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিলো।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় শিলিগুড়িতে হাসমিচক থেকে হিলকার্ট রোড ধরে এয়ারভিউ মোড় পর্যন্ত পূজো কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হবে। মহাত্মা গান্ধী মোড়ে প্রতিটি ক্লাবের তরফে দশ মিনিটের অনুষ্ঠান হবে। এরপর সেখান থেকে প্রতিমা সোজা ঘাটে নিরঞ্জনের জন্য চলে যাবে। জানা গেছে, গতবারের চাইতে এবছর কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী ক্লাবের সংখ্যাও কমেছে। প্রচুর ক্লাব কার্নিভালে অংশ নিতে চায়নি। শহরের মাত্র দশটি পুজো কমিটি ছাড়া বাকি কোন ক্লাব এবছরের কার্নিভালে থাকছে না। গতবছরে শহরে কার্নিভালকে ঘিরে বিশ্রী অভিজ্ঞতার কারণেই বেশীরভাগ পুজো কমিটিগুলি এবারের কার্নিভালে অংশগ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছে বলেই অনুমান করছেন শহরবাসীদের একাংশ। গত বছর শিলিগুড়ি শহর থেকে মাত্র ৬৫ কিমি দূরের চা বলয়ে ঘেরা ছোট্ট শহর মালবাজারে শোকের আবহের মাঝেই শিলিগুড়িতে চলেছিলো ‘অনুপ্রানিত’ কার্নিভাল উৎসব। দুই শহরের এই বৈপরীত্য কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি শিলিগুড়ি শহরের অনেক মানুষজনই। তাই সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয়ে কার্নিভালের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও সাধারণ শহরবাসীর সেইরকম জনসমাগম ছিলো না। মানুষের অংশগ্রহণের চাইতে অংশগ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলির কর্মকর্তা ও পুলিশশের ভিড় দেখা গিয়েছিলো কার্নিভালে। এবছরও পৌর কর্পোরেশনের মেয়র কার্নিভালস্থল পরিদর্শন করে সুষ্ঠুভাবে কার্নিভাল পরিচালনার আশ্বাস দিলেও সেই আশ্বাসে কোনভাবেই আশ্বস্ত হতে পারছেন না শহরবাসী।
Comments :0