কোভিড নিয়ন্ত্রণে ভারতের বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের আংশিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। র্যা নডম নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। মোট যাত্রীসংখ্যার ২ শতাংশের পরীক্ষা হচ্ছে। সংসদের দুই কক্ষেই বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়া বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘আমাদের শত্রু সময়ের সঙ্গে নিজেকে পরিবর্তন করছে, ধৈর্য সহকারে তার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
মন্ত্রী রাজ্যসভায় প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, বিমানবন্দরে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রয়োজন পড়লে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে। চীনের সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে, এই পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, চীন থেকে বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে কিনা। উত্তরে মন্ত্রী বলেন, চীন থেকে ভারতে সরাসরি উড়ান নেই। যাত্রীরা অন্য পথে আসেন।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রক পরিস্থিতির ওপরে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। সামনে উৎসব ও নতুন বছর আসছে। তখন যথাযত কোভিড বিধি যাতে পালিত হয়, তার জন্য সামাজিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এই বিধির মধ্যে মাস্ক পরা, হাতের জীবানুনাশক ব্যবহার, শ্বাসের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত নিয়ম মেনে চলা, শারীরিক দূরত্ব রক্ষা পড়বে। ভারত ‘পরীক্ষা-খোঁজ- চিকিৎসা-ভ্যাকসিন’ নীতি চালিয়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেছেন, গত তিন বছর ধরে ভাইরাসের নতুন সংক্রমণ কার্যত সব দেশেই প্রভাব ফেলেছে। গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ব জুড়ে কোভিড সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, ইতালি, গ্রিসে সংক্রমণের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। গত কয়েকদিনে চীনে প্রচুর সংক্রমণ এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে সংবাদ রয়েছে। ভারতে চিত্র তা নয়, গত এক বছর ধরেই সংক্রমণের সংখ্যা কমেছে।
মন্ত্রী জানান, তিনি ইতিমধ্যেই অনেক দেশ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন। বোঝার চেষ্টা করেছেন অতিমারী কোন দিকে গড়াচ্ছে, কী কী সতর্কতা নেওয়া যেতে পারে। সরকারের লক্ষ্য কোনও নতুন ভ্যারিয়্যান্ট ভারতে যেন ঢুকতে না পারে, আবার একই সঙ্গে যাতায়াতে কোনও বাধা যেন তৈরি না হয়। অক্সিজেন ও ওষুধের প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। কোনও অভাব ঘটবে না।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এদিন এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে কোভিড পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন।
ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে সতর্কতার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মুম্বাইয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অতিরিক্ত সতর্কতা পালনের জন্য প্রশাসনকে বলেছেন। মাস্ক পরার জন্য রাজ্যের মানুষকে বলা হয়েছে। কেরালার স্বাস্থ্য মন্ত্রী বীনা জর্জ বলেছেন, কেরালায় ১০০ শতাংশ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সাধারণ সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। এখনই উদ্বেগের কোনও কারণ ঘটেনি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, অক্সিজেন এবং হাসপাতালের শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দিল্লিতে গত কোভিড প্রবাহের সময়ে অক্সিজেনের গুরুতর সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। এবারে ৬ হাজার সিলিন্ডার ও ১৫ ট্যাঙ্কার মজুত রাখা হয়েছে। প্রত্যেক কোভিড সংক্রমিতের জেনোমে সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। দিল্লির ২৪ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। এই ডোজ নিয়ে নিতেও জনগণের কাছে আবেদন করেছেন কেজরিওয়াল। কর্ণাটকে বদ্ধ জায়গায় মাস্ক বাধ্যতামূলক করে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
Comments :0