Amartya Sen

বিজেপি’র বিকল্প নেই ভাবা ভুল: অমর্ত্য সেন

জাতীয়

২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলি যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তবে তাতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বিজেপি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এর পাশাপাশি বিজেপি এবং আরএসএসের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধেও সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপির শাসনে ভারতের ধারাণাকে সংকুচিত করা হয়েছে। ভারতকে হিন্দু ভারত এবং হিন্দি ভারতের ধারণায় নামিয়ে আনা হয়েছে। ’’


অধ্যাপক সেন মনে করেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করতে গেলে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। সেই ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মু্খ্যমন্ত্রী সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তাঁর মত, প্রধানমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও হতে পারেন। তবে বিভিন্ন শক্তিকে এক জায়গায় করতে তিনি পারবেন কিনা তা এখনও প্রমাণিত নয়। 
জাতীয় স্অতরে তৃণমূল কংগ্রেস যদিও ঠিক উলটোটাই করছে। বরং প্রকাশ্যে নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সংসদের বিরোধী ঐক্য ভাঙতে মরিয়া বলেও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। কখনও লোকসভা বা রাজ্যসভায় গরহাজির থেকে বিল পাস করাতে মোদি সরকারকে সাহায্য করেছেন তৃণমূল সাংসদরা। আবার উপরাষ্ট্রপতি পদে বিজেপি জোটের প্রার্থী জগদীপ ধনকরের নাম ঘোষণার পর পিঠটান দিতে দেখা গেছে তৃণমূলকে। বিরোধী জোটের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি।

 

অর্থনীতিবিদ সেন আঞ্চলিক দল প্রসঙ্গে গুরুত্ব দিয়েছেন তামিলনাডুর ডিএমকে’র ভূমিকাকে। কিছুটা হলেও সমাজবাদী পার্টিও ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। 

সাক্ষাৎকারে সেন সিএএ নিয়েও সরব হয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিজেপি সিএএ’র মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। তারা উগ্র হিন্দুত্বকে উস্কানি দিচ্ছে।’ 
নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর দল বিজেপি বার বার দাবি করে আসছে তাদের শাসনে দেশে উন্নতি হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অধ্যাপক বলেন, ‘‘আমি মনে করি না সরকারের কাজের উন্নতি হয়েছে। প্রত্যেক ভারতীয়ের নির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে নাগরিক হওয়ার কারণে’। সেই অধিকারের স্বীকৃতি থাকা উচিত।’ 
তিনি আরও বলেন, মহাত্মা গান্ধী এক গোষ্ঠীকে অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করার বা ঘৃণা করার কথা বলেননি কখনও। ধর্মীয়ভাবে দৃঢ় নিষ্ঠাবান হিন্দু হওয়া সত্ত্বেও তিনি এক গোষ্ঠীকে অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নামিয়ে দেননি। 


কেন্দ্রের সিএএ’র উদ্দেশ্য হল পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান যারা ভারতে এসেছেন তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা। ২০১৯’র ১১ ডিসেম্বর সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নাগরিকত্বে ধর্মীয় পরিচিত এই সংশোধনী পাশ করিয়ে নেয় বিজেপি জোট সরকার। কিন্তু তার পর আর বিধি তৈরি করতে পারেনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ফলে আইন চালু হয়নি।
আইনে বলা হয়েছে এই সম্প্রদায়ের যারা ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ পর্যন্ত ভারতে এসেছিলেন, সেখানে ধর্মীয় নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তাদের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে গণ্য করা হবে না এবং ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
সংসদে সিএএ পাস হওয়ার পরে, দেশের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা যায়। পুলিশ গুলি এবং নিপীড়নে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যুও হয়।

Comments :0

Login to leave a comment