বিধানসভা নির্বাচনের আগে রবিবার ত্রিপুরা সফরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)। এ রাজ্যে আগরতলা এবং মেঘালয়ে গিয়ে শিলংয়েও জনসভা করেছেন মোদী। সরকারি টাকায় নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সরকারি মঞ্চ থেকে। ত্রিপুরায় সিপিআই(এম) প্রশ্ন তুলেছে, কেন পাঁচ বছর আগের দেওয়া কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখতে পারেনি রাজ্যের বিজেপি সরকার। সিপিআই(এম) বলেছে, সাত লক্ষ বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল?
ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩’এ। পাঁচ বছর আগে এ রাজ্যে প্রথমবার সরকার গড়ে বিজেপি। উত্তর-পুর্বাঞ্চলে মোট ৬৮০০ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরই সে তথ্য দিয়েছে।
মূলত সরকারি কর্মসূচি থাকলেও অনুষ্ঠানটিকে বিজেপির নির্বাচনী প্রচার করে ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী। ত্রিপুরায় গিয়ে গত পাঁচ বছরের বিজেপি সরকারের উন্নয়নের কোনও পরিসংখ্যান তুলে ধরতে পারেননি। পরিবর্তে সামনে রাখলেন সেই গুজরাটকেই। প্রধানমন্ত্রীর এদিনের কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন সিপিআই(এম) ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী(Jitendra Chowdhury)।
চৌধুরী বলেছেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সরকারি কর্মসূচিতে এসে পার্টির প্রচার করলেন প্রধানমন্ত্রী’’। ভাষণের শুরুতেই ত্রিপুরা(tripura) বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলা হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গে জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের সময়েই। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর একটিও আন্তর্জাতিক বিমান নামেনি। বরং অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল কমেছে।
২০১৮’র নির্বাচনে ডবল ইঞ্জিন সরকার ব্যাপক উন্নতি করবে, ত্রিপুরায় এই বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। বলেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসলে বছরে ৫০ হাজার সরকারি চাকরি হবে। ৭ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হবে, রেগার কাজে দিন প্রতি ৩৪০ টাকা বাড়ানো হবে। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভায় ১টি করে মোট ৬০টি কলেজ নির্মাণ করা হবে, প্রতিটি জেলায় মেডিক্যাল কলেজ হবে।
নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল, রাবার চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি রাবার কেনা হবে, সপ্তম বেতন কমিশন চালু করা হবে কেন্দ্রীয় সরকারি হারে বেতন দেওয়ার জন্য। সর্বোপরি ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের বিভিন্ন সরকারি বিভাগে কর্মসংস্থান হবে আইন মেনে। আদালতের রায়ে এই শিক্ষকদের কাজ চলে গিয়েছি। প্রতিশ্রুতি দিয়ে ত্রিপুরা নির্বাচন জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু বাস্তবে একটি প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়িত করতে পারেনি বিজেপি সরকার।
রবিবার নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ত্রিপুরার আনারস, কাঁঠাল, রাবার বিদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন ‘‘একথা যদি সত্য হত তাহলে চোখে দেখা যেত, ছেলে মেয়েরা চাকরি পেত। একটি আধটি আনারস, কাঁঠাল বিদেশে যেতেই পারে কিন্তু ব্যাপক হারে রপ্তানি হওয়ার তথ্য সম্পূর্ণ ভুল।’’
সব শেষে প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার জনজাতিকে (Indigenous People) ‘আদিবাসী’ বলে উল্লেখ করেন। চৌধুরী বলেন, আমরা জনজাতি বলি, আদিবাসী নয়। প্রধানমন্ত্রী তা জানেন না। মোদী আস্তাবল ময়দানে জনসভায় দাবি করেন, আদিবাসীদের একমাত্র পছন্দের রাজনৈতিক দল বিজেপি। গুজরাটে আদিবাসী সংরক্ষিত আসনে বিজেপি’র জয়ের তথ্য উল্লেখ করেন সরকারি কর্মসূচিতে।
চৌধুরী বলেন, গুজরাটেও আদিবাসী মানুষের প্রচুর ক্ষোভ। সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেলের মূর্তি স্থাপন করার নামে হাজার হাজার আদিবাসীদের জমি, জঙ্গলের অধিকার কেড়ে নিয়েছে গুজরাটের বিজেপি সরকার। একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ পাননি সেখানকার আদিবাসীরা।
Comments :0