PANCHAYAT ELECTION

চা শ্রমিকের অধিকার রক্ষার লড়াইকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলকে গ্রাম থেকে তাড়াতে প্রত্যয়ী শ্রমিক কৃষকরা

জেলা

এলাকায় রয়েছে ডগাইজান নদী যার ওপারে বাংলাদেশ এপারে সীমান্তবর্তী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা গড়ালবাড়ি একটা সময় এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ও পাশের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জলপাইগুড়ি শহরের বড় বড় জোরদার জমিদারদের জমি ছিল। এখনো তাদের অনেকের নামে এলাকায় মেলা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামে উভয় সম্প্রদায় সকলে মিলে মিশে একসাথে আছে অশান্তি ছিল না কোনদিনই ২০১১ এর পরবর্তী সময়েও গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়যুক্ত হয়েছিল বামপন্থীরা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুঠের মধ্য দিয়েও কোমরের জোরে নিরাশিপুকুরি বুথে জয়যুক্ত হয় সিপিআই(এম) এর পঞ্চায়েত তবে তাকে কাজ করতে দেওয়া হয় নি।

গত পাঁচ বছর হয়নি গ্রাম সভা, হয়নি পঞ্চায়েতের কোন মিটিং, পঞ্চায়েতে চলেছে স্বেচ্ছাচারিতা। গরিব মানুষ ১০০ দিনের কাজ পাননি, গ্রামে ভীষণ পরিমাণে কাজের অভাব, গ্রামের বিস্তীর্ণ  এলাকায় আলু চাষ হয় এলাকায় রয়েছে বাম জমানায় তৈরি হয়েছিল দুটি হিমঘর। সেই হিমঘরে গত মরশুমে আলু রাখা কে কেন্দ্র করে হিমঘর খোলার প্রথম দিনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের ওপর লাঠি চার্জ করে পুলিশ প্রশাসন ছোড়া হয় কাদানে গ্যাস সেই ঘটনায় বামপন্থীদের নাম ঢুকিয়ে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে প্রশাসন। তারপরও দমানো যায়নি বামপন্থীদের আলুর বন্ড দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধান সকলে কালো বাজারির সাথে যুক্ত হয়েছে এই সময়কালে, বন্ড পাননি এলাকার আলু চাষিরা। তৃণমূল পরিচালিত জলপাইগুড়ি পৌরসভা পার্শ্ববর্তী চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার টোটো চালকদের ছাড়া শহরে অন্য টোটো চালকদের ঢুকতে দেবে না সিদ্ধান্ত নেবার পর গরাল বাড়ি এলাকার টোটো চালকদের নিয়ে পৌরসভা অভিযান করে তাদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে শামিল হন বামপন্থীরা।  গড়ালবাড়ী গ্রাম পঞ্চায়েতের সভারহাট সংলগ্ন মধুবাবুর মেলার মাঠে প্রার্থী পরিচয় করিয়ে বৈঠকি সভা সংগঠিত করেন পার্টি নেতৃবৃন্দ।উপস্থিত  ছিলেন জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পিযুশ মিশ্র,অমূল্য কুমার রায়, এরিয়া কমিটির সম্পাদক জামিনার আলি যুবনেতৃত্ব অহিদুল ইসলাম, কৃষক নেতা ইসমাইল হক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বলেন এলাকার রাস্তা ঘাটের বেহাল দশা, গত পাঁচ বছরে মানুষকে কোনো সার্বিক পরিষেবা দিতে পারে নি গ্রাম পঞ্চায়েত, এলাকায় অসংখ্য ছোট চা বাগান থাকলেও চা বাগানে পাতার দাম না থাকায় চরম সংকটে ক্ষুদ্র চা চাষিরা, ১০০দিনের কাজে দূর্নীতি, চাকুরীজীবিদের  একাধিক পরিবারে ডবল জব কার্ড তৈরি করে গরিব মানুষের টাকা লুট করেছে তৃণমূল। শুধু টাকা লুট নয় মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে তৃণমূল।এবারের নির্বাচন প্রতিরোধের লড়াই নিজের ভোট এবার নিজেরাই দেবেন গ্রামের মানুষরা। সভায় গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন এক মহিলার বার্ধক্য ভাতা গ্রাম পঞ্চায়েত বন্ধ করে দেওয়ার পর তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন লিস্টে তাকে মৃত ঘোষণা করেছে গ্রাম পঞ্চায়েত। তাই চোর তাড়িয়ে গ্রাম বাঁচাতে এবার বামপন্থীদের পাশে থাকবেন গ্রামের মানুষ এই প্রত্যয় নিয়ে প্রচারের কাজ শুরু করেন বামফ্রন্টের প্রার্থীরা।

গড়ালবাড়ির কিছুটা অদূরেই শহর সংলগ্ন গ্রাম পঞ্চায়েত অরবিন্দ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝা বাড়ি মোড় এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের প্রার্থী পরিচয় করিয়ে বৈঠকী সভা করেন পার্টি নেতৃবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন এরিয়া কমিটির সম্পাদক তপন গাঙ্গুলী জেলা নেতা তমাল চক্রবর্তী, জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কৌশিক ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বলেন অরবিন্দ অঞ্চলের গৌড়ি হাটের ব্রিজ বিগত কয়েক বছর থেকে ভেঙে পড়ে আছে সিপিআইএমের আন্দোলনের ফলে শিলান্যাস না হলেও কাট মানির হিসাব না মেলায় কাজ এগোয় নি, আসাম মোর সংলগ্ন মুন্ডা বস্তিতে বর্ষায় সারা বছর জল জমে থাকে, নয়াপাড়া কাঠালতলা থেকে গোমস্তা পাড়া পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা, পানীয় জলের সমস্যা অঞ্চলের সর্বত্র, আবাস যোজনার দুর্নীতি চরমে তৃণমূলের নেতাদের ঘরের লোকদেরকে আবাস যোজনার লিস্টে নাম, বিগত বছরে গোটা অঞ্চলের ২২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪টি পঞ্চায়েত বিজেপির জিতলেও বিজেপি কে এই বিগত পাঁচ বছরে কোথাও কোন কাজ করতে দেখা যায়নি সারা বছর এরা তৃণমূলের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করেছে। করলা ভ্যালি মোড় থেকে করলা ভ্যালির চা বাগান পর্যন্ত রাস্তার খুবই বেহাল অবস্থায় রয়েছে, বিগত পাঁচ বছর অরবিন্দ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি বুথে তৃণমূলের নেতাদের দ্বারা নেশা জাতীয় দ্রব্য বিক্রি উৎসাহিত হওয়ায় এলাকায় নেশাগ্রস্থদের দাপট বেড়েছে, এর মাধ্যমে গ্রামের যুবক ছেলেদের নেশার প্রতি আকৃষ্ট করে দিয়েছে তারা। এই নেশাগ্রস্থ যুবকদের দিয়েই শাসক দল বিভিন্ন অনৈতিক কাজকর্ম করাচ্ছে। 

এলাকায় নতুন স্টার সিমেন্ট ফ্যাক্টরি হওয়াকে কেন্দ্র করে গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে বহু টাকার লেনদেন হয়েছে তৃণমূলের উপর মহলের নেতাদের সাথে, ধীরে ধীরে জলপাইগুড়ি শহর শহরতলীর দিকে বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকায় বাড়ছে জমি মাফিয়া দের দাপট। সভায় উপস্থিত এলাকার ছোট দোকানদার রমেন শিল অভিযোগ করেন সন্ধ্যার পর থেকে অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বাজার এলাকায় নেশাগ্রস্থদের দাপট বৃদ্ধি পায়। এরা সবই শাসকদলের আশ্রিত এলাকায় সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে গ্রামের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে এবছর মানুষ বামপন্থীদেরই পাশে থাকবেন হাটে বাজারে এই আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি। করলা ভ্যালি চা বাগানের চার শ্রমিক সোমারু এক্কা বলেন ন্যূনতম মজুরির লড়াইয়ে ২০১৪ সাল থেকে তাদের পাশে আছেন শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ এ লড়াইকে আরো জোরদার করতে বাগানের বাইরে গ্রামেও লাল ঝাণ্ডার শক্তিশালী হওয়া জরুরি তাই এবার বাগানের শ্রমিকরা বামপন্থীদেরই ভোট দেবেন। গত কয়েক দিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দূরে ঠেলে বাগানে তারা প্রচারে নেমে পড়েছেন। 

Comments :0

Login to leave a comment