UP TEACHER HATE

মুসলিম ছাত্রকে মারতে বলা ‘সামান্য ঘটনা’, বলছেন সেই স্কুল শিক্ষিকা

জাতীয়

উত্তরপ্রদেশের স্কুলে ছাত্র নিগ্রহ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা তৃপ্তা ত্যাগি মুখ খুললেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। তিনি শনিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করলেন শুক্রবার যেই ঘটনাটি ঘটেছে তা ‘সামান্য ঘটনা’।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মুজফ্‌ফরনগরের একটি বেসরকারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস চলাকালিন তিনি ছাত্রদের নির্দেশ দেন তাদেরই এক সহপাঠি যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তাকে মারার জন্য। শিক্ষিকার নির্দেশ মতো ছাত্ররা তাদের সহপাঠিকে লাইন করে এসে মেরেও যায়। সামাজিকমাধ্যমে সেই ঘটনা ভাইরাল হয়েছে। 


ভিডিও’তে দেখা যাচ্ছে এক শিশু কাঁদছে। শিক্ষিকাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘তোমরা মারছ? আরও জোরে মার।’ এরপর বলছেন, ‘মুসলিম সব বাচ্চাকে ...।’ শোনা যাচ্ছে শিশুটির কোমরে মারতেও বলেছেন ওই শিক্ষিকা।
শনিবার অভিযুক্ত শিক্ষিকা সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আজব এক যুক্তি সামনে আনলেন। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটি তার হোম ওয়ার্ক করে আনেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে চাপ ছিল যাতে তাকে কড়া শাসন করা হয়। আমার কিছু শারীরিক সমস্যা থাকার কারণে আমি ক্লাসের ছেলেদের বলে তাকে মারার জন্য।’’


শিক্ষিকার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে অনেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। শিক্ষাবিদের একাংশের বক্তব্য, শ্রেণিকক্ষে সৌজন্য, একতার পাঠ দেওয়া হয়। কখনও সেখানে কোন বিদ্বেষ বা প্ররোচনার পাঠ দেওয়া হয় না। কোন ছাত্র যদি তার কাজ না করে আনে তবে শিক্ষক বা শিক্ষিকা তাকে শাস্তি দেবে। এক সহপাঠি কখনও অন্যজনকে শাস্তি দিতে পারেননা। 
আক্রান্ত ছাত্রের বাবা জানিয়েছেন, ‘‘গত ২৪ আগস্ট আমার সাত বছর বয়সী ছেলেকে স্কুলের মধ্যে মারা হয়। শিক্ষিকার নির্দেশে ক্লাসের ছেলেরা আমার ছেলেকে মারে। প্রায় একঘন্টার বেশি সময় ধরে এই ঘটনা চলতে থাকে। আমার সন্তান আতঙ্কিত সে ভয়ে ভয়ে রয়েছে।’’


অভিযুক্ত শিক্ষিকা আরও দাবি করেছেন যে তিনি কখনও কোন সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেননি। ভিডিওটি এডিট করে তার মুখে কথা বসিয়ে ছাড়া হয়েছে। 
শুক্রবারের এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিপিআই(এম) নেতৃত্ব সহ কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সামাজিক মাধ্যমে ধিক্কার জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষিকা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বলেছেন, ‘‘এই ঘটনাটি খুবই সামান্য। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্যকে অনুরোধ করব এই বিষয় নিয়ে রাজনীতি না করার জন্য। রাহুল গান্ধী নিজের টুইটারে এই বিষয় পোস্ট করেছেন, এটা টুইট করার মতো কোন বড় ঘটনা নয়। একজন শিক্ষক কী ভাবে ছাত্রদের পড়াবে যদি এই সব বিষয় সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।’’ 


মুজফ্‌ফরনগরের জেলা শাসক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন প্রথম ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দায়ের করা না হলে শনিবার তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেলা শাসক জানিয়েছেন তাদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হবে।

Comments :0

Login to leave a comment